লাইফস্টাইল ডেস্ক : বাঙালিরা যে সব খাবার রসিয়ে কষিয়ে খেতে পছন্দ করেন তার মধ্যে অন্যতম কাঁকড়া (Crab)। কাঁকড়ার নাম শুনলেই যেন জিভে জল চলে আসে।
কাঁকড়া প্রোটিনের একটি বড় উৎস। এছাড়াও কাঁকড়ায় রয়েছে ভিটামিন “বি”, সেলেনিয়াম এবং ওমেগা -3 ফ্যাটি অ্যাসিড, রিবোফ্লেবিন, নিয়াসিন, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস।
যা বিভিন্ন অসুখ বিসুখ প্রতিরোধ ও প্রতিকারে সাহায্য করে। যেমন- আর্থাইটিস, অ্যালজাইমার্স কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ, ওবেসিটি ইত্যাদি।
বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধ ছাড়াও চিকিত্সার প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শে খাদ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা যায় কাঁকড়া।
তবে যাদের কোলেস্টেরলের ঝুঁকি রয়েছে এবং কিডনী জটিলতায় ভুগছেন, তাদের কাঁকড়া খাওয়া উচিত নয়।
তাই এই কাঁকড়ায় যেমন রয়েছে পুষ্টিগুণ তেমনই খেতেও খুব সুস্বাদু।
আসুন এবার জেনে নেওয়া যাক, কাঁকড়া খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে-
রিবোফ্লাভিন সমৃদ্ধ:
কাঁকড়াতে থাকে প্রচুর পরিমাণে রিবোফ্লাভিন। রিবোফ্লাভিন ত্বক, চোখ ও স্নায়ুর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়াও আমাদের শরীরে লোহিত রক্তকনিকা তৈরিতে রিবোফ্লাভিন বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
যারা অতিরিক্ত পরিশ্রম করেন তাদের বাড়তি রিবোফ্লাভিনের উৎস হতে পারে কাঁকড়ার মাংস।
প্রোটিনে ভরপুর:
কাঁকড়াতে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন। মাংসে যে পরিমান প্রোটিন থাকে কাঁকড়াতেও একই পরিমান প্রোটিন থাকে।
কিন্তু মাংসে চর্বি থাকে বলে তা হার্টের রোগীর জন্যে ক্ষতিকর কিন্তু কাঁকড়াতে চর্বি নেই বললেই চলে।
তাই শিশু কিংবা বৃদ্ধ যেকোনো বয়সের মানুষ কাঁকড়া সহজেই হজম করতে পারে।
হার্ট ভালো রাখে:
কাঁকড়া মাংস নিয়মিত খাওয়ার একটি সুবিধা হল এটি হার্টকে সুরক্ষা প্রদান করে।
যদিও এই খাবারগুলি খাওয়ার ফলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়তে পারে, তবে এটি ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের সাথে ভারসাম্যপূর্ণ হতে পারে।
কাঁকড়ায় ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড বেশি থাকে। ফলে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রাকে ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং শরীরে প্রদাহ হ্রাস করতে পারে যা রক্তচাপকে হ্রাস করে এবং হার্টের সমস্যা প্রতিরোধ করতে পারে।
ফলস্বরূপ আপনার হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস পায়।
স্বাস্থ্যকর হাড় গঠনে:
ক্যালসিয়াম হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ক্যালসিয়ামের পরে, হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদার্থ ফসফরাস।
কাঁকড়াতে প্রচুর পরিমাণে ফসফরাস রয়েছে যা হাড় এবং দাঁত এর স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তাই হাড়ের স্বাস্থ্য এবং শক্তি বজায় রাখতে, আপনি কাঁকড়া খেতে পারেন। কারণ কাঁকড়া প্রোটিনের একটি দুর্দান্ত উৎস।
এছাড়া কাঁকড়ার মাংসে থাকা ফসফরাস এবং অস্টিওপোরোসিস আর্থ্রাইটিসের মতো রোগ-প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে।
মানসিক ক্রিয়াকলাপ বাড়ায়:
কাঁকড়া ভিটামিন বি 2, সেলেনিয়াম, কপার এবং ওমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। এই খনিজগুলি মস্তিষ্কের জন্য দুর্দান্ত এবং স্নায়ুতন্ত্রের সামগ্রিক কার্যকারিতা উন্নত করতে পারে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:
কাঁকড়া মাংসে থাকা সেলেনিয়াম বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতেও দারুন উপকারী। কারণ, এটি দেহে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
ফলস্বরূপ, দীর্ঘস্থায়ী রোগ হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস পায়। সুতরাং, মাঝে মাঝে আপনার প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় কাঁকড়া অন্তর্ভুক্ত করতে ভুলবেন না।
রক্ত সংবহন করে:
সুস্থ থাকার অন্যতম চাবিকাঠি হল রক্ত সঞ্চালন মসৃণ করা। বিশেষত, হার্ট এবং মস্তিষ্কের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির কাছে। কাঁকড়া দেহে রক্ত চলাচল উন্নত করতে সহায়তা করে।
মসৃণ রক্ত সংবহন ছাড়াও এই সামগ্রীটি শরীরে অক্সিজেনের বিস্তার নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে। কাঁকড়া মাংস লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করতে এবং ক্লান্তি রোধেও সহায়তা করে।
সতর্কতা:
কাঁকড়া থেকে অনেকের অ্যালার্জি হয়। যাদের কাঁকড়াতে অ্যালার্জি হয় কাঁকড়া খাবেন না। আপনি যদি জটিল কোনো রোগে আক্রান্ত হন বা রেগুলার কোনো মেডিকেল কোর্স-এর মধ্য দিয়ে যান।
তাহলে অবশ্যই খাওয়ার আগে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।