লাইফস্টাইল ডেস্ক : ঈদকে কেন্দ্র করে আবারও বেড়েছে গরুর মাংসের দাম। খুলনায় প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকায়। খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত দাম না মেনে মাংসের দাম বাড়িয়ে চলেছেন বিক্রেতারা।
খুলনা সিটি করপোরেশন-কেসিসির নির্দেশনা উপেক্ষা করে মাংসের দাম বাড়ানোর কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। দাম বাড়ার ফলে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র পরিবারের লোকজন ইচ্ছা থাকলেও প্রয়োজন অনুযায়ী মাংস কিনতে পারছেন না। নিতে পারছেন না গরুর মাংসের স্বাদ। ফলে তাদের অনেকেরই ঈদ আনন্দ ফিকে হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গত বছর ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে খুলনায় প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫৫০ টাকা থেকে ৫৮০ টাকায় বিক্রি হয়। এর কিছুদিন পরে ৬০০ টাকা করে বিক্রি করা হয়। ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে পশু সংকটের অজুহাত দেখিয়ে বিক্রেতারা ৬২০ টাকায় বিক্রি করে। এরপর রমজান মাসে কেসিসি মাংসের দাম নির্ধারণ করে দেয় ৬০০ টাকায়। তবে কেসিসির নির্দেশনা উপেক্ষা করে ১ মে থেকে খুলনার ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭’শ টাকায় বিক্রি করছেন।
খুলনার কসাই মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি মো. আবু বক্কার সরদার বলেন, ‘খুলনা জেলার হাটগুলোতে গরু সরবরাহ কমে গেছে। গত ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রতিবেশী দেশ থেকে পশু আসছে না। খামারীরা আগামী ঈদুল আজহাকে টার্গেট করে সংরক্ষণ করে রাখছে। হাটগুলোতে দালালদের প্রভাব রয়েছে। তাদের কারণে পশুর দাম করা খুব কঠিন হয়ে পড়েছে।’
ময়লাপোতা মোড়ের কসাই মো. রাজু বলেন, ‘পশু আনতে ঘাটে ঘাটে হয়রানির শিকার হতে হয়। প্রতিটি পয়েন্টে পুলিশকে চাঁদা দিতে হয়। সবমিলিয়ে একটি গরু আনতে ১২০০ টাকা খরচ হয়। তাছাড়া গো খাদ্যের দাম বেড়েছে। কোরবানিকে সামনে রেখে মালিকরা গরু হাটে আনতে চায়না। সেখানে পশুর সংখ্যা থেকে ব্যবসায়ীর উপস্থিতি বেশি হওয়ার গরুর দাম বেড়ে যায়।’
আযম খান কমার্স কলেজ মোড়ের কসাই মো. সেলিম বলেন, ‘ঢাকার অনেক ব্যবসায়ী খুলনার হাটগুলোতে হানা দিয়েছে। তাদের কারণে মূলত গরুর দাম বেড়েছে। এ কারণে কসাই সমিতির সিদ্ধান্ত মোতাবেক মাংসের দাম ৭০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।’
এদিকে, ক্রেতা মো. শাহীন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সংশ্লিষ্টদের গাফিলতির কারণে একের পর এক নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে চলেছে। অনেকেই ঈদে একটু ভালমন্দ খাওয়ার চেষ্টা করে। মধ্যবিত্ত যাদের টাকা নেই তাদের কি উপায় হবে? দাম কমানোর জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করছি।’
ক্রেতা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, তিনি দাম বাড়ার খবর পেয়ে ১০ কেজি মাংস কিনেছেন। তিনি বলেন, মাংসের দাম যদি আরও বেড়ে যায়, সেই আশঙ্কা থেকেই তাই বেশি নেওয়া।
মাংসের দাম বাড়া প্রসঙ্গে ভোক্তা অধিকার খুলনা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শিকদার শাহিনুর আলম বলেন, এ মাসের শুরুতে কেসিসি মাংসের দাম ৬’শ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। ক্রেতাদের কাছ থেকে বেশি দাম নেওয়ায় গত সপ্তাহে নগরীর ময়লাপোতা মোড়ের কয়েকটি মাংসের দোকানে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হয়।
প্রসঙ্গত, খুলনা মহানগরীতে মাংস ও মুরগির দাম স্থিতিশীল রাখতে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে ১ এপ্রিল কেসিসি মেয়রের মতবিনিময় সভা হয়। সেখানে মহানগরীতে গরুর মাংসের মূল্য প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ৬’শ টাকা এবং খাসির মাংসের মূল্য সর্বোচ্চ ৮৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। যাতে মাংস ব্যবসায়ীরা সম্মত ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।