জুমবাংলা ডেস্ক : দীর্ঘদিন ধরে কুমিল্লার লালমাই উপজেলার ৩৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান পদ শূন্য রয়েছে। এতে উপজেলার ৩১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি কলেজ, ৩টি আলিম মাদরাসা, ১টি দাখিল মাদরাসা ও দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধানের পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে বলে উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থানীয়ভাবে নিয়োগের সুযোগ না থাকলেও কলেজ, মাদরাসা ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধান পদে নিয়োগের ক্ষমতা ম্যানেজিং কমিটি বা গর্ভনিং বডির রয়েছে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটির পছন্দের প্রার্থী না পাওয়ায় ভারপ্রাপ্ত দিয়ে প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, লালমাই উপজেলার ৬৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে শূন্য থাকা ১৪টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সহকারী শিক্ষকরা এবং ১৭টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে চলতি দায়িত্বে রয়েছেন পদোন্নতির তালিকাভুক্ত সহকারী শিক্ষকরা। ৩১জন সহকারী শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত ও চলতি দায়িত্বে থাকায় পাঠদান বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও উপজেলায় ৪৭৩টি পদের মধ্যে সহকারী শিক্ষক পদে কর্মরত রয়েছেন ৪৬২ জন।
উপজেলা শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, অধ্যক্ষ আবুল কালাম মজুমদার মহিলা কলেজে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য।
বাগমারা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। কলমিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ সবকয়টি শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। সেখানে কর্মরত ভারপ্রাপ্ত প্রধানসহ সকলেই অতিথি শিক্ষক। ভুশ্চি হাবিবিয়া মহিলা আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ পদটি শূন্য রয়েছে।
হলদিয়া উসমানিয়া মহিলা আলিম মাদরাসা এবং বেতাগাঁও আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। ননএমপিও কাঁকসার মদিনাতুল উলুম বালিকা দাখিল মাদরাসার সুপার পদটিও শূন্য রয়েছে।
শিক্ষা অফিস আরও জানায়, উপজেলার ২৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান করাচ্ছেন ২৫০জন শিক্ষক। সেইসব বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে ১১৫টি। ২১টি মাদরাসায় পাঠদান করছেন ২৯২ জন শিক্ষক।
সেইসব মাদরাসায় সহকারী শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে ১১০টি।
স্থানীয় শিক্ষানুরাগী মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের পদে সহকারী শিক্ষকদের দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিশু ভর্তি করাতে আগ্রহ হারাচ্ছে অভিভাবকরা। দ্রুত শূন্য পদে নিয়োগসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের প্রতি নিবিড় তত্ত্বাবধান বাড়াতে না পারলে বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর সংকট হতে পারে।’
গোসাইপুস্করনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী রয়েছে ১৩জন। প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষকের মোট পদ রয়েছে ৬টি। প্রধান শিক্ষক ও ২জন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। আমি ৩ বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দায়িত্ব পালন করতেছি। প্রশাসনিক কাজে যেদিন উপজেলায় যাওয়া লাগে সেদিন একজন প্রাক-প্রাথমিক ও একজন সহকারী শিক্ষকের পক্ষে সকল শ্রেণিতে পাঠদান সম্ভব হয় না।’
অধ্যক্ষ আবুল কালাম মজুমদার মহিলা কলেজের প্রভাষক আবদুল হালিম বলেন, ‘প্রায় ৩ বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে চলছে কলেজ। একাধিকবার পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়েও যোগ্য প্রার্থীর আবেদন পাচ্ছি না। কলেজে অধ্যক্ষের পাশাপাশি উপাধ্যক্ষের পদটিও শূন্য রয়েছে।’
বেতাগাঁও আলিম মাদরাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবদুল মতিন মোল্লা বলেন, ‘মাদরাসার অধ্যক্ষ চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি অবসরে গেছেন। এরপর থেকে সহকারী অধ্যাপক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে রয়েছেন। নবসৃষ্ট উপাধ্যক্ষের পদটিও শূন্য। আমরা দুটি পদের জন্য একাধিকবার পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েও যোগ্য প্রার্থী পাইনি।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রোকসানা আক্তার বলেন, ‘এটি একটি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। সে জন্য হয়তো নিয়োগ হচ্ছে না। তাছাড়া অফিসিয়ালি আমরাও বিষয়টি মানিয়ে নিচ্ছি।’
নীল সিনেমায় অভিনয় করতে হলে যে বিশেষ ধরনের দক্ষতা থাকতে হয়, জানালেন সানি
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাফর-আল-সাদেক বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত দিয়ে হলেও তো স্কুলতো চালাতে হবে। প্রধান শিক্ষক প্রশাসনিক পদ যার কারণে খালি রাখা যায় না। শিগগিরই সহকারী শিক্ষকদের থেকে প্রধান শিক্ষক পদোন্নতি দেওয়া হবে। তখন প্রধান শিক্ষক পদ আর শূন্য থাকবে না।’
সূত্র : কালেরকণ্ঠ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।