বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা সম্প্রতি এক চমকপ্রদ হ্যাকিং আক্রমণের তথ্য প্রকাশ করেছেন, যেখানে ব্যবহারকারীর কোনো ক্লিক ছাড়াই স্মার্টফোন হ্যাক হচ্ছে। ২০২৪ সালের শেষ দিকে শুরু হওয়া এই আক্রমণ ২০২৫ সালেও অব্যাহত রয়েছে।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে রয়েছেন সরকারি কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ, প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও সাংবাদিকরা—যাদের পেশা চীনা সরকারের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান iVerify-এর তদন্তে উঠে এসেছে, এই আক্রমণের সঙ্গে চীনা হ্যাকারদের যোগসূত্র থাকতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মোবাইল ডিভাইস ও অ্যাপস বর্তমানে মার্কিন সাইবার প্রতিরক্ষার সবচেয়ে দুর্বল অংশ। চীনা হ্যাকার গ্রুপগুলো ইতিমধ্যেই মার্কিন নাগরিকদের ফোনে ঢুকে তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে। হ্যাক হওয়া ফোনে সরাসরি টেক্সট ও ফোনালাপও নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে।
NSA ও Google-এর সাবেক সাইবার বিশ্লেষক এবং iVerify-এর প্রধান রকি কোল বলেন, “বিশ্ব এক মোবাইল নিরাপত্তা সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। অথচ কেউ এই দিকটায় গুরুত্ব দিচ্ছে না।”
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে মার্কিন কর্তৃপক্ষ একটি হুমকি সনাক্ত করে, যেখানে চীনের পরিচালিত হ্যাকাররা বড় পরিসরে মার্কিন নাগরিকদের ফোনালাপ ও বার্তা নজরদারি করছিল। হ্যাকের লক্ষ্য ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জেডি ভ্যান্স-এর নির্বাচনী টিমও।
চীন এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে দাবি করেছে, বরং যুক্তরাষ্ট্রই দীর্ঘদিন ধরে সাইবার গোয়েন্দাবৃত্তিতে লিপ্ত এবং সেই দোষ চীনের ওপর চাপাচ্ছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র নিজের সাইবার অভিযানের দায় এড়াতে চীনকে লক্ষ্য বানাচ্ছে।”
মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মতে, চীন বর্তমানে একটি “গুরুতর ও স্থায়ী হুমকি”, যারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, প্রোপাগান্ডা, সাইবার নজরদারি ও ডিজিটাল গুপ্তচরবৃত্তিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।
এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্র দেশগুলো চীনা প্রযুক্তি নিষিদ্ধ করছে। জার্মানি ইতোমধ্যেই ধাপে ধাপে চীনা অংশগ্রহণ কমিয়ে আনছে। তবে এখনো অনেক দেশে চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো সক্রিয়, যা হ্যাকারদের জন্য বৈশ্বিক সুযোগ তৈরি করছে।
এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও কিছু চীনা টেলিকম প্রতিষ্ঠান ক্লাউড স্টোরেজ ও রাউটিং সেবায় সক্রিয় থাকায় আইনপ্রণেতারা উদ্বিগ্ন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।