ল্যাম্বরগিনি লাগেনা, ছাই দিয়ে দাঁত মাজলেও ভিউস আসে

বিনোদন ডেস্ক : “বন্ধু তুমি একা হলে আমায় দিও ডাক, তোমার সঙ্গে গল্প করব আমি সারারাত।” এই ছোট্ট ছন্দটা বলেই একদিন শুরু করেছিলেন রিপন মিয়া। স্বভাবসুলভ হাসি আর সেই বিখ্যাত “আই লাভ ইউ” বলে ভিডিও শেষ করতেন তিনি। জানতেন না, এই ছন্দময় বাক্যই একদিন তাকে রাতারাতি সোশ্যাল মিডিয়ার তারকা বানিয়ে দেবে।

নেত্রকোনার এক সাধারণ কাঠমিস্ত্রি থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার হিরো— এটা কিন্তু সিনেমার গল্প না, একদম বাস্তব! মাত্র তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা এই মানুষটার ছিল ছন্দ লেখার শখ। সেই শখ থেকেই শুরু হয় ভিডিও বানানো, আর তারপর? তারপর ইতিহাস!

২০২০ সালে The Ajaira LTD যখন তার ছন্দগুলো নিয়ে বানায় “আমায় দিও কল”, তখনই রিপন ভাইয়ের নাম ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। গানটি ট্রেন্ডে উঠে যায়, ভিউ পায় প্রায় ৩০ মিলিয়ন!

সাধারণত সোশ্যাল মিডিয়ার ট্রেন্ড একবার চলে গেলে ফেরার আর রাস্তা থাকে না। মানুষ ভুলে যায়। কিন্তু রিপন মিয়া কি এত সহজে হার মানার পাত্র?
২০২৪-২০২৫ সালে এসে তিনি আবার ফিরে এলেন, তাও একদম নতুনভাবে! এবার শুধু ছন্দ না, তিনি নিয়ে এলেন রিলস, শর্টস, ইউটিউব ব্লগ— এক কথায় ফুল প্যাকেজ!

আগে মানুষ ভাবত, ভাইরাল হতে হলে ল্যাম্বরগিনির পাশে দাঁড়িয়ে ভিডিও বানাতে হবে, পাঁচ তারকা হোটেলে বিলাসিতা দেখাতে হবে। কিন্তু রিপন মিয়া বলে দিলেন, “নাহ! এসব লাগবে না!”

তিনি দাঁত মাজলেন ছাই দিয়ে, রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে বরইয়ের ভর্তা খেলেন, শীতের সকালে পিঠা খেয়ে ভিডিও বানালেন— আর মানুষ তা দেখেও মুগ্ধ হলো!

সর্বস্তরের মানুষের গ্রহণযোগ্যতাঃ
রিপন মিয়ার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো সব শ্রেণির মানুষের কাছে পৌঁছানো। সাধারণত বড়লোকদের চকচকে লাইফস্টাইল গরিবরা দেখে, কিন্তু গরিবদের সাধারণ জীবন বড়লোকরা দেখে না। রিপন মিয়া সেটাই যেন বদলে দিলেন! তিনি নিম্নবিত্তের হলেও তার ভিডিও দেখা বন্ধ রাখেনি উচ্চবিত্তরাও। আর সেটাই তাকে বাংলাদেশের কন্টেন্ট ক্রিয়েশন জগতে এক বিরল উদাহরণ বানিয়ে তুলেছে।

বড় কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের সাথে কোল্যাবঃ
ফিরে এসে থেমে যাননি তিনি! এবার তিনি SP Creation, রাফসান দ্য ছোটোভাই-এর মতো জনপ্রিয় কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের সাথে কোল্যাব করলেন। রিলস থেকে লং-ফরম্যাট ব্লগ— সবখানেই রিপন ভাই এখন হিট!

কেউ কেউ হয়তো বলবে, বাংলাদেশের সোশ্যাল মিডিয়া ট্রেন্ডে একবার হারিয়ে গেলে ফেরার রাস্তা থাকে না। কিন্তু রিপন মিয়া ফিরেছেন, আর সেটাও পুরনো স্টাইলে নয়— একদম নতুনভাবে!

সাত বছরের ছোট ছেলের দ্বারা গর্ভবতী হন অর্চনা

এই ফিরে আসাটা যেমন একটা অনুপ্রেরণার গল্প, তেমনি এটা একটা শিক্ষাও। আপনার ল্যাম্বরগিনি লাগবে না, দামি রিসোর্ট লাগবে না, ঝলমলে পোশাক লাগবে না। আপনার যা লাগবে, তা হলো নিজের স্টাইল আর নিজের সত্যিকারের গল্প। তাই, যদি আপনার মনে হয়— “আমার তো ক্যামেরা নেই, আমার তো টাকা নেই, আমি তো কিছু পারি না”— তাহলে রিপন ভাইয়ের কাহিনি পড়ুন।

একটা ছন্দ, একটা হাসি আর সত্যিকারের গল্প দিয়ে ফিরেও আসা যায়, রাজত্বও করা যায়!