জুমবাংলা ডেস্ক : কৃষিজমিতে অতিরিক্ত সার ব্যবহারের ফলে মৌমাছি ও ফুলের সংখ্যা ব্যাপকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। রথামস্টেডে অবস্থিত বিশ্বের দীর্ঘতম পরিবেশগত গবেষণা প্রকল্প ‘পার্ক গ্রাস এক্সপেরিমেন্ট’-এর সাম্প্রতিক দুই বছরের গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণার ফলাফল ‘npj Biodiversity’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এতে দেখা গেছে, নাইট্রোজেন সার প্রয়োগের ফলে ফুলের সংখ্যা পাঁচগুণ কমে যাচ্ছে এবং মৌমাছির সংখ্যা অর্ধেকে নেমে আসছে।
বিশ্বের প্রায় এক-চতুর্থাংশ জমি কৃষি ঘাসজমি হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা ৮০০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের জীবিকার উৎস। সার ব্যবহারের মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি সম্ভব হলেও এর ফলে বায়ু ও পানি দূষণ এবং জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি বেড়ে চলেছে। গবেষণায় জানা গেছে, সারের কারণে দ্রুত বর্ধনশীল ঘাস অন্যান্য ঘাস ও ফুলকে দমিয়ে রাখে, যা পরাগায়নকারী পোকামাকড়ের সংখ্যায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
পরাগায়নকারী পোকামাকড় যেমন মৌমাছি, পরিবেশ এবং কৃষির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাদের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বিঘ্নিত হচ্ছে। প্রধান গবেষক ড. নিকোলাস বালফোর বলেন, সারের পরিমাণ বাড়ালে পরাগায়নকারীর সংখ্যা কমে যায়। এটি একটি সরাসরি সংযোগ যা আগে কখনো এত স্পষ্টভাবে দেখা যায়নি। এর প্রভাব খাদ্যশৃঙ্খল পর্যন্ত পৌঁছায়।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, রাসায়নিক মুক্ত প্লটে মৌমাছির সংখ্যা নয়গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি নাইট্রোজেন ছাড়া অন্যান্য সার প্রয়োগ করা প্লটে ফুল ও পরাগায়নকারীর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি ছিল।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, বিভিন্ন ধরনের ফুল থাকা মানে বিভিন্ন ধরনের পরাগায়নকারী পোকামাকড়ের উপস্থিতি নিশ্চিত করা। ড. বালফোর বলেন, যদিও কম উৎপাদন সাধারণত নেতিবাচক হিসেবে ধরা হয়, তবে ঘাসজমির উৎপাদনশীলতা কমিয়ে দিলে এটি বহুমুখী ভূমি ব্যবস্থার অনেক সুবিধা আনতে পারে।
১৮৫৬ সালে ইংল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্বে রথামস্টেডে শুরু হওয়া পার্ক গ্রাস এক্সপেরিমেন্ট এখনও চলছে। এটি বিশ্বের দীর্ঘতম পরিবেশগত গবেষণা। প্রাথমিকভাবে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি নিয়ে কাজ শুরু হলেও বর্তমানে এটি কৃষিবান্ধব পরিবেশগত বিষয় এবং জীববৈচিত্র্য নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৯ গোলের নাটকীয় ম্যাচে অসাধারণ জয় পেল বার্সেলোনা
এই গবেষণা পরিবেশ রক্ষা ও কৃষি ব্যবস্থার ভারসাম্য বজায় রাখতে সারের সীমিত ও সঠিক ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে। এটি ভবিষ্যতে পরিবেশবান্ধব কৃষি পদ্ধতি প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।