ধর্ম ডেস্ক : রমজান মাসের সবচেয়ে বরকতময় রাতগুলোর একটি হলো লাইলাতুল কদর। এ রাতকে হাজার মাসের চেয়েও উত্তম বলা হয়েছে। যদি কেউ এ রাতে ইবাদতের সৌভাগ্য লাভ করে, তবে তার অতীতের সব গুনাহ মাফ হয়ে যায়।
Table of Contents
হাদিসে এসেছে—
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ঈমান ও বিশ্বাসের সঙ্গে, সওয়াবের আশায় শবে কদরে ইবাদত করে, তার আগের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।” (বুখারি: ২০১৪, মুসলিম: ৭৬০)
এ রাতটি রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে খুঁজতে বলা হয়েছে। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি বলেছেন—
“তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদরের সন্ধান কর।” (বুখারি: ২০১৭, মুসলিম: ১১৬৯)
এ রাতে বিশেষ কিছু আমল করা জরুরি। আসুন জেনে নিই কোন ৫টি আমল অবশ্যই করা উচিত:
১. এশা ও ফজর নামাজ জামাতে আদায় করা
শবে কদরের বরকত লাভের জন্য অনেকে রাতভর নফল নামাজ ও ইবাদত করেন, কিন্তু ফরজ ইবাদতের গুরুত্ব অনেক বেশি।
হাদিসে এসেছে—
“যে ব্যক্তি এশা ও ফজর নামাজ জামাতে পড়ে, সে যেন সারা রাত নামাজ আদায় করল।” (মুসলিম: ৬৫৬)
তাই, নফল ইবাদতের চেয়ে ফরজ ইবাদতকে বেশি গুরুত্ব দিন এবং এশা ও ফজরের নামাজ অবশ্যই জামাতে আদায় করুন।
২. রাত জেগে ইবাদত করা
শবে কদরে রাত জেগে ইবাদত করলে অপরিসীম সওয়াব পাওয়া যায়।
হাদিসে নবীজি (সা.) বলেছেন—
“যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের আশায় শবে কদরে রাত জেগে ইবাদত করবে, তার অতীতের ও ভবিষ্যতের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।” (মুসনাদ আহমাদ: ২২৭১৩)
৩. ঝগড়া-বিবাদ থেকে বিরত থাকা
শবে কদরের সঠিক রাতটি রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবিদের জানাতে চেয়েছিলেন, কিন্তু দুই ব্যক্তির ঝগড়ার কারণে তা গোপন রাখা হয়।
হাদিসে এসেছে—
“আমি আপনাদের লাইলাতুল কদরের ব্যাপারে জানাতে বের হয়েছিলাম। কিন্তু অমুক ব্যক্তি বিবাদে লিপ্ত হওয়ায় সে জ্ঞান উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে।” (বুখারি: ৪৯)
রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে বিশেষভাবে ঝগড়া-বিবাদ থেকে বিরত থাকুন।
৪. সালাতুত তাসবিহ নামাজ আদায় করা
এই বিশেষ নামাজের মাধ্যমে গুনাহ মাফ হয় এবং অশেষ সওয়াব পাওয়া যায়।
নবী (সা.) বলেন—
“হে চাচা! আপনি যদি পারেন, তবে দৈনিক একবার সালাতুত তাসবিহ পড়বেন। যদি তা সম্ভব না হয়, তবে সপ্তাহে একবার, না পারলে মাসে একবার, না পারলে বছরে একবার। যদি এটাও না পারেন, তবে সারা জীবনে একবার হলেও এই নামাজ পড়বেন।” (বুখারি: ৩৪২৩, ইবনে মাজাহ: ১৭৩)
নিয়ম:
- ৪ রাকাত নফল নামাজ।
- প্রতি রাকাতে ৩০০ বার তাসবিহ পড়তে হয়।
- তাসবিহ:
سُبْحَانَ اللهِ، وَالْحَمْدُ للهِ، وَلَا إلَهَ إلّا اللهُ، وَاللهُ أكْبَر
উচ্চারণ: সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার।
অর্থ: মহা পবিত্র আল্লাহ। সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। আল্লাহ সবার চেয়ে বড়।
শবে কদরের রাতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। নবীজি (সা.) আয়েশা (রা.) কে এই দোয়া পড়তে বলেছেন—
اللَّهمَّ إنَّك عفُوٌّ كريمٌ تُحِبُّ العفْوَ، فاعْفُ عنِّي
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন কারিম, তুহিব্বুল আফওয়া, ফাফু আন্নি।
অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি মহানুভব ও ক্ষমাশীল। আপনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। আমাকে ক্ষমা করুন। (তিরমিজি: ৩৫১৩)
শবে কদর রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে খুঁজতে বলা হয়েছে। তাই এসব রাতে বেশি বেশি ইবাদত করুন, ফরজ আমলগুলোর প্রতি যত্নবান হন এবং আল্লাহর কাছে গুনাহ মাফের দোয়া করুন।
শেয়ার করে অন্যদের জানার সুযোগ দিন! 🤲
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।