কাবা শরীফের তারাবির নামাজ কত রাকাত

ধর্ম ডেস্ক : তারাবির নামাজের গুরুত্ব ও ইতিহাস : পবিত্র মাহে রমজান মুসলমানদের জন্য এক আনন্দময় ইবাদতের সময়। এই মাসে বিশেষভাবে আদায় করা হয় ‘তারাবির নামাজ’। বছরের অন্য কোনো সময় এই নামাজ পড়ার বিধান নেই। আরবি শব্দ ‘তারবিহাতুন’-এর বহুবচন হলো ‘তারাবি’, যার অর্থ বিশ্রাম বা প্রশান্তি। ইসলামি ফিকহ অনুযায়ী, প্রতি চার রাকাত পর কিছুক্ষণ বসে বিশ্রাম নেওয়ার বিধান রয়েছে, তাই এটি প্রশান্তির নামাজও বলা হয়।

তারাবির নামাজের রাকাত সংখ্যা

তারাবির নামাজ ২০ রাকাত। অনেকেই একে আট রাকাতে সীমাবদ্ধ করতে চান, তবে এটি অনুচিত। পবিত্র রমজানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো তারাবির নামাজ, যা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। রাসুলুল্লাহ (সা.) তিন দিন জামাতে আদায় করেছেন, তবে নিয়মিত আদায় করলে ফরজ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় পুরো রমজান জামাতে পড়েননি।

তারাবির নামাজের প্রচলন

দ্বিতীয় খলিফা হজরত উমর (রা.)-এর সময় থেকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে তারাবির নামাজের প্রচলন ঘটে। সাহাবায়ে কিরামের ঐকমত্যের ভিত্তিতে এটি সুন্নাত হিসেবে গৃহীত হয়। মহানবী (সা.)-এর ওফাতের পর ওহির পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এটি ফরজ হওয়ার সম্ভাবনা ছিল না।

তাবেঈ ইবনে আবি জুবাব (রহ.) বলেন, ‘উমর (রা.)-এর যুগে রমজানের তারাবি ছিল ২৩ রাকাত।’ (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস: ৭৭৩৩)

তাবেয়ি আবদুল আজিজ ইবনে রুফাই (রহ.) বলেন, ‘উবাই ইবনে কাব (রা.) ২০ রাকাত তারাবি ও তিন রাকাত বিতর পড়তেন।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস: ৭৭৬৬)

তারাবির গুরুত্ব ও হাদিসের প্রমাণ

‘মুয়াত্তা মালিক’সহ অন্যান্য গ্রন্থে উল্লেখ আছে, তাবেয়ি ইয়াজিদ ইবনে রুমান (রহ.) বলেন, ‘উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর যুগে ২৩ রাকাত তারাবি পড়া হতো।’ (মুয়াত্তা মালিক, হাদিস: ৩৮০)

সাহাবিদের যুগ থেকে অবিচ্ছিন্নভাবে মসজিদ-ই-নববীতে ২০ রাকাত তারাবি আদায় করা হতো, যা এখনো মক্কা-মদিনায় প্রচলিত। সারা বিশ্বের মুসলমানরাও এই সুন্নাত পালন করেন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমার ও আমার খুলাফায়ে রাশেদার সুন্নত দৃঢ়ভাবে ধারণ করা তোমাদের জন্য অপরিহার্য।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৪৬০৭)

তারাবির নামাজ কত রাকাত সহীহ হাদিস

তারাবির রাকাত নিয়ে বিতর্ক নেই

কিছু হাদিসে আট রাকাত নামাজের কথা উল্লেখ থাকলেও সেটি মূলত তাহাজ্জুদ সংক্রান্ত। মহানবী (সা.) রমজানে ও অন্যান্য সময় আট রাকাত তাহাজ্জুদ ও তিন রাকাত বিতর পড়তেন। তাই তারাবির নামাজকে ২০ রাকাত হিসেবেই পালন করা সুন্নাত। মহান আল্লাহ আমাদের সঠিকভাবে উপলব্ধি ও আমল করার তাওফিক দান করুন।