ধর্ম ডেস্ক : পবিত্র রমজানের শেষ দশ দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই সময়েই লাইলাতুল কদর পাওয়া যায়। এই রাত সম্পর্কে কুরআন ও হাদিসে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। মুসলমানদের জন্য এটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও বরকতময় রজনী।
Table of Contents
লাইলাতুল কদর: অর্থ ও সংজ্ঞা
আরবি শব্দ ‘লাইলাতুল’ অর্থ রাত বা রজনী এবং ‘কদর’ অর্থ সম্মান, মর্যাদা, মহাসম্মান। ইসলাম ধর্ম অনুসারে, এই রাতে মহানবী (সা.)-এর মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয় এবং মানবজাতির ভাগ্য পুনর্নির্ধারণ করা হয়। কুরআনে উল্লেখ আছে, এই রাতের ইবাদত হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও অধিক সওয়াবের।
লাইলাতুল কদরের গুরুত্ব ও মহিমা
আল্লাহ তাআলা কুরআনে ইরশাদ করেছেন: “নিশ্চয় আমি এটি নাজিল করেছি বরকতময় রাতে; নিশ্চয় আমরা সতর্ককারী। সে রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয় আমার নির্দেশে।” (সূরা দুখান: ৩-৫)
এই রজনীতে ফেরেশতারা ও জিবরাইল (আ.) আল্লাহর অনুমতিক্রমে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করেন। (সূরা কদর: ১-৫)
লাইলাতুল কদর কোন রাতে?
কুরআনে নির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি, তবে হাদিসে এসেছে, এটি রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোর মধ্যে একটি।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “রমজানের শেষ দশ দিনে তোমরা লাইলাতুল কদর তালাশ করো।” (বুখারি ২০২০, মুসলিম ১১৬৯)
অধিক সম্ভাব্য তারিখ: ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ রমজান। তবে ২৭তম রাতের গুরুত্ব বেশি বলা হয়।
লাইলাতুল কদরের বরকত ও বিশেষ বৈশিষ্ট্য
- এই রাতে আল-কুরআন নাজিল হয়।
- এই রাতে মানুষের ভাগ্য নির্ধারিত হয়।
- এই রাতের ইবাদত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম।
- ফেরেশতারা দুনিয়ায় নেমে আসেন।
- এটি সম্পূর্ণ শান্তিময় রাত।
লাইলাতুল কদরে করণীয় ইবাদত
১. নফল নামাজ আদায়: দুই দুই রাকাত করে নফল নামাজ পড়া উত্তম। ধীরে সুস্থে দীর্ঘ ক্বেরাতসহ নামাজ আদায় করা ভালো।
২. কুরআন তেলাওয়াত: কুরআন পাঠ করা এবং এর অর্থ বোঝার চেষ্টা করা।
৩. দোয়া ও ইস্তেগফার: হাদিসে এসেছে, আয়েশা (রা.) রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করেন, “শবে কদর যদি পাই, তাহলে কোন দোয়া করবো?”
তিনি বললেন: “আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা’ফু আন্নি।”
অর্থ: “হে আল্লাহ! আপনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন, তাই আমাকে ক্ষমা করুন।” (তিরমিজি ৩৫১৩)
৪. তওবা: খাঁটি অন্তরে গুনাহ থেকে ফিরে আসা এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
৫. ইতিকাফ: মহানবী (সা.) এই রাতে ইতিকাফ করতেন এবং উম্মতের জন্যও তা সুন্নত হিসেবে প্রবর্তিত হয়েছে।
লাইলাতুল কদরের উপহার: কুরআনের নির্দেশনা
লাইলাতুল কদরের মূল শিক্ষা হলো কুরআনের আদেশ-নিষেধ মেনে চলা। যারা এই রাতে ইবাদত করবে এবং কুরআনের পথ অনুসরণ করবে, তাদের জন্য রয়েছে অনন্ত রহমত।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে লাইলাতুল কদরের ফজিলত অর্জনের তৌফিক দিন এবং এই বরকতময় রাতে বেশি বেশি ইবাদত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।