বিনোদন ডেস্ক : কুমার সানুকে বলা হয় বলিউডের ‘মেলোডি কিং’। তার সুরের মুর্ছনায় কয়েক দশক ধরে মোহিত ভারত ও বাংলাদেশের কোটি কোটি গানপ্রেমী। গান নিয়ে এখনো তার ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো। সেই কুমার সানু ধুয়ে দিলেন বর্তমান সময়ের হিন্দি গানকে। তার মতে, একালের হিন্দি গান শোনার মত নয়।
সম্প্রতি ভারতের ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেন কুমার শানু। তার কাছে প্রশ্ন ছিল, কোন ধরনের গান শুনতে পছন্দ করেন? এর জবাব দিতে গিয়েই গায়ক বলেন, ‘বর্তমানের হিন্দি গান শোনার যোগ্যতা হারিয়েছে।’
কুমার শানু বলেন, ‘আমি এখনো লতাজি, কিশোর কুমার, মোহাম্মদ রাফির গান শুনি। একটা কথা বলা হয়নি আগে, সেটা হলো শোনার ব্যাপারে এড়িয়ে চলি নিজের গানও। ভয় লাগে ভুলগুলো যদি কানে বাজে! ইংরেজি গানও শুনি। কিন্তু এখনকার হিন্দি গান একেবারেই শুনি না। কারণ, শোনা যায় না। এখন যেসব হিন্দি গান তৈরি হচ্ছে, সেগুলো শোনার মত নয়, তাই শুনি না।’
গানের জগতে ৩৫ বছরের বেশি সময় কাটিয়ে ফেলেছেন কুমার শানু। তার সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায়, এখন পর্যন্ত ২১ হাজারের বেশি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন এই মেলোডি কিং। গান গেয়েছেন বাংলা, হিন্দিসহ ২৬টি ভাষায়। শানু জানান, ‘অনেক দেশে প্রোগ্রাম করার আগে দেখেছি নানা ভাষায় গাওয়া আমার গান বাজানো হচ্ছে। এ বছরেও কিছু কাজ আছে। আশা করি, ২২ হাজার ছাড়িয়ে যাবে।’
কুমার শানুর জন্ম ১৯৫৭ সালে কলকাতায়। পারিবারিক পদবি ভট্টাচার্য। অর্থাৎ, আগে তার নাম ছিল শানু ভট্টাচার্য। সেখান থেকে কীভাবে কুমার শানু হলেন- সাক্ষাৎকারে সে গল্পও শোনান খ্যাতিমান এই গায়ক।
কুমার শানু জানান, ‘সংগীত পরিচালক কল্যাণজি, আনন্দজি আমাকে এই নাম দিয়েছিলেন। কারণ মানুষ যাতে আমাকে কেবল বাঙালি গায়ক হিসেবে চিহ্নিত করতে না পারে। কারণ বাঙালিদের উর্দু উচ্চারণ ভালো ছিল না। বাঙালি গায়ক যারা ছিলেন, তারা উর্দুতে গান করলেও তাদের উচ্চারণে সমস্যা ছিল। কিন্তু আমার উর্দু ছিল শক্তপোক্ত। কিন্তু সেটি গান করার সময়, কথায় উর্দু টান আসত না। তাই তারা আমার নামের সঙ্গে কুমার নামটি জুড়ে দেন, যাতে আমাকে কেবল বাঙালি গায়ক ভাবা না হয়।’
১৯৯০ সালে আশিকী ছবিতে গান গেয়ে রাতারাতি জনপ্রিয়তা পেয় যান কুমার শানু। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এগিয়ে চলেছেন দুর্বার গতিতে। পরবর্তীতে গান নিয়ে তার ব্যস্ততা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে, একদিনে ২৮টি গান পর্যন্ত রেকর্ড করতে হয়েছে কুমার শানুকে!
বলিউড ক্যারিয়ারে পরপর পাঁচ বছর সেরা গায়ক হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পান কুমার শানু। ২০০৯ সালে ভারত সরকার তাকে দেয় পদ্মশ্রী সম্মান। বর্তমানে একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় এই গায়কের কাজের চাপ কম। ৬৬ বছর বয়সে শানু মনে করেন, সংগীত ছাড়া তার জীবনযাপন করা দুষ্কর।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।