জুমবাংলা ডেস্ক : অরুণিমা কান্ট্রিসাইড অ্যান্ড গলফ রিসোর্টের অবস্থান নড়াইলের কালিয়া উপজেলার খাসিয়াল ইউনিয়নের পানিপাড়ায়। জেলা শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে এ গ্রাম। প্রাকৃতিক পরিবেশে এখানে বছরের আট মাস দেশি-বিদেশি পাখির মেলা বসে। তবে এবার ঘটেছে ব্যতিক্রম। গ্রীষ্মেও বক-সারসসহ দেশীয় নানা প্রজাতির পাখির কলকাকলিতে সকাল-সন্ধ্যা মুখর থাকে। এই রিসোর্টটি পরিচিত হয়ে উঠেছে অরুণিমা ইকোপার্ক হিসেবে।
সদ্য বিবাহিত সুমাইয়া বেগম স্বামীর সঙ্গে ঢাকা থেকে এসেছেন এই ইকোপার্কে। তিনি বলেন, বৈশাখের তাপদাহের মধ্যে সাধারণত পাখির এমন বিশাল মেলা দেখা যায় না। গাছের মগডালে সাদা বক ও সারসের ঝাঁক ঝুলিয়ে রাখা ফুলের তোড়ার মতো মনে হচ্ছে। মোহনীয় এ দৃশ্যে আমি আপ্লুত।
সুমাইয়ার স্বামী সাহাদত হোসেন বলেন, প্রকৃতির সান্নিধ্যে প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটাতে এসেছি। গলফ খেলা, নৌকায় চড়া, মাছ ধরার সঙ্গে সঙ্গে সকাল-সন্ধ্যা অসংখ্য পাখির কিচিরমিচির মনে শিহরণ জাগিয়েছে। অল্প সময়ে যেন মনের আশ মিটছে না তাঁর।
সরেজমিন দেখা যায়, ভোরবেলায় পার্কজুড়ে বক, সারস, কাচিচোরা, পানকৌড়ি, দোয়েল, টুনটুনি, শালিক, চড়ুইসহ নানা পাখির কলকাকলি। খানিক পরে খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে পড়ে ঝাঁক বেঁধে। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতে নামতে আবারও ফিরে আসে পার্কের নিরাপদ আশ্রয়ে। গোধূলিবেলায় পুকুরপাড়ে বড় বড় গাছে তাদের ডানা ঝাপটানো ও কিচিরমিচির শব্দে তৈরি হয় অন্য এক আবেশ। এতে মুগ্ধতা প্রকাশ করেন দর্শনার্থী।
গোপালগঞ্জ থেকে সন্তানদের নিয়ে বেড়াতে এসেছিলেন রাবেয়া বেগম। তিনি জানান, শীতকালে বড় বড় বিল ও জলাশয়ে পাখিদের আনাগোনা দেখেছেন। গ্রীষ্মকালে এক জায়গায় সাধারণত এত পাখি দেখা যায় না। কিন্তু অরুণিমায় এ দৃশ্য দেখে মুগ্ধ তিনি।
জানা গেছে, ২০০৯ সালে প্রায় ৫০ একরেরও বেশি জমিতে গড়ে ওঠে পার্কটি। এটি এখন নানা জাতের পাখির অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে।
পার্কটির বৈশিষ্ট্য জানাতে গিয়ে ব্যবস্থাপক মো. সাজিকুর রহমান বেল্টু বলেন, আগে বছরের আট মাস দেশি-বিদেশি পাখি দেখা যেত এখানে। শীতে পরিযায়ী পাখি বেশি আসে। এবার গ্রীষ্মেও দেশীয় প্রজাতির সহস্রাধিক পাখি রয়ে গেছে। প্রাকৃতিক পরিবেশে এ দৃশ্য দেখতে দেশি-বিদেশি দর্শনার্থী আসছেন। এখানে দেশের একমাত্র প্রাইভেট গলফ ক্লাবও রয়েছে। এ ছাড়া পুকুরে মাছ শিকার ও নৌকায় ভ্রমণ করা যায়। দূরদূরান্তের পর্যটকদের জন্য খাওয়া ও বিনোদনের উন্নত ব্যবস্থাও রয়েছে।
এ পার্কের চেয়ারম্যান বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সাবেক সদস্য খবির উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, এবার গ্রীষ্ম মৌসুমে দেশীয় প্রজাতির পাখির অবস্থান পার্কটিকে দর্শনীয় করে তুলেছে। পর্যটনের জন্য এমন পরিবেশ দরকার। বহির্বিশ্বে দেশকে পরিচিত করতে ট্যুরিজম স্পটের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে এখানে আরও কিছু যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
খাসিয়াল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিএম বরকত উল্লাহ বলেন, অরুণিমা ইকোপার্কের জন্য পরিচিত হয়ে উঠেছে পানিপাড়া গ্রাম। পার্কটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পাখির আনাগোনা শুরু হয়। আগে শীত মৌসুমে দেখলেও এবার গ্রীষ্মেও দেশীয় পাখি দেখছেন। তিনি পাখিশিকারিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও আহ্বান জানান।
ডিসির আন্তরিকতায় দু:শ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেল দুই এসএসসি পরীক্ষার্থী
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।