বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : একজন গবেষক এখন শুধু একটি ডেস্কটপ কম্পিউটার ব্যবহার করেই নির্ভুল আবহাওয়া পূর্বাভাস দিতে পারবেন। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, অ্যালান টুরিং ইনস্টিটিউট, মাইক্রোসফট রিসার্চ এবং ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর মিডিয়াম-রেঞ্জ ওয়েদার ফোরকাস্টস (ECMWF)-এর যৌথ গবেষণায় আবহাওয়া পূর্বাভাসে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে।
‘আরডভার্ক ওয়েদার’ নামের এই নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি প্রচলিত সুপারকম্পিউটারভিত্তিক আবহাওয়া মডেলের তুলনায় হাজার গুণ কম কম্পিউটিং শক্তি ব্যবহার করে এবং কয়েকগুণ দ্রুতগতিতে পূর্বাভাস দিতে পারে।
প্রচলিত আবহাওয়া পূর্বাভাস ব্যবস্থা অত্যন্ত জটিল। এতে সুপারকম্পিউটারের মাধ্যমে একাধিক ধাপে তথ্য বিশ্লেষণ করে ফলাফল তৈরি করা হয়, যা বিশাল সময় ও প্রচুর বিশেষজ্ঞের শ্রমসাধ্য কাজ। অন্যদিকে, আরডভার্ক ওয়েদার উপগ্রহ, আবহাওয়া ব্যালুন, জাহাজ ও বিমান থেকে সংগৃহীত তথ্য ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পূর্বাভাস তৈরি করতে পারে।
গবেষক রিচার্ড টার্নার বলেন, এটি প্রচলিত আবহাওয়া পূর্বাভাস পদ্ধতির সম্পূর্ণ বিকল্প হতে পারে। এটি আরও দ্রুত ও নির্ভুল পূর্বাভাস দেওয়ার পাশাপাশি খরচও কমাবে। গবেষকদের মতে, এআই প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে পূর্বাভাসের সময়সীমা পাঁচ দিনের পরিবর্তে আট দিনে উন্নীত করা সম্ভব হবে।
অ্যালান টুরিং ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞান ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ড. স্কট হসকিং বলেন, এই প্রযুক্তি উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বড় সুফল বয়ে আনবে। এটি নীতিনির্ধারক, জরুরি উদ্ধারকর্মী এবং আবহাওয়ার ওপর নির্ভরশীল শিল্পখাতগুলোর জন্য কার্যকর হবে।
গবেষণার প্রধান লেখক ড. আনা অ্যালেন বলেন, এই আবিষ্কার প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন ঘূর্ণিঝড়, দাবানল এবং টর্নেডোর পূর্বাভাস আরও উন্নত করবে। এ ছাড়া বায়ুর গুণমান, সমুদ্রের ঢেউ এবং বরফ গলার পূর্বাভাসেও এআই নতুন মাত্রা যোগ করবে।
গবেষকরা জানান, প্রচলিত পূর্বাভাস পদ্ধতি যেখানে বিপুল পরিমাণ তথ্য ব্যবহার করে, সেখানে আরডভার্ক মাত্র ১০% ডাটা ব্যবহার করেই মার্কিন আবহাওয়া পূর্বাভাস ব্যবস্থার চেয়ে ভালো ফলাফল দিতে সক্ষম। এটি একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার, যা আবহাওয়া পূর্বাভাস ব্যবস্থায় নতুন বিপ্লব আনবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।