লাইফস্টাইল ডেস্ক : যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম যানবাহন। বিপদমুক্ত নিরাপদ সফর আমাদের সবার চাওয়া। সড়ক দুর্ঘটনা, অজ্ঞান পার্টির শিকার, ছিনতাইসহ সব বিপদাপদ থেকে রক্ষার জন্য ঘর থেকে বের হওয়ার সময় দোয়া পাঠ জরুরি।
আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আল্লাহর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যদি কেউ ঘর থেকে বের হওয়ার সময় বলে, ‘বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ, লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’, তবে তাকে বলা হয় (আল্লাহতায়ালাই) তোমার জন্য যথেষ্ট, তুমি হেফাজত অবলম্বন করেছ (অনিষ্ট থেকে)। তখন শয়তান তার থেকে দূরে সরে যায়। তিরমিজি শরিফ।
যানবাহনের চালকদের আল্লাহর ওপর ভরসা করে অজু ও দরুদ পাঠ করে যানবাহন চালাতে হবে। যত গতি তত ক্ষতি কথাটি স্মরণে রেখে ধৈর্য ধারণ করে রাস্তার নিয়ম মানতে হবে। যেখানে সেখানে পার্কিং, রাস্তার মাঝে যাত্রী ওঠানামা, অন্য বাহনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা, তাড়াহুড়ো বা আগে যাওয়ার জন্য জ্যাম তৈরি করা, অযথা হর্ন বাজানো এককথায় অন্যকে কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। যানবাহনে ধূমপান, গানবাদ্য বাজানো ঠিক নয়। যানবাহনে আরোহণের সময় তাড়াহুড়ো করে লঞ্চ বা নৌকায় ওঠার অভ্যাস পরিহার করা জরুরি। কেননা তাড়াহুড়ার কারণে পাশে থাকা ব্যক্তি যে কোনো সময় দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে। আরোহণের সময় প্রথমে বিসমিল্লাহ পাঠ করে পা রেখে বসার পর আলহামদুলিল্লাহ বলতে হবে। এরপর আরোহণের দোয়া পাঠ করে তিনবার আলহামদুলিল্লাহ ও আল্লাহু আকবর পাঠ করে সর্বশেষ নিচে উল্লেখিত দোয়া পাঠ করা উত্তম। ‘সুবহানাকা ইন্নি জলামতু নাফসি জুলমান কাছিরান ফাগফিরলি ইন্নাহু লাইয়াগফিরনিজ্জুনুবা ইল্লা আনতা। তিরমিজি শরিফ।
যানবাহনে চালক, হেলপার, সুপারভাইজারসহ কারও সঙ্গে যাত্রীদের ব্যবহার খারাপ করা উচিত নয়। তাদেরও যাত্রীদের সম্মান দেখানো উচিত। ব্যবহারেই বংশের পরিচয়। অন্যায় দেখলে আদবের সঙ্গে প্রতিহত করতে হবে। যানবাহনে ছোটরা বড়দের বসার জায়গা করে দিয়ে বড়দের সম্মান করা উচিত। বড়রাও ছোটদের স্নেহ করবে। বসার সময় নিচে উল্লেখিত দোয়াটি পাঠ করা যেতে পারে। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সওয়ারির ওপর পা রেখে তিনবার আল্লাহু আকবার বলে এই দোয়া পড়তেন। ‘সুবহানাল্লাজি সাখখারা লানা হাজা ওয়ামা কুন্না লাহু মুকরিনিন ওয়া ইন্না ইলা রব্বিনা লামুনকলিবুন অর্থ হলো, আল্লাহতায়ালার পবিত্রতা যিনি একে (বাহন) আমাদের অধীন করে দিয়েছেন, অথচ আমরা একে অধীন করতে সক্ষম ছিলাম না। আমরা আমাদের প্রতিপালকের কাছে প্রত্যাবর্তনকারী। সহিহ মুসলিম শরিফ।
নদীপথে ভ্রমণের সময়ে দোয়া পাঠ করতে হয়। যা হজরত নুহ (আ.)-কে নির্দেশ করা হয়েছিল। বেইমানদের বাদ দিয়ে ইমানদার নৌকার তুলে নিন। হজরত নুহ (আ.) ওই দোয়া করেন, ‘বিসমিল্লাহি মাজরেহা ওয়ামুরসাহা ইন্না রাব্বি লাগাফুরুর রাহিম। অর্থাৎ আল্লাহর নামেই এর গতি ও স্থিতি আমার পানলনকর্তা অতি ক্ষমাপরায়ণ মেহেরবান’। সুরা হুদ, আয়াত : ৪১।
আমরা যখন বাড়িতে ফিরব তখন নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারায় সর্বপ্রথম আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করাসহ রসুল (সা.)-এর প্রতি দরুদ শরিফ পাঠ করব। শুকরিয়া হিসেবে দুই রাকাত নামাজ আদায় করাটা খুবই উত্তম। হজরত কাব ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত ‘রসুল (সা.) যখন সফর থেকে বাড়ি ফিরতেন তখন সর্বপ্রথম মসজিদে গিয়ে দুই রাকাত নামাজ পড়তেন’। বুখারি ও মুসলিম।
মো. আবু তালহা তারীফ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।