জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘ফ্যাসিবাদ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় অবৈধভাবে তিন তিনটি নির্বাচনে তাণ্ডব চালিয়েছে। যারা নির্বাচনে বিশ্বাস করে না, তাদের আবার কিসের নির্বাচন। বর্তমান সরকার জরুরি, অতি জরুরি সংস্কারগুলো করে দ্রুত নির্বাচন দিয়ে চলে যাবে। জনগণ যাকে ভালোবাসবে, যাদের ওপর বিশ্বাস-আস্থা রাখবে, যারা দেশের মানুষকে ভালোবাসবে, সম্মান করবে, এ নির্বাচন তাদের জন্য।’
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে নাটোর শহরের নবাব সিরাজ-উদ-দ্দৌলা সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত নাটোর জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ অনুষ্ঠানে ভোটারদের উদ্দেশে জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, ‘যারা “দেশবাসীর আমানত, শ্বশুরবাড়ির নিয়ামত” মনে করবে না, যারা দেশের সম্পদ চুরি করে বিদেশে পাচার করবে না, জনগণ তাদের ভোট দেবে। বিভিন্ন সংস্থার হিসাব অনুযায়ী গত ১৫ বছরে ২৬ লাখ কোটি টাকা চুরি করা হয়েছে। দফায় দফায় যারা ক্ষমতায় এসেছে তারাই আমানতের খেয়ানত করেছে।’
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের বিষয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচন কারা করে? নির্বাচন তাদের জন্য যারা মানুষকে সম্মান করে, দেশবাসীকে ভালোবাসে, যারা দেশবাসীর প্রতি ইঞ্চি জমিকে আমানত মনে করে। এ বিশ্বাস, আস্থা যাদের নেই, নির্বাচনও তাদের কপালে নেই। গত ১৫ বছর তিন-তিনটি অবৈধ নির্বাচনে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার সময় ফ্যাসিস্ট সরকার কী পরিমাণ তাণ্ডব চালিয়েছে দেশবাসী তা ভুলে যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানে আহত ও পঙ্গুদের দেশে-বিদেশে চিকিৎসা নিশ্চিতকরণে, দ্রুত নির্বাচন দিতে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম নাগালের মধ্যে আনতে বর্তমান সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে এ দেশের নারীরা সর্বোচ্চ অধিকার নিয়ে গর্বের সঙ্গে নিরাপত্তার সঙ্গে দেশের জন্য কাজ করবে। রাস্তা-ঘাটে জালিমরা নারীদের প্রতি খারাপ দৃষ্টিতে তাকাতে পারবে না। রাষ্ট্র জালিমদের চোখ উপড়ে ফেলবে। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে আমাদের সন্তানরা সেই শিক্ষা নিয়ে বের হবে, যে শিক্ষায় থাকবে দেশাত্মবোধ, মমত্ববোধ, মানুষের প্রতি থাকবে ভালবাসা, শ্রদ্ধা, যে শিক্ষা মানুষ হতে শেখাবে। আমাদের সন্তানরা উন্নত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বের হওয়ার আগেই তাদের হাতে উপযুক্ত কাজ পৌঁছে যাবে। যুবকদের হাতকে দেশ গড়ার কারিগরের হাতে পরিণত করবো।’
জামায়াত আমির বলেন, ‘দেশের জনগণ জীবন দেবে কিন্তু দেশের সার্বভৌমত্বকে আর অন্যের হাতে তুলে দিতে চায় না। আমরা বিদেশি বন্ধু চাই, কোন প্রভু চাই না। আমরা সমমর্যাদার ভিত্তিতে সবার সঙ্গে বৈদেশিক সম্পর্ক রক্ষা করবো। কারও লাল চোখের দিকে আমরা আর তাকাবো না। অন্যের লাল চোখ আমরা বরদাস্ত করবো না। জামায়াতে ইসলামী বৈষম্যহীন মানবিক সমাজ গঠন করতে চায়। আমরা বিভেদ নয়, ঐক্য চাই। হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সবাই এ দেশের গর্বিত নাগরিক।’
জেলা জামায়াতের আমির ড. মীর নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন– জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন, মোবারক হোসেন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসেন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সদ্য বিদায়ী কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, পাবনা জেলা আমির আবু তালেব মণ্ডল, নাটোর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মো. ইউনুস আলী ও অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন খান, সেক্রেটারি আতিকুল ইসলাম রাসেল ও অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল হাকিমসহ অনেকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।