বিনোদন ডেস্ক : সত্তরের দশকের গোড়ায় একসাথে অভিনয় করেছেন হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের সিনেমা ‘গুড্ডি’তে। তার কয়েক বছর পর রমেশ সিপ্পির ‘শোলে’তেও একসঙ্গে পর্দায় দেখা গেছে ধর্মেন্দ্র ও জয়া বচ্চনকে।
তবে কোনো সিনেমাতেই নায়ক-নায়িকার হিসেবে জুটি বাঁধেননি ধর্মেন্দ্র-জয়া। এবার করণ জোহরের নতুন সিনেমা ‘রকি অউর রানি কি প্রেম কহানি’তে তার ব্যতিক্রম ঘটেছে। সেখানে তারা নায়ক-নায়িকা না হলেও স্বামী-স্ত্রী।
নিজের ছবিতে বলিউডের বাঘা বাঘা শিল্পীকে জড়ো করেছেন করণ। ২৮ জুলাই মুক্তি পাবে ‘রকি অউর রানি ’। এতে স্ত্রী হিসাবে ধর্মেন্দ্রর পাশে থাকবেন জয়া বচ্চন। রয়েছেন শাবানা আজমিও। ছবিতে নায়ক-নায়িকার হিসেবে আছেন রণবীর সিং ও আলিয়া ভাট।
ছবির শুটিং শুরু করার পর থেকেই রণবীর-আলিয়ার মতো চর্চায় ধর্মেন্দ্র-জয়ার জুটি।
১৯৭৫ সালের ‘শোলে’তে একই পর্দায় থাকলেও সে ছবির চিত্রনাট্যের দাবি মেনে অমিতাভের ‘প্রেম’ ছিলেন জয়া। ফলে জয়-বীরুর বন্ধুত্বের মতোই রাধার ‘নির্বাক’ উপস্থিতিও টের পেয়েছিলেন দর্শকেরা। জয়ের চরিত্রে ছিলেন অমিতাভ এবং বীরুর ভূমিকায় ধর্মেন্দ্র। তাদের সঙ্গে ছিলেন রাধারূপী জয়া। ছবিতে বীরুর প্রেম বাসন্তী থুড়ি হেমা মালিনী।
‘শোলে’র আগে ১৯৭১ সালে ‘গুড্ডি’তে জয়ার সঙ্গে স্বল্প সময়ের জন্য হাজির হয়েছিলেন ধর্মেন্দ্র। সে ছবিতে ধর্মেন্দ্রের প্রতি জয়ার প্রবল প্রেম থাকলেও তা পরিণতি পায়নি। ফলে সে অর্থে পর্দায় এই প্রথম জুটি হিসাবে ধরা দিয়েছেন দুজনে। ছবির নায়ক রকির ঠাকুরদা-ঠাকুরমার ভূমিকায় ধর্মেন্দ্র-জয়া।
হৃষিকেশের ছবিতে দেখা গিয়েছিল, সিনেমার এক সুপুরুষ নায়কের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে গুড্ডি। বাস্তবের সঙ্গে শত যোজন দূরের সেই প্রেম ঘিরে কী হল পর্দায়? সে অবশ্য অন্য গল্প। গুড্ডির ভূমিকায় ছিলেন জয়া এবং ওই নায়কের চরিত্রে ধর্মেন্দ্র।
হৃষিকেশের ওই ছবি করার বহু বছর পর করণের সঙ্গে কফি খেতে খেতে গল্পগাছা করার শোয়ে জয়া জানিয়েছিলেন, ‘গুড্ডি’ করার সময় ওই সিনেমার মতো বাস্তবেও ধর্মেন্দ্রের প্রতি মুগ্ধতা ছিল তার।
২০০৭ সালে করণের শো’তে ধর্মেন্দ্রকে নিয়ে জয়ার অকপট মন্তব্য, ‘আমার সঙ্গে পরিচয় করানোর সময় প্রথম বার যখন ওকে দেখি, এ রকম একটা সোফা ছিল… সেটার পিছনে গিয়ে লুকিয়ে পড়েছিলাম। এতটাই নার্ভাস ছিলাম! কী করব, বুঝে উঠতে পারছিলাম না।’
হৃষিকেশের ওই ছবির মাধ্যমে বলিউডি পর্দায় অভিষেক ঘটেছিল জয়ার। ততদিনে তিনি সত্যজিৎ রায়ের ‘মহানগর’ করে ফেলেছেন।
সত্তরের দশকে হিন্দি ছবিতে ধর্মেন্দ্রের সঙ্গে প্রথম বার কাজের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘অতি সুপুরুষ এক মানুষ। আমার এখনও মনে পড়ে, সে সময় সাদা ট্রাউজার্স আর একটা সাদা শার্ট পরেছিলেন। দেখতে, ঠিক যেন গ্রিক দেবতা!’
ধর্মেন্দ্রর প্রতি তার মুগ্ধতা যে কতটা ছিল, তা জানাতে গিয়ে করণের শোয়ে এতেই থামেননি জয়া। বেশ মজা করেই বলেছেন, ‘বাসন্তীর চরিত্রটা আমারই করা উচিত ছিল। কারণ আমি ধর্মেন্দ্রকে ভালবাসতাম।’
এত বছর পর সেই গুড্ডির পাশে তাকে দেখে ধর্মেন্দ্রের কাছে সংবাদমাধ্যম জানতে চায়, জয়া যে তার প্রতি মুগ্ধ ছিলেন, তা জানতেন? তার প্রতি জয়ার মুগ্ধতার কথা অজানা নয় ধর্মেন্দ্রের। করণের ছবিতে ‘গুড্ডি’র সঙ্গে কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের মনের কথাও জানিয়েছেন।
২০২১ সালে করণের এ ছবির শুটিংয়ের সেটে জয়ার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন ধর্মেন্দ্র। লিখেছিলেন, ‘বহু বছর পর আমার গুড্ডির সঙ্গে… গুড্ডি… যে কোনও এক সময় আমার ভক্ত ছিল। সুখবর!’
সম্প্রতি ধর্মেন্দ্রকে সেই পুরনো কথা মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রশ্ন করা হয়েছিল, জয়া যে আপনাকে দেখে সোফার পিছনে লুকিয়ে পড়েছিলেন, তা জানতেন? ধর্মেন্দ্রর জবাব ছিল, ‘ওটা আসলে আমার প্রতি জয়ার ভালবাসা আর সম্মান প্রদর্শন। সে জন্যই ও রকম করেছিলেন জয়া।’
বাংলায় এমন কোন শব্দ আছে যা আমরা লিখতে পারি কিন্তু পড়তে পারি না
জয়া এবং অমিতাভের সঙ্গে তার যে সুসম্পর্ক রয়েছে, তা জানাতেও ভোলেননি ধর্মেন্দ্র। তিনি বলেন, ‘জয়া-অমিতাভকে দীর্ঘ দিন ধরে চিনি। এখনও মনে পড়ে ‘শোলে’র শুটিংয়ের সময় কী মজা করেই না সময় কাটিয়েছিলাম আমরা!’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।