জুমবাংলা ডেস্ক : দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার পাল্টাপুর ইউনিয়নের কাজল গ্রামের ৭২ বছর বয়সী বৃদ্ধা হেমরম জীবনযুদ্ধে এক অনন্য উদাহরণ। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এই সংগ্রামী নারী জীবনের প্রতিকূলতাকে জয় করে জীবিকার পথ বেছে নিয়েছেন।
ছয় বছর আগে স্বামী পালু মুরমুর মৃত্যু এবং চরম অভাব-অনটনের মধ্যেও কারও কাছে হাত না বাড়িয়ে তিনি নিজ উদ্যোগে শাক সংগ্রহ করে বিক্রি শুরু করেন। প্রতিদিন ভোরে পুকুরপাড়, কৃষিজমি এবং আইলের ধার থেকে কালো কচু, বথুয়া ও গিমা শাক সংগ্রহ করে চার কিলোমিটার পথ হেঁটে বা ভ্যানে চেপে বীরগঞ্জ পৌর বাজারে যান।
সেখানে সকাল ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত শাক বিক্রি করেন। তার দৈনিক আয় হয় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। শাক ক্রেতা রাম প্রসাদ জানান, রাসায়নিকমুক্ত হওয়ায় বুড়ি হেমরমের শাক ক্রেতাদের কাছে বেশ জনপ্রিয়।
হেমরমের একমাত্র ছেলে বুদু মুরমু জানান, তাদের বাড়িভিটা ছাড়া আর কিছু নেই। দিনমজুরি করে কোনো রকমে সংসার চালালেও আট সদস্যের পরিবারের খরচ মেটানো তার পক্ষে অসম্ভব। এ কারণেই সংসারের চাপ কমাতে তার মা শাক বিক্রির কাজে নামেন।
বাজারের ইজারাদার মহির উদ্দিন বলেন, হেমরমের অসহায় অবস্থার কথা বিবেচনা করে তার কাছ থেকে কোনো খাজনা নেওয়া হয় না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রস্তম আলী শাহ জানান, বৃদ্ধ বয়সেও তার এই পরিশ্রম অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
আমরা সবসময় তাকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। বুড়ি হেমরমের সংগ্রামী জীবনের গল্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে এলাহী তাকে শীতের কম্বল এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
এমন সংগ্রামী মানুষদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। প্রয়োজন না থাকলেও তাদের কাছ থেকে শাক কিনে মানবিকতার পরিচয় দেওয়া উচিত। সহযোগিতার এমন ছোট প্রয়াসও বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।