বিনোদন ডেস্ক : স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরও জাতি, ধর্ম ও বর্ণের ভিত্তিতে মানুষকে বিচার করার বর্বর মনোভাব আজও আমাদের মনে আঁকড়ে আছে। তবে এমন নয় যে ভারত কাঠামোগত ও চিন্তাগত দিক দিয়ে উন্নত হয়নি, এখনও সমাজে এমন কিছু মানুষ রয়েছে যারা বর্ণভেদ মনোভাবের পক্ষে গর্ববোধ করে।
একসময় দক্ষিণী পরিচালক অ্যাটলি কুমারকেও সমাজের এই নিম্ন মানসিকতার শিকার হতে হয়েছিল। অ্যাটলি কুমারের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ার মানুষজনের প্রথম পরিচয় তার কাজের সূত্রে নয়। তিনি যখন প্রথম তার স্ত্রীর সঙ্গে ছবি শেয়ার করেছিলেন তখনই সমাজের জঘন্য মানসিকতার প্রমাণ পান।
তার তুলনায় তার বান্ধবী তথা স্ত্রীর গায়ের রং ছিল ফর্সা। কালো ছেলের পাশে ফর্সা মেয়েকে দেখে সেদিন হতে হয়েছিল তাকে। অ্যাটলি এবং তার বান্ধবী কৃষ্ণপ্রিয়ার যখন বিয়ে হয় তখনও দুজনেই ইন্ডাস্ট্রিতে স্ট্রাগল করছেন। অ্যাটলি তখন গল্প লিখে প্রযোজকদের বাড়ি বাড়ি ঘুরতেন। অন্যদিকে কৃষ্ণাপ্রিয়া তামিল ইন্ডাস্ট্রির ধারাবাহিকে অডিশন দিতেন।
বিয়ের পরই রজনীকান্তের ‘রোবট’ ছবিতে সহ পরিচালক হিসেবে কাজের সুযোগ তিনি। অ্যাটলি এবং তার স্ত্রীর বিয়ের ছবি প্রকাশ্যেই আসতেই অনেক কটুক্তির শিকার হতে হয়েছিল দুজনকে। কেউ বলেছিলেন, এই মেয়েটি শুধু টাকার লোভেই এমন কালো ছেলেকে বিয়ে করেছে! কেউ বলেন ছেলেটি নাকি কালো জাদু করে এমন সুন্দরী মেয়েকে বউ হিসেবে পেয়েছে!
দুটো ছেলে মেয়ে তথাকথিত রূপ বর্ণের ঊর্ধে উঠে শুধু একে অপরকে ভালোবাসা যায়। এই ধারণা তখন কারও মাথাতেই আসেনি। এমনকি বন্ধুমহলেও অনেক কু-কথা শুনতে হয়েছিল এই নব দম্পতিকে। তবে তারা সবকিছুই মুখ বুজে সহ্য করেছিলেন সেদিন। তাদের হয়ে জবাব দিয়েছে শুধু সময়।
সেই ছেলেটিই আজ দক্ষিণী সিনেমা জগতের জনপ্রিয় পরিচালক। তার ঝুলিতে রয়েছে ৪টি ছবি। সবকটি ছবিই বক্স অফিসে সুপারহিট হয়েছে হিসেবে প্রমানিত। এর মধ্যে রয়েছে ‘রাজা রানী’, ‘থেরি’, ‘মারসাল’ এর মত ছবি। এবার তার পরবর্তী প্রজেক্ট শাহরুখ খানের সঙ্গে। ছবির নাম ‘জওয়ান’। অ্যাটলি প্রমাণ করেছেন গায়ের রং কারও যোগ্যতা হতে পারে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।