বিনোদন ডেস্ক : গান গাইতে গাইতেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন বলিউডের বিখ্যাত গায়ক কৃষ্ণকুমার কুনাথ, ‘কে কে’ নামেই যিনি ভক্তকূলের কাছে পরিচিত ছিলেন। তার বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর খবর বলছে, কলকাতার নজরুল মঞ্চে উল্টোডাঙার গুরুদাস মহাবিদ্যালয়ের মঞ্চে গান গাইছিলেন কে কে। হঠাৎ অসুস্থবোধ করলে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানান, ততক্ষণে পৃথিবীর মায়া কাটিয়েছেন তিনি।
কে কে’র জন্ম ও বেড়ে ওঠা দিল্লিতে। ১৯৯৯ সালে ‘পাল’ অ্যালবাম দিয়ে যাত্রা শুরু করেন তিনি। প্রথম অ্যালবামের ‘হাম রাহে ইয়া না রাহে কাল’ গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। ওই বছরই হাম দিল দে চুকে সানাম সিনেমার ‘তাড়াপ তাড়াপ’ গানটি তাকে রাতারাতি খ্যাতি এনে দেয়। এরপর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। জারা সা দিলমে, তুহি মেরি সাব হে, ক্যায়া মুঝে পেয়ার হে, আলবিদা, পিয়া আয়ে না’র মতো একের পর এক সব গান দিয়ে মাতিয়ে রেখেছিলেন বলিউডকে।
কুমার শানু, উদিত নারায়ণরা যখন বলিউড কাঁপাচ্ছেন, সেই সময় কে কে’র উত্থানের পিছনে আসলে মূল ফ্যাক্টর ছিল তার গলার তারুণ্য ও ব্যতিক্রমী মেজাজ। সেটাই তাকে আলাদা করে চিনিয়ে দিয়েছিল। আর নতুন প্রজন্ম সেই কণ্ঠস্বরেই খুঁজে পেয়েছিল নিজেদের সময়ের স্পন্দন। ‘ইয়ারো’ যেমন বলে বন্ধুত্বের কথা, তেমনই ‘তু হি মেরি শব হ্যায়’ গানে প্রেমের সোচ্চার ঘোষণা। আবার ‘সচ কহে রাহা হ্যায়’ গানে প্রেম ভাঙার যন্ত্রণা। ‘তড়প তড়প কে’ গানে সেই ভগ্ন হৃদয়ের আরও মর্মান্তিক এক ট্র্যাজেডির সুর। কৈশোর, তারুণ্যের প্রায় সব আবেগই ধরা পড়েছিল তার গানে। বন্ধুদের সঙ্গে দল বেঁধে হোক কিংবা একলা ছাদের নির্জনতায়, সেই সব গানের আবেদন রয়ে গিয়েছে অমোঘ মাইলফলক হয়ে।
বলিউডে প্লেব্যাকের সুযোগ মোটেই সহজে আসেনি। হিন্দি সিনেমায় গান গাওয়ার আগে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বিজ্ঞাপনের জিঙ্গল গেয়েছেন। একসময় মার্কেটিংয়ের কাজও সামলেছেন। প্লেব্যাকের প্রথম সুযোগ এ আর রহমানের সঙ্গে। ‘ছোড় আয়ে হাম উও গঁলিয়া’। সেখানে অবশ্য অনেকের সঙ্গে গলা মেলানো।
ভক্তরা যেন এখনও কাটিয়েই উঠতে পারছেন না এই মৃত্যুশোক। প্রেম-ভালোবাসা-বিরহ মনের ভিতরে ঢুকিয়ে দেওয়া মানুষটাই আর নেই। কে কে চলে গিয়েছেন। যেতে যেতে তার গানটি গিয়েছেন ফেলে। সেই গান হারাবে না।
কে কে’র গাওয়া অন্যতম হিট ১০টি গান :
১. ‘তড়প তড়প কে’, ছবি: হাম দিল দে চুকে সনম
২. ‘আঁখো মে তেরি’, ছবি: ওম শান্তি ওম
৩. ‘পেয়ার কা পল’, পল অ্যালবাম থেকে
৪. ‘সাচ কে রাহা হ্যায় দিওয়ানা’, ছবি: রেহনা হ্যায় তেরে দিল মে
৫. ‘কেয়া মুঝে প্যায়ার হ্যায়’, ছবি: ও লমহে
৬. ‘ইয়ারো’, ‘পল’ অ্যালবাম থেকে
৭. ‘জারা সা দিল মে দে জাগা তু’, ছবি: জন্নত
৮. ‘জিন্দেগি দো পল কি’, ছবি: কাইটস
৯. ‘দিল ইবাদত’, ছবি: তুম মিলে
১০. ‘আলবিদা’, ছবি: লাইফ ইন আ মেট্রো
প্রসঙ্গত, মাত্র ৫৩ বছরে মারা গেলেন কে কে। আপাতত তার দেহ ময়নাতদন্ত করা হবে। গায়কের শেষ ছবিতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে কে কে’র কপালে ও ঠোঁটে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মঙ্গলবার রাতে গায়কের শেষ মুহূর্তে ঠিক কী ঘটেছিল? তা খতিয়ে দেখতে ধর্মতলার পাঁচতারা হোটেলের শিফট ম্যানেজারকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। খতিয়ে দেখা হবে হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজও। হোটলের অনান্য কর্মীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ, কথা বলা হবে অনুষ্ঠানের আয়োজক এবং নজরুল মঞ্চের কর্মীদের সঙ্গেও।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।