বিনোদন ডেস্ক : বাংলা সাহিত্য ও সাংবাদিকতা জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র কবি ও সাংবাদিক সৌমিত্র দেব (৫৫) আর নেই। আজ মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল ২০২৫) সকালে শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। তিনি রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মৃত্যুবরণ করেন বলে চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেন।
Table of Contents
সৌমিত্র দেবের স্ত্রী পলা দেব প্রথম আলোকে জানান, কয়েক দিন ধরেই শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন তিনি। আজ সকালে হঠাৎ করে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়, তবে পথেই মৃত্যু ঘটে।
সাংবাদিকতা ও সাহিত্যচর্চায় দীর্ঘ পথচলা
সৌমিত্র দেবের সাংবাদিকতা শুরু হয়েছিল সিলেট ও মৌলভীবাজারের স্থানীয় পত্রিকায় লেখালেখির মাধ্যমে। পরবর্তীতে তিনি জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোয় প্রদায়ক হিসেবে লিখতেন এবং পরে মানবজমিনে সহকারী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ সাল থেকে অনলাইন সংবাদমাধ্যম রেডটাইমস বিডি ডটকমের প্রধান সম্পাদক ছিলেন তিনি।
কবিতার জন্য ভালোবাসা
সাংবাদিকতার পাশাপাশি কবিতার প্রতিও তার গভীর ভালোবাসা ছিল। তিনি ৩০টিরও বেশি গ্রন্থের লেখক। তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে: “অজবীথি”, “নীল কৃষ্ণচূড়া”, “পাথরের চোখ” ইত্যাদি। কবিতার জন্য তিনি ২০০৫ সালে বাংলাদেশ রাইটার্স ফাউন্ডেশন পদকে ভূষিত হন।
একজন শিল্পী, একজন মানুষ
তিনি কেবল কবি বা সাংবাদিকই নন, অভিনয়ও করতেন। সমাজসচেতন, মানবিক ও প্রগতিশীল একজন মানুষ হিসেবে তাঁর পরিচিতি ছিল। শিশু একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক আনজীর লিটন বলেন, “সৌমিত্র কিশোর বয়স থেকেই লেখালেখিতে নিবেদিত ছিলেন।” কবি দিলদার হোসেন বলেন, “এই মৃত্যু অকাল। সৌমিত্র ছিলেন দারুণ পরোপকারী একজন মানুষ।”
মারধরের ঘটনা ও জীবন সংগ্রাম
২০২৪ সালের ১৯ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মারধরের ঘটনায়ও তিনি আলোচনায় আসেন। তাঁর মৃত্যুতে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন গভীর শোক প্রকাশ করেছে।
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
সৌমিত্র দেব ১৯৭০ সালের ২৭ জুলাই মৌলভীবাজারে জন্মগ্রহণ করেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (PIB) থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
সাহিত্য, সাংবাদিকতা ও সংস্কৃতিতে সৌমিত্র দেবের অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর অকালমৃত্যুতে দেশের সাহিত্যাঙ্গন হারাল এক নিষ্ঠাবান সৈনিককে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।