বিনোদন ডেস্ক : হৃদয়ছোঁয়া গান যেমন পরিবেশন করেন, তেমন দারুণ লেখেনও শ্রোতাপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপা। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চমৎকার লেখা তার ফেসবুকে প্রায়ই প্রকাশ করেন। আজ (২৬ জানুয়ারি) তার স্বামী সুরকার-সংগীত পরিচালক মইনুল ইসলাম খানের জন্মদিনে আবেগঘন একটি পোস্ট দিয়েছেন। এটি কনকচাঁপার অনুরাগীরা ভীষণ পছন্দ করেছেন।
পোস্টে কনকচাঁপা লিখেছেন, ‘বন্ধু, আজ তোমার জন্মদিন! আজ থেকে ৬৬ বছর আগে এইদিনে তুমি জন্মেছিলে। বুড়িদাদির মতো আমার খুব সেই আঁতুড়ঘর দেখতে ইচ্ছে হয়! শীতের রাত, আমার প্রিয়তমা শাশুড়ি আম্মা না জানি কত কষ্ট করেছেন। তখন তো আর ডায়াপার ছিল না। কি গোলাপি একটা তুলার বল না জানি ছিলে! একটু দেখতে পেতাম!’
তার স্বামীর স্কুলে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে লেখেন, ‘তোমার পয়লা স্কুলে যাওয়ার দিন তোমাকে কেমন দেখাচ্ছিলো সেটা জানার খুব আগ্রহ। যদিও পারিবারিক অ্যালবামে আমি তোমার অনেক ছোটবেলার ছবি দেখে তোমার শৈশব-কৈশোর মুখস্ত। আমার শ্বশুর শাশুড়িকে কৃতজ্ঞতা তারা তোমাকে জন্ম দিয়েছেন। আজ তোমার জন্মদিন, অনেক আয়োজন করার কথা, কিন্তু তুমি তো এগুলো পছন্দই করো না। আমি অনেক চেষ্টা করেছি উৎসব জমাতে, তুমি সেই উৎসবে পানি ঢালো ফি বছর, তাই ভেবেছি এগুলো আর করবো না।’
কনকচাঁপা তার স্বামীর জন্মদিনে অনেক না বলা কথা এ স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি লেখেন, ‘তবে তোমার জন্মদিনে কিছু “না বলা কথা” বলি, কথাগুলো হলো এই এক জীবনে তোমার কাছে আমার কৃতজ্ঞতার অন্ত নাই। তুমি আমাকে লালন না করলে আমি কি “আমি” হতাম? আমার হাজার হাজার রেকর্ডিং হাজার হাজার মঞ্চে তুমি যেভাবে চোখ দিয়ে আমাকে আগলে রেখেছো তা সত্যিই বিরল। তোমার হাত ধরে রাস্তা পার হতে যেমন আমি ডানে বামে তাকাই না তেমন গাইতে গেলে আর কতক্ষণ গাইবো সময় গুনি না। দর্শক ভাবে কনকচাঁপা নিজে একটার পরে একটা সাজিয়ে গাইছেন কিন্তু নেপথ্যে তোমার সরব উপস্থিতি অনেকেই বোঝে না। তুমি আমাকে শিল্পী হিসেবে, তোমার স্ত্রী হিসেবে মুক্তা যেমন সযত্নে তুলায় পেঁচিয়ে রাখে তেমন রেখেছো আজীবন। সেখানে আমি কতটুকু বা প্রতিদান দিতে পারি!’
প্রত্যাহিক জীবনের প্রসঙ্গে টেনে কনকচাঁপা লেখেন, ‘তুমি বাজার না করলে আমি রান্না করনো শান্তিই পাই না। সামান্য নুন ও আমার নুন বলে মনে হয় না। আর তোমার সাথে ঝগড়া না করলে আমার দম আটকে আসে আর তারচেয়েও বড় কথা আমি তোমার সাথে ঝগড়া করে অনেক মজা পাই। কারণ তুমি বেশির ভাগ সময় যুৎসই শব্দ খুঁজে না পেয়ে খেই হারাও আর আমার মুখে সারগামের সপাট তানের মতো খই ফোটে হাহা। অগত্যা তুমি যখন অসহায় হয়ে বলো ছি ছি মানুষ যদি জানতো যে তুমি এতো ঝগড়া করতে পারো! তখন আমি বুঝি আমি নিশ্চিত জিতে গেছি হিহিহি।’
দুজনার খুনসুটির কথা তুলে ধরে এ কণ্ঠশিল্পী স্বামীর উদ্দেশ্যে লেখেন, ‘শোন হারা আর জেতা কিসের, আমরা আমরাই তো। আমার সবকিছু আমার, তোমার সবকিছু ও আমার। এ বছর তুমি আমার স্বপ্ন পূর্ণ করেছো আল্লাহর রহমতে, তার জন্য আল্লাহ যেন ওই পারে তোমাকে বিশাল বালাখানা উপহার দেন, তাতে হুরপরি থাকলেও আমার কোনো অসুবিধা নাই (থাকলে কি আর করা)।’
রসিকতা করে কনকচাঁপা লেখেন, ‘তুমি সবসময় মানুষের কাছে নিজের বয়স বাড়াও, এই কাজ আর কখনো করবে না। আর একটা কথা, আম্মা তো নাই, এখন আমিই তোমার একমাত্র আশ্রয়, বুইঝো কিন্তু। আমার আরও কিছু গাছ দরকার, ঠিকঠাক কিনে দিও আচ্ছা?’
Fact-checking বিস্তৃত করতে সরকার সমন্বিত উদ্যোগ নেবে : তথ্য উপদেষ্টা
স্বামীকে একটি কঠিন অনুরোধ করে লিখেছেন, ‘আর এ বছর সিগারেটটা ছেড়ে দাও প্লিজ।’ সব শেষে তিনি লেখেন, ‘আজকের দিনে আল্লাহর কাছে আমার এই দোয়া যে আল্লাহ যেন তোমাকে অনেক লম্বা নেক হায়াত দেন, সুদীর্ঘ আয়ু নিয়ে আমাকে সাথে নিয়ে বেঁচে থাকো। শুভজীবন বন্ধু।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।