‘জুমা’ শব্দের অর্থ এক জায়গায় জড়ো হওয়া বা কাতারবদ্ধ হওয়া। শুক্রবার মসজিদে জোহরের চার রাকাতের পরিবর্তে কাতারবদ্ধ হয়ে দুই রাকাতের যে ফরজ নামাজ আদায় করা হয়, ইসলামের পরিভাষায় সেটিই সালাতুল জুমা বা জুমার নামাজ।
পবিত্র আল-কোরআনে ‘জুমা’ (জমায়েত) নামে একটি স্বতন্ত্র সুরা আছে। সেটি ৬২ নম্বর সুরা। তাতে জুমার নামাজের গুরুত্ব বর্ণনা করে আল্লাহ বলছেন, ‘হে বিশ্বাসীরা! জুমার দিন যখন নামাজের জন্য ডাকা হয়, তখন তোমরা আল্লাহকে মনে রেখে তাড়াতাড়ি করবে ও কেনাবেচা বন্ধ রাখবে। এ-ই তোমাদের জন্য ভালো; যদি তোমরা বোঝো।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ৯)।
জুমার সালাতের গুরুত্ব বোঝাতে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অলসতা করে ধারাবাহিকভাবে তিনটি জুমার জামাতে অনুপস্থিত থাকে, আল্লাহ তা’আলা তার অন্তরে মোহর মেরে দেন। (সুনানে নাসাঈ: ১৩৭২) অর্থাৎ সেই অন্তর হেদায়াত পাওয়ার অযোগ্য হয়ে যায়।’
তবে সবার উপর জুমা আদায় করা ওয়াজিব নয়। জুমার নামাজ ওয়াজিব মুসলমান প্রাপ্তবয়স্ক, জ্ঞানসম্পন্ন (যিনি মানসিক ভারসাম্যহীন নন) মুকিম (যিনি মুসাফির নন) স্বাধীন (যিনি ক্রিতদাস নন) নগর বা লোকালয়ের অধিবাসী পুরুষদের ওপর; যার এমন কোনো গ্রহণযোগ্য অসুবিধা, অসুস্থতা বা বার্ধক্য নেই যে কারণে তিনি মসজিদে উপস্থিত হতে ও জুমা আদায় করতে অক্ষম।
রাসুল (সা.) বলেছেন, জুমার নামাজ প্রত্যেক মুসলিমের উপর জামাআতের সাথে আদায় করা ওয়াজিব। কিন্তু তা চার প্রকার লোকের উপর ওয়াজিব নয়; ক্রীতদাস, মহিলা, শিশু ও অসুস্থ ব্যক্তি। (সুনান আবু দাউদ: ১০৬৭)
ইমাম দারাকুতনি ও বায়হাকির বর্ণনায় এসেছে, আল্লাহ ও পরকালের ওপর যাদের ইমান আছে, তাদের ওপর জুমা ওয়াজিব। তবে অসুস্থ, মুসাফির, নারী, শিশু ও ক্রিতদাসদের ওপর জুমা ওয়াজিব নয়।
মুসাফির ও নারীদের ওপর জুমার নামাজ আদায় করা ওয়াজিব নয়। তবে তারা যদি মসজিদে উপস্থিত হওয়ার সুযোগ পান, তাহলে জুমা আদায় করে নেবেন। মুসাফির ব্যক্তি জুমার ইমামতিও করতে পারবেন। কোনো মসজিদের খতিব সাহেব যদি সফর পরিমাণ দূরত্ব থেকে এসে জুমার ইমমতি করেন, তাহলে তার ও মুক্তাদিদের জুমা শুদ্ধ হবে।
মসজিদে উপস্থিত হতে অক্ষম অসুস্থ, অন্ধ বা বৃদ্ধদের ওপর জুমা ওয়াজিব নয়। তবে অন্ধ ব্যক্তি যদি তাকে মসজিদে নিয়ে যাওয়ার মতো কাউকে পেয়ে যান তাহলে তার ওপর জুমা ওয়াজিব হবে।
যে ব্যক্তি এমন বিজন কোনো জায়গায় অবস্থান করছেন, যেখানে জুমার নামাজ আদায় করার মতো মানুষ নেই এবং তিনি জুমার জন্য লোকালয়ের কোনো মসজিদে উপস্থিতও হতে পারছেন না, তার ওপর জুমা ওয়াজিব নয়। যেহেতু মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি ও অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুদের ওপর কোনো ইবাদতই ফরজ বা ওয়াজিব নয়, তাই জুমাও তাদের ওপর ওয়াজিব নয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।