বিনোদন ডেস্ক : বার্ন্ড ওয়েইডং-এর জন্ম ১ মার্চ ১৯৬৩ সালে। এই নামে তাকে অনেকে না চিনলেও নিশ্চয়ই থমাস অ্যান্ডার্স নাম শুনলেই থমকে যাবেন। তাদের কানে বেজে উঠবে ‘ইউ আর মাই হার্ট, ইউ আর মাই সোল’ কিংবা ‘শেরি শেরি লেডি’ গানগুলো। এ যেনো এক নস্টালজিয়া। স্মৃতিকাতরতা। মোহময় হারানো অতীত।
অতীত মধুর হলে সেই অতীত ফিরে ফিরে আসে। ফিরে এসেছে মডার্ন টকিংও। থমাস যে ব্যান্ড দল দিয়ে নাম করেছিলেন বিশ্বময়। সাম্প্রতিক সময়ে ইনস্টাগ্রাম রিলসহ নানা সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে তাদের সেই চিরচেনা গানের টিউন ‘শেরি শেরি লেডি।’ ডিজিটাল যুগও যেনো এই গানের প্রাপ্য বুঝিয়ে দিয়েছে। জার্মান পপ জুটির সেই গাওয়া গান নতুন করে মন কাড়ছে এ জন্মের সবার।
থমাসের সেই গানগুলোর সুরে বলিউডেও অনেক গানের সুর করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ গান ছিলো মিঠুন চক্রবর্তীর সিনেমায়। যা এখনো মানুষ মনের অজান্তে গুনগুনিয়ে গায়।
থমাস অ্যান্ডার্স একজন জার্মান গায়ক, গীতিকার এবং রেকর্ড প্রযোজক। তিনি পপ জুটি মডার্ন টকিং-এর কণ্ঠশিল্পী হিসেবে সর্বাধিক পরিচিতি পান। স্কুলে থাকার সময়ই তার মাথায় গানের ভূত চাপে। শুরু হয় চেষ্টা, তবে সফলতা মিলছিলো না সহজে। ১৯৮৩ সাল তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। ডিটার বোহলেনের সাথে ইউরোডিস্কো জুটি মডার্ন টকিং গঠন করেন।
‘ইউ আর মাই হার্ট, ইউ আর মাই সোল’ গান দিয়ে নজর কাড়েন অ্যান্ডার্স-বোহলেন জুটি। বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এটি টানা ছয় সপ্তাহ ধরে চার্টের শীর্ষে ছিল। এরপর তারা ‘ইউ ক্যান উইন ইফ ইউ ওয়ান্ট’, ‘শেরি, শেরি লেডি’, ‘ব্রাদার লুই’, ‘আটলান্টিস ইজ কলিং (এস.ও.এস. ফর লাভ)’, ‘জেরোনিমো’স ক্যাডিলাক’ এবং ‘জেট এয়ারলাইনার’ শিরোনামের বেশ কয়েকটি হিট গান উপহার দেন।
১৯৮৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে তাদের প্রথম অ্যালবাম ‘দ্য ফার্স্ট অ্যালবাম’ প্রকাশিত হয়। শুধু জার্মানিতেই এই অ্যালবামের আড়াই লাখ কপি বিক্রি হয়। ১৯৮৭ সালে অ্যান্ডার্স-বোহলেন জুটি ভাঙে। ১৯৯৮ সালে তারা আবারও একত্রিত হন। ‘ইউ আর নট অ্যালোন’, ‘সেক্সি, সেক্সি লাভার’, ‘নো ফেস, নো নেম, নো নাম্বার’, ‘রেডি ফর দ্য ভিক্টরি’ এবং ‘টিভি মেকস দ্য সুপারস্টার’-এর মতো বেশ কয়েকটি নতুন গান তৈরি করেন। তাদের অনেক অ্যালবাম বিশ্বজুড়ে মিলিয়ন মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়।
তবে ২০০৩ সালে আবারও ভাঙন। সে বছর রোস্টকে একটি কনসার্টের আগে একটি গুরুতর ঝগড়ার পর বোহলেন মঞ্চে সরাসরি ব্যান্ডের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। এই ঘোষণা অ্যান্ডার্স এবং জনসাধারণকে হতবাক করে দেয়। ২০০৩ সালে তার বই হিন্টার ডেন কুলিসেনে বোহলেন তাদের সঙ্গীতে অ্যান্ডার্সের মতামতকে আরও প্রান্তিক করে তোলেন। তার বিরুদ্ধে অর্থ চুরি করার অভিযোগ আনেন। পরবর্তীতে অ্যান্ডার্স বোহলেনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন। তাদের শেষ প্রকাশিত অ্যালবামের নামটি ছিলো দ্য ফাইনাল অ্যালবাম।
এরপর শুরু হয় অ্যান্ডার্সের একক ক্যারিয়ার। তৃতীয় প্রচেষ্টাতে তিনি সফল। যদিও তা মডার্ন টকিং সময়কার জনপ্রিয়তাকে টপকে যেতে পারেনি। মডার্ন টকিং ভেঙে যাওয়ার পরপরই অ্যান্ডার্স তার অষ্টম একক অ্যালবাম ‘পপ এফের্স্ট দিস টাইম’ রেকর্ডিং শুরু করেন। যা ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়েছিল। একক ক্যারিয়ারে তার পূর্ববর্তী প্রচেষ্টার বিপরীতে এই অ্যালবামটি বেশ সফল প্রমাণিত হয়েছিল। জার্মানিতে ১৪ নম্বর স্থানে উঠেছিল। অ্যালবামের তিনটি একক ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট গার্ল’, ‘কিং অব লাভ’ এবং ‘টুনাইট ইজ দ্য নাইট’ যথাক্রমে ১৭, ৩৭ এবং ৬০ নম্বরে চার্ট করেছিল।
কক্সবাজারের চকরিয়া থানার ওসিকে প্রত্যাহারের মৌখিক নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
মডার্ন টকিং-এর সাফল্যের সাথে তার একক ক্যারিয়ারের তুলনা করতে না পারলেও অ্যান্ডার্সকে পূর্ব ইউরোপে একজন সঙ্গীতের আইকন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ২০০৬ সালে কিয়েভের তারাস শেভচেঙ্কো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ‘একটি প্রজন্মের সঙ্গীতের স্বাদ গঠনের’ জন্য সম্মানসূচক অধ্যাপক হিসেবে মনোনীত করে। তিনি রাশিয়ায় সর্বকালের সর্বাধিক বিক্রিত বিদেশি শিল্পী হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।
২০১৭ সালের এপ্রিলে অ্যান্ডার্স প্রায় ৩৫ বছরের মধ্যে তার প্রথম জার্মান ভাষার গান প্রকাশ করেন।
নানা বাঁক বদলের সাক্ষী হওয়া অ্যান্ডার্স এখনো গেয়ে চলেছেন। গানের ফেরিওয়ালা হয়ে ঘুরছেন দেশ থেকে দেশান্তরে। তার গাওয়া পুরনো গানগুলো আধুনিক সময়ে ফিরছে মধুর নস্টালজিয়া হয়ে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।