জুমবাংলা ডেস্ক : মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিমে মিঠা পানি ও নোনা জলের হরেক রকমের মাছের বিশাল সমাহার। পর্যাপ্ত সরবরাহ সত্ত্বেও রোজার কারণে দাম বেড়েছে সব ধরনের মাছের। এদিকে হাটে বড় ইলিশের আড়ালে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে জাটকা।
মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিমের হাট। ভোর থেকেই মাছের পসরা ঘিরে ক্রেতা-বিক্রেতার উপচে পড়া ভিড়। পাইকারি এ হাটে পছন্দের মাছ কিনতে দূর দূরান্ত থেকে আসা পাইকারদের মধ্যে চলে প্রতিযোগিতা।
ইলিশ ছাড়াও রুই, কাতল, পাঙাশ, শিং, কই, চিংড়ি, রিটা ও পাবদাসহ পুকুর, দিঘি, খাল-বিলের তাজা মাছের পাশাপাশি সামুদ্রিক মাছে সয়লাব এই মাছের বাজার। পদ্মা সেতুর কারণে দক্ষিণের মাছ দ্রুত আসায় বেচাবিক্রির প্রসার বেড়েছে।
তবে হাটে বড় ইলিশের আড়ালে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে জাটকা। পদ্মা থেকে আসা জাটকার এমন বেচাবিক্রি স্বীকার করে আড়তদাররা দায় চাপাচ্ছেন একে অন্যের ওপর।
আড়তদাররা জানান, বাজারে উন্মুক্তভাবে চলছে জাটকা বিক্রি। এক্ষেত্রে প্রসাশনের অবহেলাকে দায়ী করেন তারা। এছাড়া জাটকা ধরা বন্ধ হলে মানুষ সাশ্রয়ী দামে ইলিশ মাছ কিনতে পারবেন বলেও জানান বিক্রেতারা।
আর মুন্সিগঞ্জ সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হুসাইন মো. আল জুনায়েদ বলেন, জাটকা সংরক্ষণ ও দাম স্বাভাবিক রাখতে অভিযানসহ নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এদিকে বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও দাম বেড়েছে সব ধরনের মাছের। কেজিতে মাছের দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত।
সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে প্রতিকেজি ইলিশ ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা, দেশি কৈ প্রতিকেজি ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা, শিং প্রতিকেজি ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা, চিতল প্রতিকেজি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, নদীর রুই প্রতিকেজি ৬০০ থেকে ১ হাজার ও নদীর পাঙ্গাস প্রতিকেজি ৮০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া প্রতিকেজি চিংড়ি ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, প্রতিকেজি আইড় ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, প্রতিকেজি নলা ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, প্রতিকেজি তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা, প্রতিকেজি শোল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, প্রতিকেজি টেংরা ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা ও প্রতিকেজি বোয়াল বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়।
আর প্রতিকেজি বেলে ২০০ থেকে ৯০০ টাকা, প্রতিকেজি গজার ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, প্রতিকেজি মাগুর ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, প্রতিকেজি পোয়া ২০০ থেকে ৫০০ টাকা, প্রতিকেজি ফলি ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, প্রতিকেজি কোরাল ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা ও প্রতিকেজি মলা বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৭০০ টাকায়।
রোজার কারণে আরতদারা সিন্ডিকেট করে মাছের দাম বাড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। তারা বলেন, রোজার আগে মাছের দাম কিছুটা কম থাকলেও এখন মাছের দাম নাগালের বাইরে চলে গেছে।
আর মুন্সীগঞ্জ মিরকাদিম মৎস্য আড়তের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাজা মিয়া বলেন, এ আড়ত থেকে পাইকাররা মাছ কিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি করে। এখানে কোন সিন্ডিকেটের সুযোগ নেই।
জেলা মৎস্য অফিসের তথ্যমতে, জেলায় গত এক বছরে ৯ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হলেও ঘটতি প্রায় ২ হাজার মেট্রিক টন।
উল্লেখ্য, শতাব্দী প্রাচীন এই হাটের ৪০টি আড়তে মাছ আসে দেশের অন্তত ১৫ জেলা থেকে। ধলেশ্বরী তীরের খোলা আকাশের নিচের এই হাটে প্রায় ৩ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান। আর প্রতিদিন দুই থেকে তিন ঘণ্টায় বিক্রি হয় প্রায় কোটি টাকার মাছ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।