জীবনে সফলতা ও নিরাপত্তা পেতে নেক আমলের প্রভাব

namaj

ধর্ম ডেস্ক : মহান আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর ইবাদত করার জন্য সৃষ্টি করেছেন। তাই দুনিয়া ও আখিরাতের সফলতা ও নিরাপত্তা পেতে আমাদের উচিত একনিষ্ঠভাবে একমাত্র মহান আল্লাহর ইবাদত করা। সাধ্যমতো নেক আমল করা। কারণ মহান আল্লাহ নেক আমলকারীদের দুনিয়া ও আখিরাতে উত্তম প্রতিদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

namaj

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘পুরুষ আর নারীদের মধ্যে যে কেউ সৎ কাজ করবে আর সে মুমিনও, তাকে আমি অবশ্য অবশ্যই উত্তম জীবন দান করব আর তাদেরকে অবশ্য অবশ্যই তারা যা করে তার চেয়ে উত্তম প্রতিফল দান করব।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৯৭)

নেক আমল এতটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে অনেক সময় নেক আমলের কারণে বড় ধরনের বহু বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। একমাত্র আল্লাহকে খুশি করার জন্য করা কোনো একটি ছোট নেক আমলের অসিলায় অনেক সময় কঠিন থেকে কঠিন বিপদ পানি হয়ে যায়। যার সুন্দর উদাহরণ কোরআন-হাদিসে উল্লেখ রয়েছে।

যেমন পবিত্র কোরআনে মুসা (আ.) ও খিজির (আ.)-এর ঘটনা পাওয়া যায়। সেখানে খিজির (আ.) দুই এতিম শিশুর জন্য পুঁতে রাখা সম্পদ রক্ষা করার জন্য একটি হেলে পড়া দেয়াল ঠিক করে দেন। তাঁকে এই কাজটি করার কারণ জিজ্ঞেস করলে, তিনি বলেন, তাদের বাবা সত্কর্মপরায়ণ ছিল। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর প্রাচীরটির বিষয় হলো, তা ছিল শহরের দুজন এতিম বালকের এবং তার নিচে ছিল তাদের গুপ্তধন।

আর তাদের পিতা ছিল সত্কর্মপরায়ণ। তাই আপনার রব চাইলেন যে, তারা দুজন প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে তাদের গুপ্তধন বের করে নেবে। এসবই আপনার রবের রহমতস্বরূপ। আমি নিজ থেকে তা করিনি। এ হলো সে বিষয়ের ব্যাখ্যা, যে সম্পর্কে আপনি ধৈর্য ধারণ করতে পারেননি।’
(সুরা : কাহফ, আয়াত : ৮২)

এখানে বাবার সত্কর্মপরায়ণ হওয়ার কারণে মহান আল্লাহ তাঁর দূত পাঠিয়ে তাদের সম্পদ রক্ষা করেছেন। এমনিভাবে হাদিস শরিফেও নেক আমলের সুফল ভোগের সুন্দর উদাহরণ পাওয়া যায়। ইবনে উমার (রা.) থেকে বর্ণিত একটি দীর্ঘ হাদিসে তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে বর্ণনা করেন যে তিনজন লোক হেঁটে চলছিল। তাদের ওপর বৃষ্টি শুরু হলে তারা এক পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নেয়। এমন সময় পাহাড় থেকে একটি পাথর তাদের গুহার মুখের ওপর গড়িয়ে পড়ে এবং মুখ বন্ধ করে ফেলে। তাদের একজন অন্যদের বলল, তোমরা তোমাদের কৃত আমলের প্রতি লক্ষ করো যে নেক আমল তোমরা আল্লাহর জন্য করেছ, তার অসিলায় আল্লাহর কাছে দোয়া করো। হয়তো তিনি এটি হটিয়ে দেবেন।

তখন তাদের একজন তার বৃদ্ধ মা-বাবার খিদমতের কথা স্মরণ করে বলল, (হে আল্লাহ) আপনি জানেন যে আমি কেবল আপনার সন্তুষ্টির জন্যই এ কাজ করেছি। তাই আপনি আমাদের জন্য একটু ফাঁক করে দিন, যাতে আমরা আকাশ দেখতে পাই। তখন আল্লাহ তাদের জন্য একটু ফাঁক করে দিলেন, যাতে তারা আকাশ দেখতে পায়।

দ্বিতীয় ব্যক্তিটি তার সুন্দরী চাচাতো বোনকে হাতে পেয়েও আল্লাহর ভয়ে জিনা থেকে বিরত হওয়ার ঘটনা স্মরণ করে বলল, হে আল্লাহ! আপনি জানেন যে কেবল আপনার সন্তুষ্টির জন্যই আমি তা করেছি। তাই আমাদের জন্য এটি ফাঁক করে দিন। তখন তাদের জন্য আল্লাহ আরো কিছু ফাঁক করে দিলেন।

‘অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার’ পদে জনবল নেবে আকিজ বেকারস, কর্মস্থল ঢাকা

শেষের লোকটি তার মজদুরের ফেলে যাওয়া হক রক্ষণাবেক্ষণ এবং তা বহু গুণে বাড়িয়ে তাকে ফেরত দেওয়ার ঘটনা স্মরণ করে বলল, (হে আল্লাহ!) আপনি জানেন যে তা আমি আপনার সন্তুষ্টি লাভের জন্যই করেছি, তাই আপনি অবশিষ্ট অংশ উন্মুক্ত করে দিন। এরপর আল্লাহ তাদের জন্য তা উন্মুক্ত করে দিলেন। (বুখারি, হাদিস : ৫৯৭৪-এর সংক্ষিপ্ত)

তাই আমাদের উচিত সাধ্যমতো নেক আমল করা এবং প্রতিটি কাজই একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা। গুনাহ থেকে বিরত থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করা। কারণ মানুষের গুনাহের কারণে কখনো কখনো তার ওপর বিভিন্ন রকম বিপদ-আপদ আসে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তোমাদের প্রতি যে মুসিবত আপতিত হয়, তা তোমাদের কৃতকর্মের ফল। আর অনেক কিছুই তিনি ক্ষমা করে দেন।’ (সুরা : শুরা, আয়াত : ৩০)
মাইমুনা আক্তার