ভূমধ্যসাগরের তলদেশে বিজ্ঞানীরা একটি বিশেষ ধরনের টেলিস্কোপ স্থাপন করেছেন। এই অত্যাধুনিক টেলিস্কোপ মহাবিশ্বের সবচেয়ে রহস্যময় কণা নিউট্রিনোর খোঁজ করবে। টেলিস্কোপের নাম দেওয়া হয়েছে কিউবিক কিলোমিটার নিউট্রিনো টেলিস্কোপ, সংক্ষেপে কেএমথ্রিনেট (KM3NeT)।
আমাদের চারপাশের এই বিশাল জগৎ গড়ে উঠেছে অসংখ্য কণা দিয়ে। এই কণাগুলোর মধ্যে অন্যতম অদ্ভুত নিউট্রিনো। এরা এত ছোট ও নিষ্ক্রিয় যে প্রতি মুহূর্তে কোটি কোটি নিউট্রিনো আমাদের শরীর ও পৃথিবী ভেদ করে চলে যায়। আমরা তা টেরও পাই না। এ জন্য এদের বলা হয় ‘ভুতুড়ে কণা’।
সাধারণত গ্রাউন্ড টেলিস্কোপ বা ভূপৃষ্ঠে স্থাপিত টেলিস্কোপগুলো মহাকাশ থেকে আসা তরঙ্গ পর্যবেক্ষণ করে। কিন্তু এই নিউট্রিনো টেলিস্কোপ সমুদ্রের গভীরে স্থাপন করার উদ্দেশ্য, এই ভুতুড়ে কণাগুলোকে আরও ভালোভাবে শনাক্ত করা। কেএমথ্রিনেটের সাহায্যে বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটা সুপারনোভা বিস্ফোরণে দুটি নক্ষত্রের সংঘর্ষ থেকে আসা নিউট্রিনো কণা শনাক্ত করতে পারবেন। এমনকি ডার্ক ম্যাটার সম্পর্কে আরও বিস্তারিত ধারণা পেতেও সাহায্য করবে বলে আশা বিজ্ঞানীদের।
কেএমথ্রিনেট টেলিস্কোপটি দুটি অংশে বিভক্ত। প্রতিটি অংশই গোলাকার। দেখতে কাচের বাবলের মতো। এই বাবলগুলোকে উলম্ব তারের সাহায্যে সমুদ্রের তলদেশে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। প্রতিটি তারে প্রায় ৭০০ মিটার লম্বা এই বাবলগুলো একের পর এক লাগানো থাকে। দেখতে সমুদ্র তলের দীর্ঘ মুক্তার মালার মতো।
প্রতিটি বাবলের ভেতরে ৩১টি ফটোমাল্টিপ্লায়ার টিউব রয়েছে। যখন কোনো নিউট্রিনো কণা সমুদ্রের পানির সঙ্গে সংঘর্ষে আসে, তখন এটি একটি আলোর ঝলক তৈরি করে। এই আলো সেন্সর টিউবগুলো শনাক্ত করতে পারে। খুব শিগগিরিই বিজ্ঞানীরা এই টেলিস্কোপ থেকে পাওয়া তথ্য প্রকাশ করবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।