আন্তর্জাতিক ডেস্ক : খুলনার আইয়ান জুট মিলস ২০২১-২০২২ অর্থবছর পর্যন্ত চীনের বাজারে কেবল ডলারেই পণ্য রপ্তানি করে আসছিল। তবে ২০২২-২৩ অর্থবছরে এসে ডলারের পাশাপাশি চীনের নিজস্ব মুদ্রা ইউয়ানেও পণ্য রপ্তানি করে। গত অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের খুলনার একটি শাখার মাধ্যমে সাড়ে ৫ লাখ ডলার সমমূল্যের ইউয়ানে পণ্য রপ্তানি করে। শুধু আইয়ান জুট মিলস নয়, গত অর্থবছরে ২৪টির অধিক প্রতিষ্ঠান ইউয়ান মুদ্রায় চীনে পণ্য রপ্তানি করে। আগের অর্থবছরে এ সংখ্যা ছিল মাত্র তিনটি। এর মধ্য দিয়ে এ অর্থবছরে ইউয়ানে রপ্তানি বাড়ে ১৫৬ গুণের বেশি। এর বিপরীতে আমদানিতেও ইউয়ানে লেনদেন বেড়েছে। গত অর্থবছরে বিভিন্ন খাতের অন্তত ৫০টি প্রতিষ্ঠান চীনা মুদ্রায় পণ্য আমদানি করে। এর ফলে গত অর্থবছরে ইউয়ানে আমাদের আমদানি প্রায় চারগুণ বাড়ে।
গত বছরের এপ্রিলের পর দেশে ডলার সংকট তীব্র হলে বৈদেশিক বাণিজ্যে বিকল্প মুদ্রা ব্যবহারের বিষয়টি আলোচনায় আসে। তখন ডলার সাশ্রয়ের অংশ হিসেবে একই বছরের সেপ্টেম্বরে দেশের ব্যবসায়ীদের বৈদেশিক বাণিজ্যে চীনা মুদ্রায় লেনদেন করার সুযোগ বাড়িয়ে সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই নির্দেশনার পর চীনের ব্যাংকের সঙ্গে ইউয়ানে ব্যাংক হিসাব খুলতে ব্যাংকগুলোর মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়। এখন পর্যন্ত আড়াই ডজনের বেশি ব্যাংক ইউয়ান মুদ্রায় চীনের ব্যাংকের সঙ্গে হিসাব খুলেছে। এতে দুই দেশের মধ্যে ইউয়ানে বৈদেশিক বাণিজ্য বৃদ্ধির সুযোগ বেড়েছে। এরই মধ্যে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা এই সুযোগের সদ্ব্যবহার শুরু করেছেন।
এই সুযোগে ইউয়ান ব্যবহার করে আমদানি ও রপ্তানি বাড়ছে, যা সার্বিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। সেই সঙ্গে সাশ্রয় হচ্ছে ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত অর্থবছরে ইউয়ানে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ৫৩ কোটি ডলারের বেশি বাণিজ্য হয়েছে। এর মানে এই পরিমাণ ডলার আমাদের সাশ্রয় হয়েছে। এর মধ্যে এককভাবে চীনের সঙ্গে ইউয়ানে বাণিজ্য হয়েছে প্রায় সাড়ে ১২ কোটি ডলার। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের এই সংকটের সময়ে ইউয়ান দিয়ে লেনদেন করলেই বেশি সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে ইউয়ানে পেমেন্ট দ্রুত পাওয়া যায়। আবার ব্যাংকগুলোও চার্জ কাটে কম।
ইউয়ানে পণ্য রপ্তানিতে আগ্রহের কারণ জানতে চাইলে আইয়ান জুট মিলসের পরিচালক মো. জহির উদ্দিন রাজীব আমাদের সময়কে বলেন, ইউয়ান চায়নার নিজস্ব মুদ্রা। ফলে দেশটির সঙ্গে তাদের নিজস্ব মুদ্রায় লেনদেনেই বেশি সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। এতে ক্রেতার সন্তুষ্টি অর্জনের বিষয়ও রয়েছে।
জহির উদ্দিন রাজীব বলেন, আগে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে ডলারের পেমেন্ট পেতে সর্বোচ্চ তিন দিন সময় লাগত, এখন সেটা পাঁচদিন পর্যন্ত লেগে যাচ্ছে। কিন্তু ইউয়ানে লেনদেন করলে পেমেন্ট পাওয়া যাচ্ছে দ্রুত। আবার আগে ডলারে প্রতি লেনদেনে ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ চার্জ কাটত ২০ থেকে ৪০ ডলার। গত বছর থেকে এমনও দেখা যাচ্ছে এই চার্জ ২৫০ ডলার পর্যন্ত উঠছে। কিন্তু ইউয়ানে প্রতিটি লেনদেনে চার্জ গুনতে হচ্ছে অনেক কম। আরেকটা বিষয়, ডলারে আমরা যে বিনিময় হার পাচ্ছি, ইউয়ানে তার থেকে প্রায় ১ টাকা বেশি পাচ্ছি। এসব সুবিধার কারণে আমরা ডলারকে পাশ কাটিয়ে ইউয়ানে লেনদেনে আগ্রহী হয়েছি।
অর্ণব ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের সহযোগী প্রতিষ্ঠান অর্ণব কমপিউটার বাজার। এ প্রতিষ্ঠানসহ থার্ডপার্টি মিলে ২০২২-২৩ অর্থবছরে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে চীন থেকে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার ডলার সমমূল্যের ইউয়ান মুদ্রায় পণ্য আমদানি করে। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী সোহেল আহমেদ আমাদের সময়ক বলেন, দীর্ঘদিন ব্যাংকগুলোতে ডলারের সংকট চলছে। আমরা ডলারে নিয়মিত এলসি পাচ্ছিলাম না। তখন ডলারের বিকল্প ইউয়ানে লেনদেনে আগ্রহী হই। এখন সহজে ও কম সময়ের মধ্যেই ইউয়ানে এলসি খুলতে পারছি।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার দেশ চীন। আমদানি-রপ্তানি মিলিয়ে বর্তমানে মোট বাণিজ্যের প্রায় ১৯ শতাংশই হয় চীনের সঙ্গে। এ ছাড়া বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ আছে চীনে। চীন এখন বিভিন্ন দেশে তা বিনিয়োগ করার চেষ্টা করছে। ফলে ইউয়ানে লেনদেন বাড়লে শুধু ডলার সাশ্রয়ই নয়, দেশটির বিনিয়োগ আকর্ষণের মাধ্যমে রপ্তনি বাড়িয়ে বাণিজ্য ঘাটতিও কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিসিসিসিআই) মহাসচিব আল মামুন মৃধা আমাদের সময়কে বলেন, সব লেনদেনে একটি মাত্র কারেন্সির ওপর অতি নির্ভরশীল হয়ে পড়াটা কোনো দেশের জন্যই ভালো সিদ্ধান্ত না। যেহেতু চীনের সঙ্গে আমাদের বড় বাণিজ্য, সেজন্য আমরা দেশটির সঙ্গে তাদের মুদ্রায় লেনদেন নিষ্পত্তির পরামর্শ দিয়েছিলাম। এখন ইউয়ানে লেনদেনের এই সুযোগ বৃদ্ধির ফলে আশা করছি আগামীতে চীনা বিনিয়োগ বাড়বে। কেননা, চীনের সঙ্গে ইউয়ানে যতগুলো দেশ লেনদেন করছে, সে দেশগুলোতে চীনা বিনিয়োগও বেড়েছে। এ ছাড়া চীন আমাদের ৯৮ শতাংশ পণ্য শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুযোগ দেয়। ফলে চীনা বিনিয়োগ সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে দেশটিতে পণ্য রপ্তানির পরিমাণও বাড়ানো সম্ভব হবে। ফলে কমে আসবে বাণিজ্য ঘাটতিও।
চীনা মুদ্রায় অ্যাকাউন্ট খোলা বাড়িয়েছে ব্যাংকগুলো : এখন পর্যন্ত দেশের অন্তত ৩০টি ব্যাংক ইউয়ানে লেনদেনের জন্য চায়না ব্যাংকের সঙ্গে অ্যাকাউন্ট খুলেছে। চায়নার কোনো ব্যাংকের সঙ্গে দেশের কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলেছে, সেই তথ্য জানতে পেরেছে আমাদের সময়। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, এগ্রিকালচার ব্যাংক অব চায়নার সঙ্গে ব্যাংক হিসাব খুলেছে বাংলাদেশের সিটি, মেঘনা, প্রিমিয়ার, ইস্টার্ন, যমুনা, মার্কেন্টাইল, এনআরবিসি ও এনআরবি ব্যাংক এবং কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন। চায়নার ঝেজিয়াং চাওজাও (তযবলরধহম ঈযড়ুঁযড়ঁ) কমার্শিয়াল ব্যাংকের সঙ্গে হিসাব খুলেছে এবি, আইএফআইসি, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, এনআরবিসি, ট্রাস্ট, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল, বাংলাদেশ কমার্স, সিটি, মার্কেন্টাইল, এনবিএল, এনসিসি, ওয়ান, প্রিমিয়ার, পূবালী ও সাউথইস্ট ব্যাংক এবং ব্যাংক এশিয়া। চায়নার পুডং (ঢ়ঁফড়হম) ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সঙ্গে হিসাব খুলেছে ব্র্যাক, প্রাইম ও ইসলামী ব্যাংক। চীনের ইউরুমকিতে (ৎঁসশর) অবস্থিত হাবিব ব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের হাবিব ব্যাংক, হংকং সিটিতে অবস্থিত আইসিআইসিআই ব্যাংকের সঙ্গে এ দেশের এক্সিম ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের সঙ্গে সে দেশের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও এইচএসবিসি ব্যাংকের সঙ্গে এইচএসবিসি ব্যাংক হিসাব খুলেছে। এ ছাড়া সোনালী, অগ্রণী, উত্তরা, শাহজালাল ইসলামী ও মধুমতি ব্যাংকও চায়নার ব্যাংকের সঙ্গে হিসাব খুলেছে।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা আমাদের সময় বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার পর আমরা চায়নার ব্যাংকের সঙ্গে অ্যাকাউন্ট খোলা বাড়িয়েছি। ডলার সংকটের এই সময়ে চীনের সঙ্গে সব লেনদেন যদি ইউয়ানে করা যায়, তা হলে শুধু গ্রাহক নয়, দেশও উপকৃত হবে।
চীনা মুদ্রায় বাড়ছে আমদানি-রপ্তানি : গত দুই অর্থবছর ইউয়ানে আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ জানতে গিয়ে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে চীনা মুদ্রায় মোট রপ্তানির পরিমাণ ছিল মাত্র ১১ লাখ ডলারের সমপরিমাণ। এর মধ্যে চীনে কোনো রপ্তানিই ছিল না। সেখানে ২০২২-২৩ অর্থবছরে চীনা মুদ্রায় মোট রপ্তানির পরিমাণ বেড়ে ১৫৬ গুণ হয়েছে। গত অর্থবছরে বিভিন্ন দেশে ইউয়ানে রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৭ কোটি ১৭ লাখ ডলারের সমপরিমাণ। এর মধ্যে চীনে রপ্তানির পরিমাণ ২ কোটি ৫২ লাখ ডলার।
অন্যদিকে ২০২১-২২ অর্থবছরে বিভিন্ন দেশ থেকে চীনা মুদ্রায় আমদানির পরিমাণ ছিল ৯ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। এর মধ্যে চীন থেকে আমদানির পরিমাণ ছিল প্রায় ৮ কোটি ৩ লাখ ডলার। সেখানে গত অর্থবছরে ইউয়ানে মোট আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৬ কোটি ১৫ লাখ ডলার। এর মধ্যে চীন হতে আমদানির পরিমাণ ১০ কোটি ১৫ লাখ ডলার। এর মানে আমদানি রপ্তানিতে অন্য দেশের পাশাপাশি চীনের সঙ্গে ইউয়ান ব্যবহার বেড়েছে।
সার্বিক বাণিজ্য পরিস্থিতি : ইউয়ানে লেনদেন বৃদ্ধির পরও রিজার্ভ সাশ্রয়ে নেওয়া পদক্ষেপের কারণে গত অর্থবছরে চীন থেকে সার্বিক আমদানি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমেছে। সেই সঙ্গে চীনের বাজারে দেশের রপ্তানি আয়ও কিছুটা কমেছে। এতে দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতিও কিছুটা কমে এসেছে। গত অর্থবছরে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছে ১ হাজার ৯৩ কোটি ডলার। এ সময়ে চীনে রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৬৭৭ কোটি ডলার। একই সময়ে আমদানি হয়েছে ১ হাজার ৭০৭ কোটি ডলার। অথচ ২০২১-২২ অর্থবছরে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৭৮২ কোটি ডলার।
চীনা বিনিয়োগ বাড়লে কমবে বাণিজ্য ঘাটতিও : গত বছর চীন থেকে নিট বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে প্রায় ১৯ কোটি ডলার। আগের বছর এর পরিমাণ ছিল আরও বেশি, প্রায় ৪১ কোটি ডলার। টেক্সটাইল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, চামড়া, কনস্ট্রাকশন, খাদ্য, রাসায়নিক ও ওষুধ এবং ট্রেডিং খাতে এসব বিনিয়োগ এসেছে। মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের (এইআই) এক হিসাব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে চীন থেকে মোট বিনিয়োগ এসেছে ৭০৭ কোটি ডলারের। সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ বাড়াতে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় গড়ে তোলা হচ্ছে চীনা ইকোনমিক জোন। আগামী বছরের মধ্যে ইকোনমিক জোনটি উদ্যোক্তাদের জন্য বিনিয়োগের উপযোগী করে তুলতে জোরেশোরে কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এই ইকোনমিক জোনে অন্তত ১ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে।
এ বিষয়ে বিসিসিসিআইর মহাসচিব আল মামুন মৃধা বলেন, আমাদের রপ্তানি বাড়ানো দরকার। সেটা শুধু চায়নাতে হতে হবে এমনটি নয়, অন্য দেশেও হতে পারে। এক্ষেত্রে চায়নিজ ইকোনমিক জোনটা চালু হলে সেখানে বিপুল পরিমাণে চায়নিজ বিনিয়োগ আসবে। এক্ষেত্রে আমরা এক্সপোর্টবেজড ইনভেস্টমেন্টকে টার্গেট করছি। সেটা ব্যাপকাংশে বৃদ্ধি পাবে, যদি লেদেনের ইউয়ানের প্রচলন বেশি করতে পারি।
ইউয়ানে আন্তর্জাতিক লেনদেন ও রিজার্ভ বৃদ্ধি : আন্তর্জাতিক লেনদেনে ডলারের বিকল্প হিসেবে বিশ্বজুড়ে দ্রুত স্বীকৃতি পাচ্ছে ইউয়ান। এর কারণ হলো- এখন পর্যন্ত বিশ্বের যে পাঁচটি দেশের মুদ্রাকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ‘হাই ভ্যালু কারেন্সি’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে তার মধ্যে চীনের ইউয়ান অন্যতম। আইএমএফের এসডিআর বাস্কেটে ইউয়ানকে ২০১৬ সালে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এরপর থেকে বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো তাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ইউয়ানের পরিমাণ বাড়াচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকও দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ডলারের অংশ কমিয়ে ইউয়ানের পরিমাণ বাড়ায়। তবে বর্তমানে রিজার্ভে এর অংশ আগের চেয়ে কমে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ১৩ আগস্টে পর্যন্ত ৫২৮ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ ইউয়ান রিজার্ভ রাখা ছিল, যা চলতি বছরের ১৩ আগস্টে নেমে এসেছে ৩৩৩ মিলিয়ন ডলারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আমাদের সময়কে বলেন, আগামীতে ইউয়ানে রিজার্ভ বাড়ানোর বিষয়টি নির্ভর করবে এই মুদ্রায় আমরা কতটা রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স নিয়ে আসতে পারি। এর বাইরে বিদেশ থেকে ঋণ নিয়েও ইউয়ানের মজুদ বাড়ানো সম্ভব। তবে সব কিছুই ইউয়ানে লেনদেনের চাহিদা বৃদ্ধির ওপর নির্ভর করবে।
জানা যায়, চীন সরকারও বাংলাদেশের সঙ্গে লেনদেনে তাদের মুদ্রা ব্যবহারে গুরুত্ব দিচ্ছে। এজন্য গত বছরের আগস্টে চীনের পক্ষ থেকে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে মূল্য নির্ধারণ এবং লেনদেন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে উভয় দেশের স্থানীয় মুদ্রা ইউয়ান এবং টাকা বিনিময়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়। ওই প্রস্তাবটি নিয়ে বিভিন্ন সময় আলোচনা হলেও এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।