জুমবাংলা ডেস্ক : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নবনির্মিত ফজিলতুন্নেছা হলের ৫২৮ নং কক্ষে মিথ্যে পরিচয় দিয়ে থাকছেন শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেলিন মাহবুবের বান্ধবী।
জানা গেছে, তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী। তবে ফজিলতুন্নেছা হলে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ৪৬ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী বলে নিজের পরিচয় দেন। ৫২৮ নম্বর রুমে তাকে থাকার সার্বিক ব্যবস্থা করে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শামীমা শিমুর (প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ – ৪৪ ব্যাচ) বিরুদ্ধে। লেলিন মাহবুব ও শিমু উভয়েই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের অনুসারী।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শামীমা শিমু বলেন, ‘আমি গতবছরই হল এবং রাজনীতি দুটোই ছেড়ে দিয়েছি। আমার নাম ব্যবহার করে কেউ যে ওই রুমে থাকছে সেটা আমার জানা ছিল না। আমি যখন জানতে পারি তখন তাকে বলি সে যেন আমার নামটা আর ব্যবহার না করে এবং সে যেন ঐ রুমে আর না থাকে। আমি জানুয়ারিতে এমফিল এর ক্লাস করতে যখন ক্যাম্পাসে যাই তখন ঐ মেয়েটাকে রুমে পাই, তখন ওকে বলি যে, সে যেন আর ঐ রুমে না থাকে। আমি যখন হলে ছিলাম তখন লেলিন ভাই আমাকে এই মেয়েকে রাখার জন্য বলেছিল, তার কথায় ঐ মেয়েকে রুমে থাকার পারমিশন দেই।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফজিলতুন্নেছা হলের ৫ম তলার একজন আবাসিক ছাত্রী বলেন,‘আমি তাকে অনেকদিন ধরে করিডোরে চলাফেরা করতে দেখেছি, বিশেষ করে রাত দশটার পর সে এসে হলে থাকে। কিন্তু উনি সহজে পরিচিত হতে চান না কখনোই। ওনার এক রুমমেটকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম একদিন, সে বলে উনি নাকি পাবলিক অ্যাড ৪৬।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফজিলতুন্নেছা হলের আরেকজন ছাত্রী বলেন, ‘কৌতূহল বসত একদিন আমি তার সঙ্গে সিস্টেম করে কথা বলেছিলাম। তখন আমাকে বলছে, আমি ক্যাম্পাসের না কিন্তু এই হলেই থাকি আর আমাকে ৪৬ এর মত করে ট্রিট করবা। কিন্তু ডিটেইলস পরিচয় উনি দেননি। তিনি জানান, লিজা হলের পলিটিকালদের প্রটেকশনে থাকেন এবং তিনি হলের নেত্রী শিমুর রুমে থাকেন। তাই তারাও কোনো ঝামেলায় জড়াতে চান না।
৫২৮ নম্বর রুমের উক্ত সিটের বৈধ শিক্ষার্থীর সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি গত এক বছরের বেশি সময় ধরে হলে থাকছি না, চাকরি সূত্রে বাইরে থাকছি। খুব তাড়াতাড়িই হল ক্লিয়ারেন্স নিয়ে চলে যাবো, সিটে কে থাকছে না থাকছে সে বিষয়ে আমার ধারণা নেই।’
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ফজিলতুন্নেছা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘আমার হলের সব ছাত্রী বৈধ। আমরা কিছুদিন আগেও সিট হালনাগাদ করেছি। তবে কেউ যদি গেস্ট হিসেবে বা নাম ভাঙিয়ে থাকে এবং ছাত্রীরা যদি প্রোটেকশন দিয়ে রাখে তাহলে হল প্রশাসনের পক্ষে সেটা জানতে পারাটা ডিফিকাল্ট।’ আর অভিযোগের বিষয়ে জানতে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
এদিকে লেলিন মাহবুব পুরো বিষয়টি অস্বীকার করে বলছেন, ‘আমার কোন গার্লফ্রেন্ডই নেই। গার্লফ্রেন্ড বা মেয়ে বন্ধু থাকলে তো আমার হলের নিয়ম ভেঙে রাখার প্রয়োজন নেই। আর ওই হলের বিষয়ে তো প্রভোস্ট স্যার দেখবেন। এখন কেউ যদি আমার নাম ভেঙে অনৈতিকভাবে হলে থাকে সেটা তোমরা খোঁজ নিয়ে দেখ। তবে আমি তোমাকে স্পষ্ট করা বলছি, আমার কোন গার্লফ্রেন্ডই নাই।’ তবে বিশ্বস্ত সূত্রে এই প্রতিবেদক নিশ্চিত হয়েছেন, লেলিন মাহবুব তার মেয়ে বন্ধুর আইইএলটিএস প্রস্তুতির জন্য হলে সিটের ব্যবস্থা করেছিলেন এবং তারা ইসলামনগরে একটি বাসা নিয়ে থাকেন। সূত্র : চ্যানেল ২৪
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।