লাইফস্টাইল ডেস্ক : ধরুন আপনি একটি কাজ করছেন। কাজটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কাজের ফাঁকেই আপনার মাথায় নানা চিন্তা খেলা করছে। মনে হচ্ছে কাজটা বুঝি ঠিক মতো হবে না। ঠিক মতো না হলে কোন কোন সমস্যা হতে পারে সেটা নিয়ে আপনি গভীর চিন্তায় ডুবে যাচ্ছেন। আবার আপনি বই পড়তে বসেছেন।
কিন্তু বারবার মনে হচ্ছে মুঠোফোনে কেউ মেসেজ দিচ্ছে না তো? ফলে বইয়ে মনোযোগ দিতে পারছেন না আপনি। এতো চিন্তাভাবনার সাথে বসবাস করার ফলে কোনও নির্দিষ্ট কাজে মন বসানোই মুশকিল হয়ে পড়ছে। এর ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সব কাজ তথা দৈনন্দিন জীবনে। এতে বাড়ছে মানসিক ক্লান্তি ও অস্থিরতা। যদি লক্ষণগুলো আপনার সঙ্গে মিলে যায়, তবে আপনার মাঙ্কি মাইন্ড আছে।
মাঙ্কি মাইন্ড মানে বানরের মতো অস্থির চিন্তাভাবনা করা মন। বানর যেমন এক ডাল থেকে অন্য ডালে দ্রুত লাফ দেয়, তেমনি আপনার মনও এক চিন্তা থেকে দৌড়ে দৌড়ে অন্য চিন্তায় চলে যায়। চিন্তা, উদ্বেগ এবং বিভ্রান্তির এই ক্রমাগত চাপ আপনাকে করে দিতে পারে অস্থির ও বিষাদগ্রস্ত। মাঙ্কি মাইন্ড থাকার লক্ষণগুলো আরও স্পষ্টভাবে জেনে নিন-
* মাঙ্কি মাইন্ড থাকলে বিরামহীন চিন্তাভাবনা চলতে থাকে মাথার মধ্যে। একটার পর একটা চিন্তা এসে মাথায় জেঁকে বসে, যার ফলে ক্লান্ত লাগে। বিক্ষিপ্ত চিন্তাভাবনার ফলে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কমে যায়।
* উদ্বিগ্নতা আর অস্থিরতা এই ধরনের মাইন্ডের অন্যতম লক্ষণ। অতিরিক্ত ভাবনাচিন্তা ও নেতিবাচক চিন্তার ফলে অস্থিরতা বাড়ে। যার ফলে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা কঠিন হয়ে পড়ে।
* নির্দিষ্ট বিষয়ে মনোযোগ ধরে রাখা যায় না। চিন্তা ডালপালা মেলে দেওয়ার কারণে বিক্ষিপ্ত মনটাও এক ডাল থেকে অন্য ডালে লাফিয়ে বেড়ায়। ফলে একটি কাজ করতে বসে অন্যমনস্কতা ও মনোযোগের ঘাটতির কারণে কাজটি ঠিকঠাক শেষ করা সম্ভব হয় না।
* সবসময় অতিচিন্তার ফলে মানসিক ক্লান্তি জেঁকে বসে। এতে বিষণ্ণতা ও মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
* যেহেতু কাজে মনোযোগ দেওয়া কঠিন হয় পড়ে, সেহেতু দরকারি কাজে বিলম্ব হয়। প্রায় সময়ই দেখা যায় কাজের ডেডলাইন ধরতে বাড়তি প্রচেষ্টার প্রয়োজন হচ্ছে। অর্থাৎ একেবারে শেষ সময়ে এসে কাজ শেষ করার জন্য দৌড়াদৌড়ি করতে হয়।
* জীবনে অনেক কিছু করতে হবে এবং অর্জন করতে হবে- এমন চিন্তা কাবু করে ফেলে যাদের মাঙ্কি মাইন্ড তাদের। তারা যখন মনে করে যে তারা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে পারছে না, তখন তারা হতাশ হয়ে পড়ে।
অতীতে কী হয়েছিল, ভবিষ্যতে কী হবে- এমন চিন্তাভাবনা অতিরিক্ত করা মাঙ্কি মাইন্ডের অন্যতম লক্ষণ। এর ফলে বর্তমানে বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়ে।
* অনেক ক্ষেত্রে রাতে ঘুমের সমস্যাও দেখা দেয়। কারণ অস্থিরতার কারণে বা অতিরিক্ত চিন্তার কারণে এপাশ ওপাশ করলেও ঘুম আসতে চায় না।
সমাধানে কী করবেন?
* অস্থির মন শান্ত করার জন্য ব্রিদিং এক্সাইসাইজ ভীষণ কার্যকর। একটি শান্ত জায়গায় বসুন এবং চোখ বন্ধ করুন। কোনও গান বা মিউজিক শোনার প্রয়োজন নেই। নিজেকে শিথিল করুন এবং শ্বাস নেওয়া ও শ্বাস ছাড়ার দিকে মনোনিবেশ করুন। শ্বাসপ্রশ্বাসের অনুভূতিতে ফোকাস করার চেষ্টা করুন। মন অগণিত চিন্তায় ব্যস্ত হয়ে পড়ার চেষ্টা করলে মনোযোগ আবার নিঃশ্বাসে ফিরিয়ে আনুন।
* প্রকৃতির সাথে সময় কাটানোর চেষ্টা করুন। পার্কে হাঁটুন বা একাকী নদীর ধারে বসুন। এই সময়গুলোতে কানে হেড ফোন দিয়ে কান শুনবেন না। বরং প্রকৃতির সঙ্গ উপভোগ করার চেষ্টা করুন। নিজের ইন্দ্রিয়গুলোকে পুরোপুরি কাজে লাগান প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগে। চিন্তার প্রবাহকে শান্ত করতে সহায়তা করবে প্রকৃতি।
* মানসিক এবং শারীরিকভাবে যথেষ্ট সক্রিয় না থাকলে মাঙ্কি মাইন্ড সক্রিয় হয়ে ওঠে। মানসিকভাবে ব্যস্ত থাকার পাশাপাশি তাই শারীরিক ক্রিয়াকলাপ বা ব্যায়াম করুন। যোগব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটির মতো সাধারণ শারীরিক কাজ আপনার মন ও শরীরকে ক্লান্ত করে দিতে পারে ও স্থির করতে পারে মন।
* প্রযুক্তি থেকে বিরতি নিন দিনের নির্দিষ্ট সময়ে। মোবাইল ফোনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নোটিফিকেশনগুলো সাইলেন্ট করে দিন। ঘুমানোর আগে ফোন ব্যবহার করবেন না কোনোভাবেই।
* খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে সচেতন হোন। ধীরে ধীরে খান ও খাবারের স্বাদ উপভোগ করতে করতে খাবার খান।
মাত্র ১১ হাজার টাকায় দুর্ধর্ষ ফিচার নিয়ে লঞ্চ হলো Realme Narzo N65 5G স্মার্টফোন
* অ্যারোমাথেরাপির সাহায্য নিতে পারে। নির্দিষ্ট সুগন্ধি ব্যবহার করে করা হয় অ্যারোমাথেরাপি; যেমন ল্যাভেন্ডার, ক্যামোমাইল বা চন্দন। এগুলোর মন এবং শরীর শান্ত করে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।