যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ডের সাবেক বিচারক ও ‘কট ইন প্রভিডেন্স’ অনুষ্ঠান খ্যাত ফ্র্যাঙ্ক ক্যাপ্রিও মারা গেছেন। দীর্ঘদিন ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই শেষে ৮৮ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
বুধবার (স্থানীয় সময়) তার অফিশিয়াল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানানো হয়, ‘তিনি দীর্ঘ ও সাহসী লড়াইয়ের পর শান্তিতে চলে গেছেন।’
ফ্র্যাঙ্ক ক্যাপ্রিওর আদালত ছিল অন্যরকম—একটি মানবিক ও সহানুভূতিশীল স্থান। ছোটখাটো অপরাধের বিচারে তিনি প্রায়ই নম্রতা ও সহানুভূতির সঙ্গে সিদ্ধান্ত দিতেন। সেই সব মুহূর্ত নিয়েই তৈরি হওয়া ‘কট ইন প্রভিডেন্স’ অনুষ্ঠান তাঁকে করে তোলে বিশ্বের পরিচিত মুখ।
কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় ক্যাপ্রিও বলেন, ‘আমি আবার হাসপাতালে ফিরে এসেছি, একটু অসুস্থ বোধ করছি। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন।’
অনুষ্ঠানে প্রায়ই দেখা যেত, তিনি ট্রাফিক টিকিটে নিয়ে মামলায় আসা একজন বৃদ্ধা বা দরিদ্র শ্রমিকের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। কখনো শিশুকে বিচারকের আসনে বসিয়ে তার পিতামাতার টিকিটের বিচার করতে দিতেন, কখনো আবার নিজের রায়ে হাসি ছড়িয়ে দিতেন আদালত জুড়ে।
একবার মাত্র ৩ দশমিক ৮৪ ডলার ঘণ্টা মজুরিতে কাজ করা এক বারটেন্ডারের ট্রাফিক মামলার শুনানিতে ক্যাপ্রিও রায় ঘোষণা শেষে বলেন, ‘কেউ যেন বিল না দিয়ে পালিয়ে না যায়। যারা তিন ডলার ঘণ্টায় কাজ করে, তাদের যেন এভাবে ঠকানো না হয়।’
তার এই মানবিক আচরণে মুগ্ধ হয়ে কোটি কোটি মানুষ অনলাইনে তার ভিডিও দেখেছেন।
জাস্টিস সিস্টেমে সবার সমান সুযোগ নেই—এই কথা বারবার বলেছেন ক্যাপ্রিও। এক ভিডিওতে বলেন, ‘আমেরিকার ৯০ শতাংশ দরিদ্র মানুষ স্বাস্থ্যসেবা, বাসস্থান, ভেটেরান সুবিধা এমনকি ট্রাফিক টিকিটের মতো মামলাও একা লড়েন। এটা ন্যায়বিচারের আদর্শের সঙ্গে যায় না।’
প্রভিডেন্স শহরের ফেডারেল হিল এলাকার দরিদ্র এক পরিবারে জন্ম ফ্র্যাঙ্ক ক্যাপ্রিওর। জীবনের শুরুটা সহজ ছিল না। তবে ধীরে ধীরে তিনি উঠে আসেন মানুষের ন্যায়বিচারের আশ্রয়স্থল হয়ে।
২০২৩ সালে বিচারকের পদ থেকে অবসর নেন তিনি। চার দশকেরও বেশি সময় তিনি প্রভিডেন্স মিউনিসিপ্যাল কোর্টে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের গভর্নর ড্যান ম্যাকি। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘তিনি শুধু একজন বিচারক ছিলেন না, ছিলেন মানবিকতার প্রতীক।’
পরিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘তিনি ছিলেন এক আদর্শ স্বামী, পিতা, দাদা এবং প্রিয় বন্ধু। তার কোমলতা, রসবোধ ও মানবিকতা আমাদের হৃদয়ে অম্লান হয়ে থাকবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।