জুমবাংলা ডেস্ক : পাঁচ বছর একসঙ্গে পড়াশোনা করেছেন হারুন অর রশিদ ও মুরাদ আলম। এবার বিয়ের পিঁড়িতেও বসলেন একসঙ্গে, তাও আবার যৌতুকবিহীন। যৌতুক ছাড়াই এক লাখ টাকা দেনমোহর নগদ পরিশোধ করে স্ত্রীদের গ্রহণ করেছেন তারা।
বুধবার বিকেলে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পরিষদ ক্রীড়া সংস্থা মাঠে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বড়বাড়ী ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজি দবিরুল ইসলাম তাদের বিয়ে সম্পন্ন করেন।
সমাজে যৌতুকবিহীন বিয়ে উৎসাহ যোগাতে ব্যতিক্রম এই আয়োজন করেছে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা গ্লোবাল রিলিফ ট্রাস্ট (জিআরটি)। বিয়ে পরবর্তী দাম্পত্য জীবন সুখের করতে দোয়ার পাশাপাশি বর ও কনেকে আসবাবপত্র, সেলাই মেশিন ও কাপড়-চোপড় উপহার দিয়েছে সংস্থাটি।
জোড়া বিয়ে হয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার কাদিহাট গ্রামের আ. হামিদের ছেলে হারুন অর রশিদের সঙ্গে একই উপজেলার চন্দন চহট গ্রামের মোহাম্মদ আলীর মেয়ে বুশরা আক্তারের এবং ধুলঝারী গ্রামের সেরকেট আলী ছেলে মুরাদ আলমের সঙ্গে কাদিহাট আমতলা গ্রামের আকবর আলীর মেয়ে আফসানা আক্তারের।
বর হারুন অর রশিদ ও মুরাদ আলম বলেন, দুই বন্ধু একসঙ্গে পড়াশোনা করেছি। যৌতুকবিহীন বিয়ে করার ইচ্ছে ছিলো। তবে একসঙ্গে দুজনের বিয়ে হবে, এটা ভাবিনি।
এদিকে, দুই বন্ধু একসঙ্গে একইদিনে যৌতুকবিহীন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে খুশি কনে বুশরা ও আফসানা। দাম্পত্য জীবনে সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তারা।
কনে বুশরার বাবা জানান, চার মেয়ের মধ্যে দুই মেয়েকে তিনি আগে যৌতুক ছাড়া বিয়ে দিয়েছেন। তৃতীয় মেয়েকেও যৌতুক ছাড়া বিয়ে দিলেন। ইচ্ছে রয়েছে চতুর্থ মেয়েও তিনি যৌতুক ছাড়া বিয়ে দেবেন।
এদিকে বর মুরাদের বাবাও জানালেন একই কথা। চার ছেলের মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ছেলেকে যৌতুক ছাড়া বিয়ে দিলেন। এরপরে দুজন ছেলেও একইভাবে বিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা রয়েছে তার।
বর ও কনের চারটি পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিটি পরিবারের যৌতুক প্রথা বিরোধী। তারা নিজেরাও পূর্বের বিয়েগুলো যৌতুক ছাড়া করেছেন। ভবিষ্যতে তাদের পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের যৌতুক প্রথা থেকে বের হয়ে আসতে এমন উদ্যোগ তাদের।
আয়োজক কমিটি দাতা সংস্থার জিআরটির স্থানীয় প্রতিনিধি মুফতি শরিফুল ইসলাম জানান, চারটি পরিবারের সম্মতিতে যৌতুকবিহীন বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিলো। বিয়ে সম্পন্ন এবং জোড়া দম্পতিকে সংস্থার পক্ষ থেকে উপহার প্রদান করা হয়েছে।
বালিয়াডাঙ্গীর ইউএনও আফছানা কাওছার বলেন, গ্রামে বিয়ের পর যৌতুক লেনদেনকে কেন্দ্র করে দাম্পত্য জীবনে তিক্ততা তৈরি হয়। পরে অনেক সংসার ভেঙে যায়। সামাজিক এমন অবক্ষয় থেকে বেরিয়ে আসতে যৌতুকবিহীন বিয়ের বিকল্প নেই। সংস্থাটির এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।