লাইফস্টাইল ডেস্ক : বাংলাদেশে মোটরসাইকেলের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও। এমন বাস্তবতায় হেলমেট শুধু একটি আনুষঙ্গিক জিনিস নয়, বরং জীবন রক্ষাকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষা সরঞ্জাম। কিন্তু অনেকেই হেলমেট কেনার সময় শুধুমাত্র স্টাইল বা দাম দেখেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। অথচ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানা থাকলে হেলমেট হতে পারে আরও কার্যকর ও নিরাপদ।
নিচে হেলমেট কেনার আগে যে বিষয়গুলো জানা জরুরি, সেগুলো তুলে ধরা হলো-
১. সুরক্ষা সনদ (Safety Certification)
হেলমেট কেনার সময় প্রথমেই দেখতে হবে এটি আন্তর্জাতিক মানের DOT, ECE, বা ISI সনদপ্রাপ্ত কিনা। বাংলাদেশে ব্র্যাক এবং বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ কিছু মান নির্ধারণ করে দিয়েছে। মানসম্পন্ন হেলমেট মাথার আঘাত প্রতিরোধে কার্যকর।
২. ফিটিং ও আকার (Fit & Size)
হেলমেটের আকার মাথার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। খুব টাইট বা খুব ঢিলা হেলমেট উভয়ই বিপজ্জনক। হেলমেট মাথায় পড়ে কিছু সময় রাখলে বোঝা যায় এটি আরামদায়ক কিনা।
৩. ভেন্টিলেশন ও আরামদায়কতা
বাংলাদেশের গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায় ভালো বায়ু চলাচল (ভেন্টিলেশন) খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঘাম জমলে অস্বস্তি হয় এবং মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটে। ফলে হেলমেটের ভেতরে বাতাস চলাচলের সুবিধা আছে কিনা, তা যাচাই করা জরুরি।
৪. ওজন ও ভারসাম্য
বেশি ভারী হেলমেট দীর্ঘক্ষণ ব্যবহারে ঘাড় ও মাথায় চাপ ফেলে। তাই হালকা ও ভালো ভারসাম্যযুক্ত হেলমেট নির্বাচন করুন।
৫. ফেস শিল্ড ও ভিশন ক্লিয়ারিটি
ভাইজর (Visor) বা ফেস শিল্ড যেন আঁচড়রোধী এবং ইউভি প্রটেকশন সুবিধাসম্পন্ন হয়। রাতে স্পষ্ট দেখার জন্য অ্যান্টি-ফগ প্রযুক্তি সহ হেলমেট বেছে নেওয়া ভালো।
৬. ফুল ফেস নাকি হাফ ফেস?
ফুল-ফেস হেলমেট সবচেয়ে বেশি সুরক্ষা দেয়, বিশেষ করে চেহারা ও চোয়ালের জন্য। হাফ ফেস হেলমেট হালকা হলেও সুরক্ষা তুলনামূলকভাবে কম। নিরাপত্তার দিক থেকে ফুল ফেসই শ্রেয়।
৭. ব্র্যান্ড ও গ্যারান্টি
নামী ব্র্যান্ড যেমন Studds, Vega, LS2, MT, Axor, Arai, Shoei ইত্যাদি কোম্পানির হেলমেট গুণগত মানে নির্ভরযোগ্য। এগুলোর বেশিরভাগেই ১-২ বছরের ওয়ারেন্টি পাওয়া যায়।
৮. হেলমেটের মেয়াদ (Helmet Expiry)
অনেকে জানেন না, হেলমেটেরও একটি নির্দিষ্ট আয়ুষ্কাল রয়েছে। সাধারণত ৩-৫ বছর পর হেলমেটের শক অ্যাবজরপশন ক্ষমতা কমে যায়। পুরনো বা দুর্ঘটনাগ্রস্ত হেলমেট পরিবর্তন করাই উত্তম।
৯. প্রতারিত হওয়া থেকে সাবধান
অনেক সময় নকল ব্র্যান্ডের হেলমেট মূল ব্র্যান্ডের নামে বিক্রি হয়। তাই নির্ভরযোগ্য শোরুম বা অনলাইন স্টোর থেকে কেনা উচিত। দাম খুব কম দেখলেই হেলমেট কিনে ফেলার আগে যাচাই করে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
আপনার জীবনের মূল্য কয়েকশ বা হাজার টাকা নয়—সঠিক হেলমেট নির্বাচন জীবনের জন্য বিনিয়োগ। মোটরসাইকেল চালানোর সময় আইন মেনে এবং ভালো মানের হেলমেট ব্যবহার করলে সুরক্ষিত থাকা সম্ভব। তাই শুধু স্টাইল নয়, সঠিক হেলমেটই হোক আপনার জীবনের নিরাপত্তার প্রথম পদক্ষেপ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।