প্রায় তিন দশক আগে একটি শহরের মেয়র নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে তার উত্থান পর্ব শুরু হয়। এরপরে তিনি তিন বার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে প্রেসিডেন্ট। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তাইয়েপের কথা বলছি।
এক সময় তিনি রাস্তায় লেবুর শরবত আর রুটি বিক্রি করতেন। তিনিই হয়ে উঠেছেন আধুনিক তুরস্কের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। ১৯৯৪ সালে তিনি ইস্তাবম্বুলের মেয়র নির্বাচিত হন। তখন থেকেই তার জনপ্রিয়তা শুরু।
সারোয়ার আলম, সাংবাদিক, আঙ্কারা বলেন, ‘‘ইস্তাম্বুলের আবর্জনার সমস্যা, ইলেক্ট্রিসিটি সমস্যা, পানি সমস্যাসহ আরও যত সমস্যা ছিলো সেই সমস্যাগুলোকে সমাধানের জন্য তিনি যথেষ্ট আন্তরিকভাবে কাজ করছেন বলে তখন মনে করা হতো। সেই কাজের মাধ্যমে তিনি ইস্তাম্বুলের মানুষের মন জয় করতে পেরেছিলেন। সেই সময়ের রাজনীতির যে অবস্থা সেই অবস্থা থেকেও বলা যায় যে, ফায়দা নিয়েছিলেন। অর্থাৎ তখন যে কোয়ালিশন সরকার ছিলো, সেই কোয়ালিশন সরকার আসলে রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ হওয়ার পরে নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে তিনি একটা জিনিস দেখান—যদি এককভাবে নির্বাচিত হওয়া যায়, তাহলে কোয়ালিশন সরকারের যে সমস্যা সেই সমস্যা থেকে আমরা মুক্তি পাবো এবং রাষ্ট্রকে আরও স্থিতিশীলভাবে পরিচালনা করতে পারবো। ’’
২০০৩ সালে এরদোয়ান প্রথম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তিন বার প্রধানন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পরে তিনি ২০১৪ সালে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
দ্বিতীয় দফায় তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে তুরস্কের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে বদলে দিয়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করেন। আধুনিক তুরস্কের জনক মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের পর তিনিই দেশটাকে সবচেয়ে বেশি বদলে দিয়েছেন।
তবে বিশ্লেষকরা মনে করেন, ‘‘তিনি ক্রমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থেকে দূরে সরে গেছেন। মুসলিম মূল্যবোধের পক্ষে সরাসরি বক্তব্য দেওয়ার ফলেও তিনি তুরস্কের জনগণের কাছে জনপ্রিয়। ’’
ক্ষমতায় এসে প্রথম সাত বছরে তিনি দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিকে যথেষ্ট নজর দেন। কাজের ওপর ভিত্তি করেই তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। দ্বিতীয় সাত বছরে তিনি কিছু স্ট্রাকচারাল পরিবর্তন আনেন। যেমন –সেনাবাহিনীর অতিরিক্ত ক্ষমতা খর্ব করার চেষ্টা করেন।
সামরিক অভ্যুত্থান, অর্থনৈতিক সমস্যা, লিরার মান পতনের মতো সমস্যাগুলো তাকে মোকাবিলা করতে হয়েছে।
৫৮ বছর বয়সে বাবা হচ্ছেন আরবাজ খান, প্রকাশ্যে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী
তুর্কীর সেনাবাহিনী তাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে চেয়েছিলো কিন্তু সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। এরপরেই বিরোধীদের ওপর শুরু করেন ব্যাপক অভিযান। ৫০ হাজারের বেশি লোককে গ্রেফতার করা হয়। চাকরিচ্যুত হন প্রায় দেড় লাখ সৈনিক, সরকারি চাকরিজীবী, শিক্ষক ও বিচারক।
এভাবেই নিজের ক্ষমতা ধরে রেখেছেন এরদোয়ান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।