জুমবাংলা ডেস্ক: ‘জয় বাংলা’ জাতীয় স্লোগান হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর মন্ত্রিপরিষদ সদস্যদের বলিষ্ঠ ভূমিকার জন্য আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়েছে।
‘জয় বাংলা’ জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণার দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হওয়ায় বাঙালি জাতির পক্ষ থেকে সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর মন্ত্রিপরিষদকে ধন্যবাদ জানানো হয়।
মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শাজাহান খান কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ অনুযায়ী আজ জাতীয় সংসদে এই প্রস্তাবটি সংসদে উত্থাপন করেন। প্রস্তাবের ওপর আলোচনা শেষে সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। প্রস্তাবটি পাস হওয়ার সময় সংসদ সদস্যরা অধিবেশন কক্ষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন। প্রস্তাবের ওপর আলোচনার অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শাজাহান খানের প্রস্তাবে বলা হয়, ‘সংসদের অভিমত এই যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরতœ শেখ হাসিনার ঘোষণার মধ্য দিয়ে ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণার যে প্রত্যাশ্যা দীর্ঘদিন এ জাতির ছিল, তা পূরণ হওয়ায় বাঙালি জাতির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রিপরিষদকে আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হোক।
আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না। তিনি বলেন, বিএনপির একজন সংসদ সদস্যের জয় বাংলা স্লোগান জাতীয়করণ নিয়ে সংসদে দেয়া বক্তব্য প্রমাণ করেছে, তারা দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিশ্বাস করে না। তাদের অন্তরে এখনো পেয়ারে পাকিস্তান রয়ে গেছে এবং তারা পাকিস্তানের গোলামীটাই তারা পছন্দ করে। তাদের হৃদয়ে যে পেয়ারে পাকিস্তান বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যের বক্তব্যে এটাই প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি বলেন, সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যে কাজগুলো করেছিল জিয়াও একই কাজ করেছিলেন যখন ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেয়া হত। তারা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান নিয়ে বিভিন্ন অপপ্রচার চালায়। জিয়ার অনুসারীরা এখনো সেই পুরনো কাজই করছে।
প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলীয় সদস্যরা বলেন, জয় বাংলা দলীয় স্লোগান ছিল না, এটা শুধু যুদ্ধের স্লোগান নয়, এটা ছিল আমাদের জাতীয় স্লোগান। কিন্তু স্বাধীনতা পরর্বতীতে আমাদের জাতীয় জীবনে এই অর্জন ধরে রাখতে পারিনি। মুক্তিযুদ্ধের চার মূলনীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই স্লোগানের চেতনাকে ধরে রাখার আহ্বান জানান বক্তারা।
প্রস্তাব উত্থাপনকালে শাজাহান খান বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭০ সালের ১০ জানুয়ারি ঢাকার পল্টন ময়দানে এক জনসভায় আনুষ্ঠানিকভাবে জয় বাংলা স্লোগানাকে বাঙালি জাতির অপরিহার্য স্লোগান হিসাবে ঘোষণা করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধারা জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে পাক-হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে আমরণ লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। তাদের রণ ধ্বনি ছিল ‘জয়বাংলা’। মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান হিসাবে জয়বাংলা মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। স্বাধীনতার পর জয়বাংলা স্লোগানকে বাঙালি জাতি মনে প্রাণে গ্রহণ করেছিল। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্ব-পরিবারে হত্যার পর অবৈধ ক্ষমতা দখলদার মোস্তাক-জিয়া গং ‘জয় বাংলা’র পরিবর্তে পাকিস্তানি ভাবধারায় ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা করে।
প্রস্তাব উত্থাপনকালে তিনি আরও বলেন, ‘উচ্চ আদালতের নির্দেশে গত ২০ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়-(ক) ‘জয় বাংলা’ বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান হবে। (খ) সাংবিধানিক পদাধিকারীগণ, দেশে ও দেশের বাইরে কর্মরত সরকারি, স্বায়ত্ত্বশাসিত ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সকল জাতীয় দিবস উয্যাপন এবং অন্যান্য রাষ্ট্রীয় ও সরকারি অনুষ্ঠানে বক্তব্যের শেষে জয় বাংলা স্লোগান উচ্চারণ করবেন। (গ) সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রাত্যহিক সমাবেশে সমাপ্তির পর এবং সভা-সমাবেশ সমাপ্তির পর এবং সভা-সেমিনারে বক্তব্যের শেষে শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা ‘জয় বাংলা’ উচ্চারণ করবেন।’
সূত্র: বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।