জুম-বাংলা ডেস্ক : মহাবিশ্বের আয়ু একদিন ফুরিয়ে যাবে। মহাপ্রলয় বা কেয়ামতের মাধ্যমে পৃথিবী, আকাশ সব ধ্বংস হয়ে যাবে। তবে তা কবে সংঘটিত হবে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। পবিত্র কোরআনে এ সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে, কেয়ামতের জ্ঞান কেবল তাঁরই জানা। তাঁর জ্ঞানের বাইরে কোনো ফল আবরণমুক্ত হয় না এবং কোনো নারী সন্তান প্রসব ও গর্ভধারণ করে না। (সুরা হা-মিম-সাজদা: ৪৭)
আরও বর্ণিত হয়েছে, ‘তারা শুধু এই অপেক্ষাই করছে যে, কেয়ামত অকস্মাৎ তাদের কাছে এসে পড়ুক। বস্তুত কেয়ামতের লক্ষণসমূহ তো এসেই পড়েছে। সুতরাং কেয়ামত এসে পড়লে তারা উপদেশ গ্রহণ করবে কেমন করে?।’ (সুরা মুহাম্মদ: ১৮)
ইসলামের দৃষ্টিতে কেয়ামতের সময় যত ঘনিয়ে আসবে ততই কেয়ামতের ছোট-বড় আলামতসমূহ প্রকাশ পেতে থাকবে। উল্লেখযোগ্য একটি আলামত হলো- অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, তীব্র ঠান্ডা ও দাবদাহসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়ে যাবে। মরু অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টি হবে। ফলে বন্যার কবলে পড়ে বিপর্যস্ত হবে আরব অঞ্চল। পানির ছোঁয়ায় শুষ্ক মরুভূমি সবুজ অরণ্যে পরিণত হবে।
আবু হুরায়রাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘কেয়ামত অনুষ্ঠিত হবে না যে পর্যন্ত সম্পদের প্রাচুর্য না আসবে। এমনকি কোনো ব্যক্তি সম্পদের জাকাত নিয়ে ঘুরবে কিন্তু নেয়ার মতো লোক পাবে না। আরবের মাঠ ঘাট তখন চারণভূমি ও নদী-নালায় পরিণত হবে।’ (সহিহ মুসলিম: ২২২৯)
হাদিস বিশারদদের মতে, এই হাদিস দ্বারা শুধু বর্তমান সৌদি রাষ্ট্র উদ্দেশ্য নয়। কোরআন-হাদিসের ভাষায় আরব বলতে গোটা আরব উপদ্বীপকে বোঝায়। এই উপদ্বীপে রয়েছে বর্তমান সৌদি আরব, কুয়েত, বাহরাইন, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইয়েমেন ও ওমান।
কেয়ামতের বড় আলামত
হাদিসে বর্ণিত কেয়ামতের বড় আলামতগুলো হলো- ইমাম মাহদির আত্মপ্রকাশ, মিথ্যুক দাজ্জালের আবির্ভাব, ঈসা (আ.) এর আগমন, ইয়াজুজ-মাজুজের আত্মপ্রকাশ, পূর্ব-পশ্চিম ও আরব অঞ্চলে বড় ধরণের তিনটি ভূমিধ্বস, বিশাল ধোঁয়া, পশ্চিম গগণে সূর্যোদয়, অদ্ভুত জন্তুর প্রকাশ, ইয়েমেন থেকে আগুন বের হয়ে মানুষকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি। (সহিহ জামে আস-সগির: ৭৭৫২)
ছোট আলামত
কেয়ামতের ছোট আলামতগুলোর মধ্যে রয়েছে, প্রচুর ধন-সম্পদ হওয়া এমনিক জাকাত খাওয়ার লোকও না-থাকা, বিভিন্ন গোলযোগ (ফিতনা) সৃষ্টি হওয়া, আমানতদারিতা না-থাকা, ইলম উঠিয়ে নেওয়া ও অজ্ঞতা বিস্তার লাভ করা, সুদ-ব্যভিচার-মদ-বাদ্যযন্ত্রের ব্যাপকতা, রাখাল শ্রেণির অট্টালিকা নির্মাণ, কৃতদাসী কর্তৃক স্বীয় মনিবকে প্রসব, মা-বাবার অবাধ্যতা, হত্যা, বেশি ভূমিকম্প হওয়া, মানুষের আকৃতি রূপান্তর, আকাশ থেকে পাথর পড়া, মুমিনের স্বপ্ন সত্য হওয়া, মিথ্যা সাক্ষ্য বেড়ে যাওয়া, নারীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া, আরব ভূখণ্ড তৃণভূমি ও নদনদীতে ভরে যাওয়া, ফোরাত (ইউফ্রেটিস) নদীতে স্বর্ণের পাহাড় প্রকাশ পাওয়া, হিংস্র জীবজন্তু ও জড় পদার্থ মানুষের সঙ্গে কথা বলা ইত্যাদি। ( বুখাররি: ৭১১৫, ৫৬৭১; মুসলিম, ১৫৭; মেশকাত: ৫৪১০)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।