আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বনের পশুপাখি সংরক্ষণের জন্য বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশই কোনো না কোনো পরিকল্পনা করে থাকে। তৈরি করা হয় জাতীয় উদ্যান। বিশেষত বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী বাঁচানোই মূল লক্ষ্য। নিয়ম করে বন্ধ করে দেওয়া হয় শিকারও। বাস্তুতন্ত্র রক্ষা করতে করা হয় একাধিক পদক্ষেপ।
কিন্তু সেখানেই উল্টো পথে হাঁটছে আফ্রিকার পূর্ব দিকের ছোট্ট দেশ কেনিয়া। তারা এবার লক্ষ লক্ষ পক্ষীনিধনের পরিকল্পনা করেছে। এমনকি নির্দিষ্ট সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কেনিয়া বলতে প্রথমেই মাথায় আসে মাসাইমারা জঙ্গলের কথা। সেখানে বিভিন্ন ধরনের পশু এবং পাখি থাকে। সেই জগতে অবাধে ঘুরে বেড়ায় তারা। শুধু মাসাইমারা নয়, এমন আরও কয়েকটি জঙ্গল রয়েছে কেনিয়ায়।
আর এসব প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ভিড় করেন কেনিয়ায়। কেনিয়ার মানুষদের একটা বড় অংশের জীবিকা এই পর্যটনকে কেন্দ্র করে। তাই পর্যটন শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে নানান পদক্ষেপ করে কেনিয়া সরকার। সেই পদক্ষেপের অংশ হিসাবেই ভারতীয় কাক মারার পরিকল্পনা করেছে তারা।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা, আগামী ছয় মাসের মধ্যে ১০ লক্ষ ভারতীয় কাক মারবে কেনিয়া সরকার। সে জন্য বিশেষ পন্থা অবলম্বন করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। তবে কেনিয়া থেকে ভারতের দূরত্ব অনেকটাই। সেখানে কী ভাবে ভারতীয় কাক গেল?
খবরে বলা হয়, ভারত থেকে উড়ে কেনিয়া যায়নি কোনো কাকই। ভারতের মতো কেনিয়াও ছিল ব্রিটিশদের উপনিবেশ। তাই ভারত এবং কেনিয়ার মধ্যে বিভিন্ন সময়ে জাহাজ আসা-যাওয়া করত। সেই জাহাজে চেপেই ভারত থেকে কাক গিয়ে পৌঁছায় কেনিয়ায়।
কেনিয়ার উপকূলবর্তী এলাকায় মূলত এই সব কাক বাস শুরু করে। সেখানেই বংশবিস্তার করে। এখন কেনিয়ায় লক্ষ লক্ষ ভারতীয় কাক রয়েছে। সেখানকার বাস্তুতন্ত্রের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে তারা। সেই কাকই এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কেনিয়া সরকারের। উপকূলবর্তী এলাকায় যে সব ছোট ছোট পাখি থাকে, তাদের ওপর হামলা করে কাকগুলো। ছোট ছোট পাখিদের খাদ্যবস্তুতে পরিণত করে তারা।
শুধু তা-ই নয়, সমুদ্র উপকূলে ঘুরতে আসা পর্যটকদের নানাভাবে বিরক্ত করে কাকগুলো। তাই ভারতীয় কাক মেরে ফেলতে চাইছে কেনিয়া সরকার। কাক মারতে বিষ প্রয়োগ করবে কেনিয়া প্রশাসন। বিভিন্ন হোটেল বা খাবারের দোকানে স্টারলাইসাইড নামক একটি বিষ সরবরাহ করা হবে। সেই বিষ মাংস বা খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে কাককে দিলে তা খাওয়া মাত্রই মরে যাবে পাখিগুলো।
তবে এই বিষের একটা গুণ হলো, মৃত কাকের শরীর যদি কোনো পশু-পাখি ভক্ষণ করে, তবে তাদের মৃত্যু হবে না। এই ভাবেই লাখ লাখ কাক মেরে পর্যটন শিল্প বাঁচাতে পরিকল্পনা করছে কেনিয়া সরকার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।