কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) ডিবেটিং সোসাইটি (সিইউডিএস)-এর উদ্যোগে ছাত্র সংসদ নিয়ে প্রদর্শনী বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বির্তকের বিষয় ছিলো ‘এই সংসদ (কুবি) মনে করে, ছাত্র সংসদের বাস্তবায়ন-ই পারে লেজুরবৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করতে।’
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে এ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।
বিতর্কটি সঞ্চালনা করেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি এর সহ-সভাপতি শাকিল আহমেদ সবুজ।
বির্তক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শক অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাহবুব। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. তরিকুল ইসলাম এবং বর্তমান সভাপতি সাদিয়া আফরিনসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
বিতর্কে সরকারি দলে ছিলেন ফার্মেসি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এনায়েত হোসেন, বাংলা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফারহা খানম ও একই শিক্ষাবর্ষের অর্থনীতি বিভাগের নাজমুস সাকিব। অন্যদিকে বিরোধী দলের হয়ে অংশ নেন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের মোঃ লাবিব রহমান, ফিন্যান্স ও ব্যাকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের নাজমুল হাসান ফাহিম এবং হিসাব তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের আবসার উদ্দিন ইফতি।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অধিকার বাস্তবায়নে কুকসু নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হতে পারে, তবে এটি বাস্তবায়নের আগে শিক্ষার্থীদের মতামত ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সামগ্রিক বিবেচনাকে গুরুত্ব দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকলেও বিভিন্ন সংগঠন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কণ্ঠ প্রকাশের জন্য স্বাধীন একটি মঞ্চ থাকা জরুরি। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা যদি শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজ না করেন তবে শিক্ষার্থীরা পরবর্তী নির্বাচনে তাদের ভোট দেবে না, যা গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। নির্বাচন সহিংসতা বা বিশৃঙ্খলার জন্ম দিলে তা থেকে বিরত থাকা ভালো, অন্যদিকে নির্বাচন শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে মনে হলে অবশ্যই কুকসু প্রতিষ্ঠা করা উচিত।’
ছাত্র পরামর্শক অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল্লাহ আল মাহবুব বলেন, ‘বিশ্বের ছাত্র সংসদ প্রতিষ্ঠার মডেল অনুযায়ী ছাত্র সংসদ নির্বাচন ছাত্ররাই করবে এবং করা উচিত। ছাত্র সংসদ যেন শুধু নেতা হওয়ার প্রয়োজনে সীমাবদ্ধ না থাকে। ছাত্ররা নির্মহোভাবে কাজ করলে অবশ্যই সবার সহযোগিতা পাবেন। আমরাও চাই একটি সুস্থ, স্বাভাবিক ও সুন্দর প্রক্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতিষ্ঠিত হোক।’
তিনি আরও বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, শিক্ষকদের প্রধান কাজ হলো পাঠদান করা এবং পাশাপাশি গবেষণা চালিয়ে যাওয়া। এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রধান দায়িত্ব হলো পড়াশোনা করা এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিজেদের যোগ্য করে গড়ে তোলা।’
ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি সাদিয়া আফরিন বলেন, ‘কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি সবসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো ইস্যুতে গঠনমূলক আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করে। বর্তমানে প্রায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন আলোচ্য, ছাত্র সংসদের নির্বাচন। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়েও এর আবহ তৈরি হয়েছে। যেটিতে আমাদের আয়োজন শুধু বিতর্কের মাধ্যমেই সীমাবদ্ধ ছিল না। আমাদের এই আয়োজনে চেষ্টা ছিল শিক্ষার্থীদের কথা তুলে আনার, তাদের পরামর্শ সবার সামনে উপস্থাপন করার। আমি বিশ্বাস করি এই প্রদর্শনী বিতর্ক ছিল অরাজনৈতিকতার ব্যানারে কুকসু গঠনের ক্ষেত্রে সাধারণ শিক্ষার্থীদেরই কণ্ঠস্বর।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।