আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কোল্ডস্টোরেজ বা মিয়ানমার থেকে চালানি মাছ নয়, অবশেষে পাতে পড়তে চলেছে টাটকা বাংলার ইলিশ। তবে তার দামও আকাশছোঁয়া।
যা মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। বড় সাইজের একটা ইলিশ তো দূরের কথা, কলকাতার বাজারে যেসব ইলিশ বিক্রি হচ্ছে তা ছোট সাইজের। ৩শ থেকে ৪শ গ্রাম সাইজের ইলিশের দাম পড়ছে ৬-৭শ রুপি। ৫শ গ্রামের ইলিশের দাম পড়ছে ৮শ-৯শ রুপি। আর এক কেজি বা তার চেয়ে বেশি ইলিশের দাম পড়ছে ২২শ রুপি।
সরকারি নিয়ম থাকলেও বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কলকাতার বাজারগুলোতে এখন অন্যান্য মাছের পাশাপাশি ইলিশের জাটকায় ভরে উঠেছে। সেগুলোর দামও আকাশছোঁয়া। যদিও বাংলার মৎস্যজীবীরা বলছেন এবারে ভালো মানের ইলিশ পাওয়া যাবে। ১৫ জুন বাংলার কাকদ্বীপ, নামখানা মৎস্যবন্দর থেকে যে ট্রলারগুলো ইলিশ ধরতে সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিল, খারাপ আবহাওয়ার কারণে বেশিরভাগ ট্রলারকেই ফিরে আসতে হয়েছে অল্প-স্বল্প ইলিশ নিয়ে।
জেলেদের দাবি, ন্যূনতম ৫শ থেকে ৯শ গ্রাম এমনকি এক দেড় কেজি ওজনের ইলিশও ধরা পড়েছে। যদিও বাংলার বাজার সেসব সাইজের ইলিশ সেভাবে নজরে পড়ছে না।
স্থানীয়দের মতে, ট্রলার পাড়ে আসা মাত্রই ইলিশ উধাও হয়ে যাচ্ছে। তাদের ধারণা, সম্ভবত ইলিশ ভিন রাজ্যে চলে যাচ্ছে। ২১-২২ জুন নামখানা ও কাকদ্বীপ মৎস্যবন্দরের ট্রলারগুলো সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ টন ইলিশ এনেছিল। এই পরিমাণ স্বাভাবিকভাবে তুলনার অনেকটাই কম। এমন অবস্থায় জেলেদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে ইলিশের সাইজ। এই ধাপে গড়ে ৭শ থেকে ৮শ গ্রাম ওজনের ইলিশ ধরা পড়েছে।
মৎস্যজীবীরা আশাবাদী, ভালো সাইজের ইলিশ মিলবে। আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হলে ফের সমুদ্রে পাড়ি দেবেন তারা। বৃষ্টি বাড়লে মাছের পরিমাণ বাড়বে বলে জানাচ্ছেন তারা। যদিও বাংলার আকাশে বৃষ্টির দেখা নেই। বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জায়গায় নামমাত্র বৃষ্টি হয়েছে। এর জেরে কলকাতাসহ রাজ্যের দক্ষিণবঙ্গে এক ধরনের ভ্যাপসা গরমে অস্থির হয়ে উঠছে মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপনে।
রাজ্যের দক্ষিণ ২৪ পরগণার ডায়মন্ড হারবারের পাইকারী মার্কেট নগেন্দ্র বাজারের প্রথম ইলিশ ঢুকেছে ২১ জুন রাতে। সেখানেও ইলিশের ওজন ৬শ থেকে ৭শ গ্রাম। এককেজির বেশি ওজনের ইলিশও এসেছে কয়েকজন আড়তদারের কাছে। শুরুর সময় এই ট্রেন্ড গোটা বর্ষার মৌসুমে বজায় থাকে কি না সেটাই এখন দেখার।
কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, গতবার তো এসময় ইলিশের দেখাই মেলেনি। সাইজ যাই হোক এবার শুরুতে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। এই প্রবণতা আগামীতে থাকলে ইলিশের পরিমাণ বাড়বে। তখন দামও নাগালের মধ্যে থাকবে।
আড়তদার সমিতির সম্পাদক জগন্নাথ সরকার বলেন, পরিমাণ কম হলেও মৌসুমের শুরুতেই জালে ইলিশ দেখা দিয়েছে। সাইজও খারাপ নয়। দুই মাস ইলিশ ধরা বন্ধ ছিল। জেলেরা আবার সমুদ্রে পাড়ি দিচ্ছেন। আশা করছি, আগামীতে বড় সাইজের ইলিশ ধরা পড়বে মৎস্যজীবীদের জালে।
সারাবছর বাংলার বাজারে যে ইলিশ দেখা মেলে সেসব আসে মিয়ানমার থেকে। কিছু কোল্ডস্টোরে মজুত করে রাখা হয়। এছাড়া বেশ কয়েকবছর ধরে পূজা উপলক্ষে ভারতে আসছে বাংলাদেশের ইলিশ। তারও দাম থাকে আকাশছোঁয়া। তবে বাংলার বাঙালি এখন অপেক্ষায় পশ্চিমবঙ্গের ইলিশের দিকে। আর অল্প হলেও তাই এখন বাজারে আসতে শুরু করেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।