বিশ্বজিৎ দাস বিজয় : কম দামে গরুর মাংস বিক্রি করে বাজারে আলোড়ন সৃষ্টি করা খলিলুর রহমান মাংস বিক্রি ছেড়ে দিয়েছেন। তবে এরপরই ক্রেতা সাধারণ ও নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে, তিনি আবারও মাংস ব্যবসায় ফিরবেন কিনা!
গত বছরের শেষদিকে কম দামে মাংস বিক্রি করে আলোচনায় আসেন খলিল। সে সময় তার নেয়া এই উদ্যোগের পর বাধ্য হয়ে গরুর মাংসের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় মাংস ব্যবসায়ী সমিতি।
বাজারে ফের গরুর মাংসের দাম বাড়তে শুরু করলে রোজার প্রথম দিন থেকে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫৯৫ টাকায় বিক্রির ঘোষণা দেন তিনি। এতে তার দোকান ‘খলিল গোস্ত বিতানে’ ক্রেতার ঢল নামে।
এরপর ১০ রোজা না যেতেই প্রতি কেজি মাংসের দাম ১০০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন এই মাংস ব্যবসায়ী। কিন্তু সেখান থেকে সরে এসে আবারও ৫৯৫ টাকায় মাংস বিক্রির ঘোষণা দেন খলিল।
তবে গত ২৪ মার্চ গণমাধ্যমে খলিল বলেছিলেন, যাদের জন্য এতকিছু করলাম, তারাই আজ পাশে নেই। আগামী ২০ রমজানের পর থেকে আর মাংস ব্যবসা করব না।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম এতদিন আমার কাছে কাছে থাকলেও এখন আর নেই। সরকারও আর আমার সঙ্গে নেই। ফলে আমি আর মাংস ব্যবসাই করবো না। কথা দিচ্ছি, আগামী ২০ রমজানের পর আর খলিল মাংস বিতান থাকবে না। জীবনেও আর মাংস ব্যবসা করবো না।’
যেই কথা সেই কাজ। ২০ রমজান অর্থাৎ গত ৩১ মার্চ থেকে মাংস বিক্রি ছেড়ে দিয়েছেন খলিল। দোকান পরিচালনা করছে তার কর্মচারীরা।
খলিল মাংস বিক্রি ছেড়ে দেয়ার পর থেকেই ক্রেতা সাধারণ ও নানা মহলে প্রশ্ন উঠছে, আবারও মাংস বিক্রির পেশায় ফিরবেন কিনা তিনি।
কেউ কেউ বলছেন, সবই খলিলের সাজানো নাটক। এটি তার ব্যবসায়িক কৌশল। নিজে সরাসরি না থেকেও কর্মচারীদেরকে দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে মুনাফা গুনবেন।
আবার অনেকে বলছেন, সাধারণ ক্রেতাদের কথা ভেবে ভালো উদ্যোগ নিয়েছিলেন খলিল। তার এভাবে ব্যবসা ছেড়ে দেয়া উচিত হয়নি। খলিলের ব্যবসায় ফিরে আসা উচিত।
তবে মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) খলিল বলেন, আর কখনোই মাংস ব্যবসায় ফিরব না। এখন থেকে দোকানের লাভ-লস সব পরিচালনা করবে দোকানের কর্মচারীরা। তাদেরকে ব্যবসা বুঝিয়ে দিয়েছি।
কেন মাংস ব্যবসা ছেড়ে দিচ্ছেন জানতে চাইলে খলিল আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, কোনো কারণ নেই। এমনিতেই ব্যবসা ছেড়ে দিচ্ছি!
এদিকে, সম্প্রতি রাজধানীর আলমগীর নামে এক মাংস ব্যবসায়ীর সঙ্গে খলিলের একটি কথোপকথন ভাইরাল হয়েছে। সেখানে খলিলকে বলতে শোনা যায়, ‘বাংলাদেশে একটা মাংস ব্যবসায়ী যেটা হলো খলিল। আমার যে আর্মস-গান, বাংলাদেশের তিনটা ব্যক্তির কাছে আছে। যেটা সবচেয়ে দামি আর্মস। একে-৪৭ মন্ত্রী-এমপির কাছেও নেই। আমার দোকানের একটা স্টাফ দুই কোটি টাকার মালিক। মাংস ব্যবসায়ীরা অনেক শক্তিশালী। তারা অনেক ট্যাকার মালিক। আমার যদি কিছু না থাকত ওরা যে কত দিক দিয়া আমার ক্ষতি করার চেষ্টা করত। কত দোষ খোঁজার চেষ্টা করতাছে, পাইতাছে না। এরা জানে, আমার সামনে এলে একটাও বাইচ্চা থাকতে পারবে না। আপনাদের গর্ব আমি একটা মাংস ব্যবসায়ী খলিল।’
ভাইরাল হওয়া কল রেকর্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে খলিল বলেন, এসব বিষয়ে আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করবেন না। আমি এ ব্যাপারে কোনো কথা বলতে চাই না।
আর মাংস ব্যবাসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মুর্তজা বলেন, ‘খলিল একজন বাটপার। মাংস ব্যবসায়ী নামের কলঙ্ক। বিক্রি ছেড়ে দেয়া তার ব্যবসা পরিচালনার কৌশলমাত্র। নিজে না থেকেও কর্মচারীদের দিয়ে দোকান ঠিকই খোলা রেখেছে। তাহলে সে ব্যবসা ছেড়ে দিল কিভাবে? সূত্র : সময় সংবাদ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।