লাইফস্টাইল ডেস্ক : চাঁদ তার মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য এবং স্বর্গীয় উপস্থিতির জানান দিয়ে প্রাচীনকাল থেকেই মানুষের আকর্ষণের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি মাসে ভিন্ন ভিন্ন নামে এবং তাৎপর্যে ডাকা হয় চাঁদকে। এমনই একটি আকর্ষণীয় বিষয় হলো জুলাইয়ের ‘বাক মুন’।
জুলাইয়ের পূর্ণিমা, যাকে ‘বাক মুন’ নামেও ডাকা হয়। চলতি বছরের প্রথম এই সুপারমুন দেখা যাবে আজ। সুপারমুনটি রাতের আকাশে অন্যান্য পূর্ণিমার চাঁদের চেয়ে অধিক উজ্জ্বল ও ৭ শতাংশ বড় দেখাবে।
সোমবার (৩ জুলাই) রাতের ‘বাক মুন’ বিশ্বজুড়ে দৃশ্যমান হবে। বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষ এই দৃশ্য উপভোগ করবে। আজকের পরেও বেশ কয়েক রাত পূর্ণ এই চাঁদ দেখা যাবে।
‘বাক মুন’ কি এবং কীভাবে ঘটে
যখন চাঁদের কক্ষপথ স্বাভাবিকের চেয়ে পৃথিবীর কাছাকাছি আসে, তখন মহাজাগতিক এই দৃশ্যকে সুপারমুন বলা হয়। যখন চাঁদের কক্ষপথ পৃথিবীর নিকটতম হয় এবং একই সময়ে চাঁদ পূর্ণ হয় তখন সুপারমুন ঘটে।
মূলত চাঁদ পৃথিবীকে একটি ডিম্বাকৃতির উপ-বৃত্তে প্রদক্ষিণ করে। পৃথিবীর চারপাশে প্রদক্ষিণের সময় চাঁদ কখনও পৃথিবীর কাছাকাছি, কখনও দূরে সরে যায়।
এই উপ-বৃত্তের সবচেয়ে দূরবর্তী বিন্দুটিকে অ্যাপোজি বলা হয়। পৃথিবী থেকে এর গড় দূরত্ব প্রায় ২ লক্ষ ৫৩ হাজার মাইল দূরে। আর উপ-বৃত্তের নিকটতম বিন্দুকে বলা হয় পেরিজি, যা পৃথিবী থেকে গড়ে প্রায় ২ লক্ষ ২৬ হাজার মাইল দূরে।
যখন পেরিজিতে পূর্ণিমার চাঁদ উপস্থিত হয়, তখন এটি পৃথিবী থেকে সাধারণ পূর্ণিমার চাঁদের চেয়ে কিছুটা উজ্জ্বল এবং বড় দেখায়। আর এই দৃশ্যকেই ‘সুপারমুন’ বলা হয়।
বৈজ্ঞানিক হিসেবে, সুপারমুনগুলো সাধারণ পূর্ণিমার চাঁদের চেয়ে প্রায় ৭ শতাংশ বড় এবং প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি উজ্জ্বল দেখায়।
এদিকে, ৩ জুলাইয়ের পর ২০২৩ সালে আরও তিনটি সুপারমুন দেখা যাবে। তার একটি ১ আগস্ট, এরপর ৩০ আগস্ট এবং শেষ সুপারমুন দেখা যাবে ২৯ সেপ্টেম্বর।
জুলাইয়ের সুপারমুনকে কেন ‘বাক মুন’ বলা হয়
দেশে দেশে পূর্ণিমার চাঁদের নামকরণের ঐতিহ্য রয়েছে। তেমনি নেটিভ আমেরিকান লোককাহিনীতেও উপজাতিরা চাঁদ চক্রগুলো পর্যবেক্ষণ করে এবং প্রাকৃতিক ঘটনার ওপর ভিত্তি করে চাঁদের নাম নির্ধারণ করে। এই নামগুলো কিছু নির্দিষ্ট সময়কে বোঝাতে, গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বোঝাতে এবং কৃষি ও শিকারে সহায়তা করতে ব্যবহৃত হয়েছিল।
‘বাক মুন’ ধারণাটি নেটিভ আমেরিকান উপজতির ঐতিহ্যে থেকে এসেছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়, উত্তর আমেরিকার উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে এই চাঁদের নামকরণ করা হয় বিশেষ প্রজাতির পুরুষ হরিণের নামে। এই হরিণ সাধারণত জুলাই মাসে তাদের বৃদ্ধির প্রাথমিক পর্যায়ে পৌঁছায়। এ সময়টাতে এরা ‘ভেলভেট’ নামে পরিচিত- যা মূলত নরম চুলে আচ্ছাদিত কিছু বোঝায়।
নেটিভ আমেরিকান উপজাতিরা জীবিকা নির্বাহের জন্য শিকারের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল ছিল। ‘বাক মুন’ দিয়ে তারা সেই সময়কে নির্দেশ করে- যা শিকারের মরসুম হিসেবে পরিচিত। এই সময়ে (জুলাই মাসে) ব্যাপকভাবে হরিণ শিকার করা যেত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।