জুমবাংলা ডেস্ক: টানা বৃষ্টিতে জেলার তাড়াশ উপজেলায় ফসলের মাঠগুলোতে পানি জমে পাকা ধান নষ্ট হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন কৃষকরা। তাই ফসল রক্ষায় অতিরিক্ত টাকা বা ধানের অর্ধেক ভাগ দিয়েও এই বৃষ্টিতে মিলছে না শ্রমিক। ফলে ক্ষেতেই পঁচে যাচ্ছে ধান। এতে করে ডুবে যাওয়া ধান নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন উপজেলার কৃষকরা।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বছর এক বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করতে সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। বর্তমানে শ্রমিক খরচ আরও প্রায় সাত হাজার টাকা বেড়ে ৯ হাজারে ঠেকেছে। অপরিকল্পিতভাবে ব্রিজ-কালভাট খাল ও নালা বন্ধ করে দেওয়ার ফলে পানি নিষ্কাশন হয় না বলে অভিযোগ করেন তারা। তাই বৃষ্টি হলে পানি নিষ্কাশনের বাধাগ্রস্ত হয়। এতে করে প্রতিবছর ফসলি মাঠগুলো ডুবে কৃষকের সর্বনাশ হচ্ছে।
বারুহাস ইউনিয়নের বিনসাড়া গ্রামের শিক্ষক আজাদ হোসেন বলেন, ‘কৃষকের পাকা ধান পানির নিচে হাবুডুবু খাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে ধান কাটার জন্য শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি বিঘাপ্রতি ধানের অর্ধেক ভাগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।’
তিনি আরও জানান, ‘প্রতি বছর এই সময়ে পাবনা অঞ্চল থেকে কৃষি শ্রমিকেরা তাড়াশ উপজেলার বিভিন্ন কৃষকের বাড়ি থেকে ধান কাটতেন। কিন্তু এ বছর তারা অজ্ঞাত কারণে এখনো অধিকাংশ কৃষকদের বাড়িতে আসেননি। এটিও শ্রমিক সংকট দেখা দেওয়ার কারণ।’
তাড়াশ পৌর সদরের কৃষি শ্রমিক বক্কার হোসেন বলেন, ‘হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় মাঠের ধানগুলো পানিতে ডুবে গেছে। এখন প্রতিবিঘা জমিতে চার থেকে পাঁচজন শ্রমিক বেশি লাগবে। আগে যেখানে এক বিঘা জমিতে খরচ হতো তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকা। সেখানে এখন অতিরিক্ত খরচসহ প্রায় সাত হাজার থেকে ৯ হাজার টাকা। কিছু এলাকায় অর্ধেক ধান জমিওয়ালার অর্ধেক শ্রমিকের- এমন প্রস্তাবেও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এখন তো বৃষ্টিতে ভিজে কাজ করার মতো শ্রমিকও পাওয়া যাচ্ছে না।’
তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার লুনা বলেন, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২২ হাজার ৩১৫ হেক্টর। কিন্ত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অর্জিত হয়েছে ২২ হাজার ৩৬০ হেক্টর।
তিনি আরও বলেন, চলতি বোরো মৌসুমের শুরু থেকে কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীসহ সকল স্তরের কর্মকর্তারা কৃষকদের নানা দিক নির্দেশনা দিয়ে কৃষকদের উৎসাহিত করেছেন। কিন্তু বর্তমানে শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটা নিয়ে কৃষকরা একটু সমস্যায় পড়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।