বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক: স্মার্টফোন এত দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে যে সাধারণ মানুষের কল্পনারও বাইরে। আর প্রযুক্তির উন্নতি এবং সহজলভ্যতার কারণে এখন সবার হাতেই স্মার্টফোন। প্রায় সব বয়সী মানুষেরই প্রথম পছন্দ স্মার্টফোন।
স্মার্টফোনের ব্যবহার এখন আর কোনো শ্রেণির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বরং সব শ্রেণির মানুষের হাতেই রয়েছে স্মার্টফোন। স্মার্টফোনের ব্যবহার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে একে নিয়ে দুশ্চিন্তাও বেড়েছে। স্মার্টফোনের সাধারণ কিছু সুরক্ষার কথা তুলে ধরা হলো এ লেখায়।
*অনেক সময়ই স্মার্টফোন হঠাৎ করে পানিতে পড়ে যায়। এই ধরনের পরিস্থিতিতে মাথা গরম না করে যত দ্রুত সম্ভব তা পানি থেকে তুলে ফেলুন। সাধারণত স্মার্টফোনের প্লাস্টিক কাভারটি এতো শক্তভাবে আটকানো থাকে যে ২০ সেকেন্ডের কম সময়ে এতে সহজে পানি ঢুকে না। সেটটি পানি থেকে তোলার পর কাভারটি খুলে ব্যাটারিটি বের করে নিন এবং ফোনে সিম বা রিম থাকলে তা দ্রুত খুলে ফেলুন। তাপ প্রয়োগ ছাড়াই সেটটিকে শুকিয়ে নিন। এ ক্ষেত্রে হেয়ার ড্রয়ার একটি ভালো উপকরণ হতে পারে।
তারপর টিস্যু দিয়ে হালকা করে সেটের বিভিন্ন অংশ যত দ্রুতসম্ভব মুছে নিন। বেশ লম্বা সময় অপেক্ষা করে যখন মনে হবে সেটটি পরিষ্কার হয়েছে এবং শুকিয়ে গেছে তখন হ্যান্ডসেটটির কাভার এবং ব্যাটারি পুনঃস্থাপন করে চালু করুন। এরপর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেটটি আগের মতোই কাজ করবে। খেয়াল রাখবেন, হ্যান্ডসেট শুকানোর সময় কখনোই যেন বেশি তাপ না লাগে।
* শুধু পানিতে পড়া নয়, সেটটি হাত থেকে বা বেশ উপর থেকে পড়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করুন এবং কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে চালু করুন।
* যারা স্মার্টফোন ব্যবহার করেন, তাদের সতর্ক থাকতে হবে ভাইরাস এবং অন্যান্য আক্রমণ থেকে। এ কারণে স্মার্টফোনে ভালো অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করা প্রয়োজন সবসময়। ইদানিং শীর্ষস্থানীয় অ্যান্টিভাইরাস প্রস্ততকারকদের প্রায় সকলেই মোবাইলের জন্য সিকিউরিটি প্রদান করে থাকে। এগুলোর দামও বেশি নয়। আমাদের দেশেও এখন এগুলো সহজলভ্য। কাজেই নিজের নিরাপত্তার খাতিরে ভালো সিকিউরিটি সফটওয়্যার ব্যবহার করুন।
* ফোনের অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারে সতর্ক হোন। স্মার্টফোন ব্যবহারের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিকই হচ্ছে অ্যাপ্লিকেশন। তবে অ্যাপ্লিকেশনের ছদ্মবেশে ফোনে ম্যালওয়্যার ঢুকে যেতে পারে, যা আপনার তথ্যগুলো হাতিয়ে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট। কাজেই উৎস বিশ্বস্ত না হলে অ্যাপ্লিকেশন, তা যত ভালোই হোক, ইন্সটল না করাই ভালো।
* মোবাইল ফোন চুরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আপনার নেটওয়ার্ক প্রোভাইডারকে খবর দিয়ে ফোন লক করে দিন। তা হলে সিম পাল্টানোর পরও কেউ ফোনটি ব্যবহার করতে পারবে না।
* নিজের ফোনের বিষয়ে যাবতীয় তথ্য নিজের কাছে রেখে দিতে হবে। এসব তথ্যের মধ্যে ফোনের মডেল এবং পিন নম্বর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর সাথে ফোনের সিরিয়াল নম্বর বা আইএমইআই নম্বরও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তোমার ফোনের সিরিয়াল নম্বর বা আইএমইআই নম্বর জেনে সেটি সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।
* নেটওয়ার্ক প্রোভাইডারের কাছে গিয়ে ফোন রেজিস্টার করে রাখা প্রয়োজন। তা হলে চুরি হলে ফোন লক করা সহজ হবে।
* ব্যক্তিগত যোগাযোগের নম্বরগুলো সিম কার্ডে সেভ করে রাখলে ভালো হয়। ফোন চুরি হয়ে গেলে ফোন থেকে নম্বর সংগ্রহ করা গেলেও সিম লক হয়ে গেলে সিম থেকে নম্বর চুরি করা যাবে না।
* গাড়ির জানালা খোলা অবস্থায় ড্যাশবোর্ডে ফোন রাখা যাবে না।
* রাস্তায় হাঁটার সময় মোবাইল ফোন হাতে থাকলে সাবধানে ধরে রাখতে হবে।
* বাসে চলাচলের সময় জানালার পাশে হাত রেখে মোবাইল ধরে না রাখাই ভালো। ছিনতাইকারীরা সুযোগের অপেক্ষায় থাকে।
* কি প্যাড ছাড়াও ফোন লক করে রাখা ভালো। এ ক্ষেত্রে ফোন চুরি যাওয়ার পর কেউ যদি লক খুলেও ফেলে, তা হলেও ফোনে থাকা সব যোগাযোগ নম্বর ডিলিট হয়ে যাবে।
* ফোন চুরি যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সার্ভিস প্রোভাইডার অর্থাৎ মোবাইল অপারেটর এবং পুলিশকে খবর দেওয়া উচিত। কারণ আপনার চুরি যাওয়া মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অনেকেই অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত কাজ করে ফেলতে পারে, যার দায় পড়বে আপনার উপরেই। কাজেই এসব বিষয়ে সাবধান থাকা জরুরি। অপারেটর একবার ফোন লক করে দিলে আর সেই ফোন অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারবে না।
* অনেকেই ফোনের সিরিয়াল নম্বর জানেন না এবং কী করে এটা জানতে হয়, সেটাও জানেন না। *#06# নম্বর ফোনের কি প্যাডে টাইপ করলে মোবাইল স্ক্রিনে ১৫ ডিজিটের একটা নম্বর দেখা যাবে। কোনো কোনো মোবাইল থেকে নম্বরটা ডায়ালও করতে হতে পারে। মোবাইল ফোন হারিয়ে গেলে এই ১৫ ডিজিটের নম্বরটা জানা থাকলে, পুলিশের সাহায্যে সহজেই মোবাইলটির অবস্থান জানা যাবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।