আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) বৈদেশিক ও নিরাপত্তা নীতি বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি এবং ইউরোপিয়ান কমিশনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট জোসেপ বোরেলকে চিঠি দিয়েছেন ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের দুই সদস্য (এমইপি)। কার্সটেন লুক ও ইলান ডি ব্যাসো সই করা চিঠিতে বাংলাদেশে সত্যিকারের অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি সম্মান ফিরিয়ে আনতে ইইউকে সম্ভাব্য সকল পদক্ষেপ নিতে জোর দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে ইইউকে বাংলাদেশে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয়ে বিবেচনা করতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ বিবেচনা করার আহ্বান জানাচ্ছি।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) জোসেপ বোরেলকে লেখা চিঠিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সম্পর্কে আমাদের উদ্বেগ প্রকাশের জন্য আপনাকে বিনীতভাবে চিঠি লিখছি। গত কয়েক সপ্তাহে বাংলাদেশ সরকার বিরোধীদলীয় কর্মীদের ওপর সহিংস তাণ্ডব চালিয়েছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো মানবাধিকার সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের মতে, প্রায় ১০ হাজার বিরোধী নেতা-কর্মী ও সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের দুই সদস্য বলেছেন, প্রধান বিরোধী দলগুলোকে যখন হয়রানি করা হয়, তাদের কর্মীদের হয়রানি করা হয়, গ্রেপ্তার করা হয় ও সমর্থকদের ভয় দেখানো হয়- তখন কোনো অবাধ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না।
চিঠিতে বলা হয়, ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে, বিশেষ করে অধিকারের ক্ষেত্রে ২০২৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর রেজুলেশনের মাধ্যমে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। ৫ নভেম্বর বাংলাদেশে গণগ্রেপ্তারের বিষয়ে আপনার (জোসেফ বোরেল) পোস্টটি আমরা ইতিবাচকভাবে লক্ষ্য করেছি। সেখানে আপনি ‘গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার পক্ষে সহায়ক অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের একটি শান্তিপূর্ণ উপায়’ খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন।
‘তবে আমরা আশঙ্কা করছি, বাংলাদেশ সরকার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য এমন শান্তিপূর্ণ উপায় খুঁজছে না। গত সপ্তাহের ঘটনাগুলি বরং বিপরীত ইঙ্গিত দেয়।’
সম্প্রতি ইইউ বাংলাদেশে তাদের পর্যবেক্ষণ মিশন পাঠায়। মিশনে উঠে এসেছে: শ্রম ও মানবাধিকার উভয় ক্ষেত্রেই চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। মানবাধিকারের ক্ষেত্রে, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক চুক্তি (আইসিসিপিআর), মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সংগঠনের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার এবং সুশীল সমাজের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করার মতো মূল ইবিএ কনভেনশনগুলো মেনে চলার জন্য আরও প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে জানুয়ারিতে অপ্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের ফলাফলের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষ্ক্রিয়ভাবে অপেক্ষা করা উচিত নয়। আগে থেকেই স্পষ্টভাবে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করা উচিত। বাংলাদেশে সত্যিকারের অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি সম্মান ফিরিয়ে আনতে ইইউকে অবশ্যই সম্ভাব্য সবকিছু করতে হবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ সম্পর্কে ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সালের সংসদের রেজুলেশনে উল্লিখিত সুপারিশগুলো অবিলম্বে বাস্তবায়নের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।