অর্ণব সান্যাল : বিশ্ব রাজনীতিতে ঘটে গেছে অঘটন! আর সেই অঘটনের কেদ্রবিন্দু আমাদের বাংলাদেশ। নির্দিষ্ট করে বললে এ দেশের পাবনা। সম্প্রতি পাবনায় পাওয়া গেছে এমন এক নথি, যার কারণে বিশ্বের প্রভাবশালী দেশ কানাডার প্রধানমন্ত্রীর জন্মস্থান নিয়ে শুরু হয়ে গেছে বিতর্ক। তা এমন পর্যায়েই পৌঁছে গেছে যে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর এখন নাকানিচুবানি খাওয়ার মতো অবস্থা!
বাংলাদেশের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো সম্প্রতি একটি খবর প্রকাশ করেছে। সেগুলোতে বিস্ময়সূচক চিহ্ন ব্যবহার করে বলা হচ্ছে যে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বাড়ি নাকি পাবনায়! খবরে বলা হয়েছে, বাস্তবে না হলেও, কাগজে-কলমে কানাডার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জন্মসূত্রে পাবনার নাগরিক। জেলার সুজানগর উপজেলার আহম্মদপুর ইউনিয়ন থেকে জাস্টিন ট্রুডোর নামে ইস্যু করা হয়েছে ভুয়া জন্মনিবন্ধন সনদ। এ নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে এলাকায়। ইউনিয়ন পরিষদের দেওয়া ভুয়া জন্মনিবন্ধন সনদে দেখা গেছে—ব্যক্তির নাম জাস্টিন ট্রুডো, বাবার নাম পিয়েরে ট্রুডো, মায়ের নাম মার্গারেট ট্রুডো। এই সনদ অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২৫ ডিসেম্বর পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন জাস্টিন ট্রুডো!
প্রকাশিত খবরে আরও বলা হচ্ছে, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের নিলয় হোসেন নামের একজন কম্পিউটার অপারেটর টাকার বিনিময়ে নামে-বেনামে জন্মনিবন্ধন দিত। ধারণা করা হচ্ছে যে, সেভাবেই হয়তো এই কাণ্ডটি ঘটেছে। তবে নিলয় বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। ওদিকে পরিষদের বর্তমান ইউপি সচিবও জানিয়ে দিয়েছেন যে, তাঁর কোনো দায় নেই! এ ঘটনায় এরই মধ্যে পাবনার জেলা প্রশাসককে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে তদন্ত এখন করে আর কী হবে? কানাডার প্রধানমন্ত্রী তো ঝামেলায় পড়েই গেছেন! একটি চরম অবিশ্বস্ত সূত্র কোনো বরাত ব্যতিরেকে জানিয়েছে, পাবনায় পাওয়া জন্মসনদের খবর পৌঁছে গেছে জাস্টিন ট্রুডোর কানে। আর কানে সেই খবর ঢোকার পরপরই স্রেফ কেঁদে ফেলেছেন তিনি! এ ঘটনা নিজের চোখে না দেখেই একটি পরোক্ষ সূত্র জানিয়েছে, খবরটি শুনে শুরুতে ট্রুডো বিস্ময়ে ফেটে পড়েন। এরপর নিজের চোখে জন্মসনদের ছবি দেখে তাঁর চোখ ছলছল হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। ট্রুডোর কান্না এতটাই গগনবিদারী ছিল যে, সেটি ঠেকানোর জন্য টিস্যুর নতুন তিনটি প্যাকেট খুলতে হয় সংশ্লিষ্টদের!
পুরোপুরি বানোয়াট সূত্রটি আরও জানিয়েছে, পাবনায় পাওয়া ভুয়া জন্মসনদের কারণে এরই মধ্যে ঘরে–বাইরে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে ট্রুডোকে। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, ভারত প্রভৃতি বিভিন্ন দেশ থেকে বিশ্বনেতারা ফোন করে ঘটনার সত্যতা জানার চেষ্টা শুরু করেছে। এর মধ্যে জো বাইডেন ফোন করে নাকি বলেছেন, ‘ইজ ইট ট্রু, ট্রুডো?’ আর সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নাকি একটা ছোট ভিডিও পাঠিয়েছেন, সেখানে তাঁর স্বভাবসুলভ ব্যঙ্গাত্বক মুখভঙ্গি ছিল। তবে ঋষি সুনাক নাকি সমবেদনা জানিয়েছেন এক ডেগচি। কিন্তু গায়ে জ্বলুনি ধরিয়ে দেওয়া কাজ হয়েছে রাশিয়া আর ভারতের পক্ষ থেকে। তাঁরা নাকি ট্রুডো ফোন ধরামাত্র ‘হা…হা…’ করে খালি হেসেছেন। আর এরপর কানের ওপর ফোন রেখে দিয়েছেন খট করে। বুঝুন একবার!
এর পর থেকেই নাকি জাস্টিন ট্রুডোর মন ভার হয়ে আছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সঙ্গে একেবারেই সম্পর্কিত নয়—এমন একটি হাওয়া থেকে পাওয়া সূত্র জানিয়েছে, সব ঘটনা শুনে ধাতস্থ হতে ট্রুডোর কিছুটা সময় লেগেছে। এর পর ট্রুডো কান্নাচাপা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেছেন, ‘…ওরা মানুষ নয়!’ তবে এই মন্তব্যের বিস্তারিত তিনি ব্যাখা করেননি, মানব না হলে মহামানব কিনা—সেটিও খোলাসা করেননি ট্রুডো। তবে পাবনার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। জানিয়েছেন যে, তাঁর আসল জন্মসাল ও তারিখ এবং প্রকৃত বাবা–মায়ের নাম যে বদলে যায়নি, এর জন্য হলেও তিনি কৃতজ্ঞ! তা না হলে হ্যাপা যে আরও বাড়ত।
এবার জানা যাক এ ঘটনা সংক্রান্ত সবশেষ তথ্য। কানেমুখে শোনা গেছে যে, পাবনার জন্মসনদ নিজের চোখে দেখতে বাংলাদেশে আসতেও পারেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। একটি কল্পবিজ্ঞানীয় পক্ষ দাবি করেছে, দুনিয়ার আশ্চর্য জিনিসপত্র দেখার আগ্রহ আছে ট্রুডোর। এর আগে তিনি পিরামিড দেখেছেন, ব্যাবিলনের শূন্যোদ্যান দেখেছেন। এবার পাবনায় পাওয়া নিজের জন্মসনদ দেখতেও তিনি চলে আসতে পারেন। হাজার হোক, এটি যে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতোভাবে জড়িত! তবে নিজের চোখে দেখার পর তাঁর আপাত আটকে থাকা অশ্রু ফের বাধভাঙা হয়ে ওঠে কিনা, সেটি নিয়ে আশঙ্কা থেকেই যায়। সেক্ষেত্রে এ দেশেও হয়তো টিস্যু পেপারের মজুত গড়ে তুলতে হতে পারে।
সে যাক গে। এসব ব্যাপার পরে ভাবা যাবে। যখন ট্রুডো আসবেন, তখনই দেখা যাবে। এমনিতেই আগেভাগে কাজ করার অভ্যাস আমাদের খুব একটা নেই। প্রয়োজনে ট্রুডোকে বলে দেওয়া যাবে যে, ‘লাঞ্চের পরে কাঁদেন!’ ওই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে টিস্যুর একটা না একটা ব্যবস্থা তো হবেই, কী বলেন!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।