জুমবাংলা ডেস্ক : পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন কেএনএফের (কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট) জন্য তৈরি করা ২০ হাজার ৩০০ পিস ইউনিফর্ম জব্দ করেছে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
গত ১৭ মে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন নয়ারহাট এলাকায় অবস্থিত রিংভো অ্যাপারেলস নামে একটি পোশাক কারখানা থেকে এসব পোশাক জব্দ করা হয়। তবে বিষয়টি রোববার প্রকাশ পায়।
দুই কোটি টাকার চুক্তিতে এসব পোশাক তৈরি ও সরবরাহের জন্য পোশাক কারখানার কর্মকর্তাদের সঙ্গে চুক্তি করেছিল কেএনএফ।
এদিকে এ ঘটনায় নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন- রিংভো অ্যাপারেলসের মালিক সাহেদুল ইসলাম, পোশাক তৈরির ফরমায়েশ গ্রহণকারী গোলাম আজম ও নিয়াজ হায়দার।
মামলার এজাহারভুক্ত অপর আসামি হলেন রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের মংহলাসিন মারমা নামে অপর এক ব্যক্তি।
মামলা দায়ের ও আসামি গ্রেফতার হলেও এ বিষয়ে সিএমপির কেউ প্রকাশ্যে কথা বলতে রাজি হচ্ছে না।
গোয়েন্দা পুলিশ, বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশের ওসি, এমনকি সিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এ বিষয়ে মুখ খুলছেন না।
মামলার এজাহারের সাক্ষী রিংভো অ্যাপারেলসের প্রোডাকশন ম্যানেজার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান তাদের কারখানা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ কর্তৃক বেশ কিছু পোশাক জব্দ করার কথা স্বীকার করে গণমাধ্যমকে বলেছেন, তারা জানতেন না এসব পোশাক অবৈধ বা বিচ্ছিন্নতাবাদী কোনো সংগঠনের জন্য তৈরি করা হচ্ছে।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, কাপ্তাই এলাকার বাসিন্দা মংহলাসিন মারমা মং নামে এক ব্যক্তি এসব পোশাক তৈরির অর্ডার দেন। গত মার্চে ২ কোটি টাকার চুক্তিতে এই পোশাক তৈরির অর্ডার নেন গোলাম আজম ও নিয়াজ হায়দার। চলতি মাসে পোশাকগুলো সরবরাহের কথা ছিল।
এজাহারে আরও বলা হয়, কেএনএফ নামে যে সংগঠনটির জন্য এসব ইউনিফর্ম বা পোশাক তৈরি করা হচ্ছিল সেই সংগঠনটি একটি নিষিদ্ধ সংগঠন। তিন বছর আগে ফেসবুক পেজ খুলে সশস্ত্র গোষ্ঠী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এটি। এই সংগঠনের সদস্যরা পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান জেলার বিভিন্ন স্থানে অপরাধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। পাহাড়ের দুই জেলার ৯টি উপজেলা নিয়ে একটি আলাদা রাজ্য গঠনের ঘোষণাও দেয়। আল-শারকিয়া নামে একটি জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার খবরও বের হয়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে এ সংগঠনের সদস্যদের বিভিন্ন সময় সংঘাত সংঘর্ষও হয়েছে।
পাহাড়ি বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, কেএনএফ বা কুকি চিন দুই তিন বছর ধরে পাহাড়ে এক আতঙ্কের নাম। তারা সশস্ত্র অবস্থান করে ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায়, হত্যা, অপহরণ, গুম, ব্যাংক ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। বড় বড় বেশ কয়েকটি ব্যাংক ডাকাতির ঘটনাও ঘটিয়েছে তারা। গ্রেফতার ও অজ্ঞাতনামা আসামিরা বাংলাদেশের অখণ্ডতা, সংহতি জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করতে অবৈধভাবে বিভিন্ন উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ করে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।