কান ধরে উঠবস করাতে চাইলেন অনন্ত, মামুনের পাল্টা জবাব

বিনোদন ডেস্ক : গত কয়েকমাস ধরে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গন সরগরম। সিনেমার চেয়ে ব্যক্তিগত রেষারেষিতেই যেন মেতেছেন শিল্পীরা। এবার সেই পালে নতুন হাওয়া দিয়েছেন অভিনেতা অনন্ত জলিল ও নির্মাতা অনন্য মামুন।

অনন্ত জলিলের ‘মোস্ট ওয়েলকাম’ সিনেমার মাধ্যমে পরিচালক হিসেবে নাম লেখান মামুন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের অবনতি ঘটে। সম্প্রতি ‘দিন: দ্য ডে’ সিনেমার বাজেট নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মামুন। অনন্তর সমালোচনাও করেছেন।

পরে এক টিভি সাক্ষাৎকারে এর জবাব দেন অনন্ত জলিল। তিনি বলেন, ‘অনন্য মামুনকে আমি পরিচালক বানিয়েছি। তার পরিচালক সমিতির সদস্য হওয়ার ফি ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা আমি দিয়েছি। সমালোচনা যদি আমার সামনে কোনোদিন করে, আর আমার চোখে পড়ে তাকে (অনন্য মামুন) তো আমি কান ধরে উঠাবো-বসাবো। তার এত বড় সাহস কোথা থেকে হলো! তার কী যোগ্যতা আছে, অনন্ত জলিলের সমালোচনা করার।’

অতীতে অনেকবারই বিতর্কে জড়িয়েছেন অনন্য মামুন। অনন্ত জলিলের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন তিনি। লিখেছেন, ‘অনেক চুপ ছিলাম। দেখলাম চুপ থাকা মানে মিথ্যাটাকে অন্যায় হিসেবে মেনে নেওয়া। সত্যটা বলা দরকার। অনন্ত সাহেবের সাথে আমার পরিচয় ২০১০ সালের দিকে। আমি তখন কলকাতায় রেগুলার গল্প লেখক হিসাবে Eskay movies এর সাথে কাজ করি। ‘স্প্ল্যাশ’ ম্যাগাজিনের বাবুর সাথে আমার আগে থেকেই চেনাজানা ছিল। বাবু আমাকে হোটেলে ডাকলো, অনন্ত ভাইয়ের সাথে পরিচয় হলো। বাংলাদেশের ছেলে কলকাতায় কাজ করে শুনে উনি খুশি হলেন। বললেন, দেশে এসে আমার সাথে মিট করবেন।’

সোহানুর রহমান সোহানের সিনেমার কাজ করতে গিয়ে আবারো অনন্ত জলিলের সঙ্গে অনন্য মামুনের দেখা হয়। এরপর ধীরে ধীরে সম্পর্ক মধুর হতে থাকে। এ প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, ‘পরিচালক সোহান ভাইয়ের সাথে আমার জুটি হিট। সোহান ভাই অনন্ত ভাইয়ের সিনেমা ‘দ্যা স্পীড’ লেখার জন্য অনন্ত ভাইয়ের অফিসে নিয়ে গেলেন। তার সাথে আমার দ্বিতীয় দেখা। আমার কাজের দক্ষতা দেখে অনন্ত ভাই বললেন, আমাকে শুটিং এ থাকতে হবে। আমি এত কিছু ম্যানেজ করতে পারবো না। আমি শুরু করলাম- ক্যামেরা লোকেশন শিল্পী সবকিছু। তখন থেকেই আমি সোহান ভাইয়ের চোখে ভিলেন হয়ে গেলাম। … মজার ব্যাপার হলো অনন্ত ভাইয়ের সিনেমার খরচ তার অফিসের লোক দেখাশোনা করে। পরিচালক বা অন্য কারও হাতে টাকা দেয়া হয় না। মালয়েশিয়ার হিসাবে তার লোক ২৩ লাখ টাকা বেশি দিয়ে আসে, আমি পরে হিসাব বের করে তাকে টাকাটা ব্যাক করে দেই। সেদিন তিনি বলেছিলেন আপনি আমার ছোট ভাই।’

পরিচালক সমিতির ফি দেওয়া নিয়ে অনন্তের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে অনন্য মামুন লিখেছেন, ‘দ্যা স্পিড সিনেমার পরে অনন্ত ভাই বললেন, মামুন আপনি এত কিছু পারেন এবারের সিনেমাটা আপনি বানান। সিনেমার মানুষ হিসাবে এটা আমার স্বপ্ন ছিল, সেটা পুরণ হলো। আমাকে ১ লাখ টাকা সাইনিং মানি দিলেন। সম্পূর্ণ সিনেমার জন্য ৫ লাখ টাকা সত্যি একজন নতুন পরিচালক হিসেবে এটা অনেক টাকা। আমি পরিচালক সমিতিতে সেখান থেকে ৫৬ হাজার ফি জমা দিয়ে সদস্য পদ নিলাম। এখন আপনারা বলেন- টাকাটা কার? আমার নাকি অনন্ত ভাইয়ের? আমি সারা জীবন কৃতজ্ঞতা জানাই অনন্ত ভাইকে আমাকে তার সিনেমায় প্রথম পরিচালক হিসেবে সুযোগ দেওয়ার জন্য।’

অনন্ত জলিলের সঙ্গে দ্বন্দ্ব নিয়ে তিনি লিখেছেন: ‘আমার সঙ্গে প্রথম ঝামেলা শুরু হয় মুম্বাইয়ের হিরোইন স্নেহাকে নেওয়ার পর থেকে। অনন্ত ভাইয়ের সাথে বর্ষা ম্যাডামের সম্পর্ক খারাপ যাচ্ছিল। অনন্ত ভাই বাইরের হিরোইনকে নিয়ে কাজ করবেন, বর্ষা করতে দেবেন না। ফাইনালি তাদের সম্পর্ক ঠিক হলো, আমি ভিলেন হয়ে গেলাম।’

টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রসঙ্গে অনন্য মামুন লিখেছেন: ‘আমি নাকি ‘মোস্ট ওয়েলকাম’ সিনেমার টাকা মেরে উত্তরাতে ৬ তলা বাড়ি বানিয়েছি। এক দিন সরাসরি অনন্ত ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম ভাই উত্তরাতে ৬ তলা বাড়ি বানাতে কত টাকা লাগে আপনি ভালো করেই জানেন। মোস্ট ওয়েলকাম সিনেমার বাজেট ৩ কোটি ২ লাখ টাকা। আমি সব টাকা মেরে দিলেও কি জায়গা কিনে উত্তরাতে বাড়ি বানানো সম্ভব? তিনি জবাব দিতে পারেন নাই। কারণ উনি জানতেন উনার অফিসে কাউকে সরাসরি টাকা দেয়া হয় না, সব খরচ তার একাউন্ট দেখে।’

অনন্ত জলিল তার বাবা-মাকে জড়িয়ে গালি দেয় বলে অভিযোগ করেন মামুন। এরপর তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। মামুনের ভাষায়, ‘ঐ দিন চলে এসেছি। আপনার পাশের লোকজন টাকার জন্য আপনাকে হুজুর হুজুর করতে পারে আমি না। আপনার ব্যক্তিগত জীবনের গল্পগুলো না বলি, কারণ আমি আপনাকে সম্মান করি। মানুষকে সম্মান করা পারিবারিক শিক্ষা।’

এবারও পশু কোরবানি দিলেন বিদ্যা সিনহা মিম

এবার ঈদে তিনটি সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। দর্শকদের সবগুলো সিনেমা দেখার আহ্বান জানিয়েছেন মামুন। পরিশেষে তিনি লেখেন, ‘এবার ঈদে তিনটা সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। সবগুলোই সিনেমা। কোনটা ভালো কোনটা খারাপ এটা বলার জন্য পাবলিক আছে। আপনি দেশের সিআইপি, আপনার ব্যবহার দেখে আমরা শিখবো, ভবিষ্যৎ-এ সিআইপি হবার স্বপ্ন দেখবো, দয়া করে সেই জায়গাটা নষ্ট করবেন না।’

সূত্র : রাইজিংবিডি