জুমবাংলা ডেস্ক : বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি বর্তমানে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কারাগারের কনডেম সেলে বন্দি রয়েছেন। তবে কারাগারে তিনি ভালো নেই বলে দাবি করেছেন তার বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর।
কারাগারে মিন্নি কেমন আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, শরীরের নানা ধরনের রোগ বাসা বেঁধেছে। এছাড়াও কারাগারে দেওয়া খাবার সে খেতে পারে না। প্রিজন ক্যান্টিন থেকে খাবার কিনে খেতে গেলেও অনেক টাকা লাগে। ওখানে একটি ডিমের দাম ৮০ টাকা, এক টুকরো পোল্ট্রি মুরগির মাংশের দাম দেড়শ টাকা, একটি ডাবের দাম দেড়শ টাকা। কারাগারে যার টাকা আছে সেই ভালো থাকতে পারে।
তিনি আরো জানান, কারাগার থেকে জামিনে বের হওয়া একজনের কাছ থেকে আমি শুনেছি কারাগারে আমার মেয়েকে দিয়ে ড্রেন পরিষ্কার করানো হয়। এছাড়াও তাকে দিয়ে নানা ধরনের কাজ করানো হয়। যদি অন্য কেউ অপরাধ করে তবে সেই অভিযোগ আমার মেয়ের উপরে চাপিয়ে তাকে শাস্তি দেওয়া হয়। অল্প বয়স্ক মানুষ দীর্ঘদিন কারাগারে থাকলে তার মানসিক অবস্থা কেমন হয়? আমি ঢাকায় এসে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানাব।’
তবে মিন্নির বাবার এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কাশিমপুর মহিলা কারাগারের জেল সুপার মো. ওবায়দুর রহমান। তিনি জানান, ‘কারাগারে মিন্নি ভালো আছেন। তিনি একজন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তাকে দিয়ে কোনো কাজ করানোর সুযোগ নেই। আর কারাগারের প্রিজন ক্যান্টিনে একটি ডিমের দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা। একশ্রেণির দুষ্টুলোক কারাগারের বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনের সড়কে রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম করে নয়ন বন্ডের গড়া কিশোর গ্যাং ‘বন্ড বাহিনী’। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ওই বছরের ২ জুলাই এ ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা যান। হত্যাকাণ্ডের ২০ দিন পর ১৬ জুলাই মিন্নিকে তার বাবার বাসা থেকে বরগুনা পুলিশ লাইনে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ হত্যায় তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে মনে হওয়ায় ওইদিন রাতেই মিন্নিকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
পরবর্তীতে একই বছরের ২৯ আগস্ট হাইকোর্ট মিন্নিকে জামিন দেন। এরপর একই বছরের ১ সেপ্টেম্বর রিফাত হত্যা মামলায় ২৪ জনকে আসামি করে দুটি ভাগে বিভক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। এর মধ্যে ১০ জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং ১৪ জনকে অপ্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। পরে সাক্ষ্য গ্রহণ, যুক্তিতর্ক শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে ছয়জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড, চারজনকে পাঁচ বছর এবং একজনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। বাকি তিনজনকে খালাস দেয়া হয়।
এ মামলায় ফাঁসির দণ্ড পান মো. রাকিবুল হাসান ওরফে রিফাত ফরাজী (২৪), আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন (২২), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (২০), রেজোয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২৩), মো. হাসান (২০) ও আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি (২০)।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।