ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ৯ সেপ্টেম্বর সহ-সভাপতি (ভিপি) হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েম।
এবার ২৮টি পদের জন্য ৪৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ডাকসুর ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন ভোটারের মধ্যে সাদিক কায়েম ১৪ হাজার ৪২ ভোট পেয়ে জয়ী হন। এছাড়া ডাকসুর অন্যান্য পদে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্রার্থীরা প্রাধান্য পেয়েছেন, যা ক্যাম্পাসে তাদের প্রভাবকে আরও দৃঢ় করেছে।
ফলাফল ঘোষণার পর সাদিক কায়েম বলেন, যে মতের হোক না কেন, সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করবেন। তিনি শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশাকে নিজের প্রত্যাশা হিসেবে মনে করেন এবং ক্যাম্পাসকে ‘স্বপ্নের ক্যাম্পাস’ হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেন।
সাদিক কায়েমের রাজনৈতিক পরিচয় দীর্ঘ সময়ের। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সামনের সারিতে ছিলেন। পাশাপাশি তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র সংসদের সাবেক সভাপতি, হিল সোসাইটি ও অন্যান্য যুব সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার সক্রিয় উপস্থিতি এবং গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকে ছাত্র রাজনীতির সংস্কারের জন্য দাবি জানানোর ঘটনাও শিক্ষার্থীদের মধ্যে তাকে জনপ্রিয় করেছে।
ছাত্রশিবিরের নেতারা জানান, সাদিক কায়েম ব্যক্তিগত পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের খোঁজ রাখা, সংকটে পাশে থাকা ও সহযোগিতা করার মাধ্যমে ক্যাম্পাসে তাদের মন জয় করেছেন। নির্বাচনে বিভিন্ন প্যানেলের ভোট বিভক্ত হলেও শিবিরের ভোট সেভাবে ভাগ হয়নি, যা তার জয়কে শক্তিশালী করেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জুলাই–আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রশিবির মাঠ পর্যায়ের নেতৃত্বে সক্রিয় ছিল, যা শিক্ষার্থীদের কাছে তাদের শক্তিশালী ইমেজ তৈরি করেছে। পাশাপাশি মেয়েদের হলগুলোতে তার আচরণ, সহযোগিতা এবং নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি সম্মানজনক মনোভাবও ভোটে প্রাধান্য পেয়েছে।
ছাত্রদলের বিরোধী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দুর্নীতি ও নানা অভিযোগের প্রভাবও শিক্ষার্থীদের ভোটে ছাত্রশিবিরের পক্ষে প্রভাব ফেলেছে। ২০০৯ সালের পর ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরের রাজনীতি প্রায় নিঃশেষ হয়েছিল, তবে ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর তারা প্রকাশ্যে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এর ফলে সাদিক কায়েমকে ভোট দেওয়ার পেছনে শিক্ষার্থীদের আস্থা ও সমর্থন মূল ভূমিকা রেখেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।