জুমবাংলা ডেস্ক : নাটোরের গুরুদাসপুরে নাজিরপুরের বেড়গঙ্গারামপুর কানুমোল্লার বটতলা আড়তে লিচুর পসরা সাজিয়ে বসেছেন চাষিরা। আর এসব লিচু বিক্রির জন্য চলছে হাঁকডাক। এই আড়তে লিচু কিনতে আসেন দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকারেরা। প্রতিদিন ২২ থেকে ২৫ লাখ লিচু সরবরাহ করা হচ্ছে।
৮ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া লিচুর আড়তে প্রতিদিন চলছে এই বেচাকেনা। সকাল থেকে গ্রামের বাগানগুলোতে চলে লিচু সংগ্রহের কাজ। চাষিরা লিচু সংগ্রহ করে দুপুরে আড়তে নিয়ে আসেন বিক্রি করার জন্য। দুপুর ১২ থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা।
চাষিরা বলছেন, খরার কারণে চলতি মৌসুমে লিচুর গুটি ঝরে পড়েছে। ফেটে নষ্ট হয়েছে অনেক লিচু। তবে গাছের ঘনত্ব কম হওয়ায় লিচু আকারে বড় হয়েছে। বিক্রির ক্ষেত্রে গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে দাম কম পাচ্ছেন চাষিরা। আকার ভেদে প্রতি এক হাজার লিচু ১ হাজার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে লোকসান না হলেও খুব বেশি লাভ হচ্ছে না চাষিদের।
স্থানীয় বাসিন্দা ও হাট ইজারাদারের সূত্রে জানা গেছে, এখানে প্রতি বছরই এই লিচুর হাট বসে। চলতি মৌসুমেও এ হাটে ১৭টি আড়ত গড়ে উঠেছে। নাজিরপুর ইউনিয়নে প্রায় চার হাজার বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের আগাম লিচুর আবাদ হয়। এসব লিচু গাছ থেকে সংগ্রহ করে কম সময়ে মোকামে পাঠাতে প্রত্যন্ত গ্রামেই ২০০১ সালে গড়ে উঠেছে এই হাট।
লিচুর আড়ত ঘুরে দেখা গেছে, আড়তে থরে থরে সাজানো হয় লিচু। এক একটি পসরায় লিচু রয়েছে ৪-৫ হাজার। তা বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকায়।
লিচুচাষি হাজি সাখাওয়াত বলেন, তিনি ২৭ বিঘা জমিতে লিচুবাগান করেছেন। সার-কীটনাশক, সেচ এবং শ্রমিকের মজুরি বাবদ প্রতি বিঘায় ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী গড়ে ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করবেন তিনি। এতে তিনি লাভবান হবেন।
মাহমুদপুরের লিচুচাষি আব্দুল আলীম বলেন, আমার ১৫ বিঘা জমিতে লিচু আছে। মৌসুমের শুরুতে খরা ও অতিবৃষ্টির কারণে লিচুর গুটি নষ্ট হয়েছে। তবে লিচু আকারে বড় হয়েছে। কিন্তু দাম একটু কম পাচ্ছেন তাঁরা।
ঢাকার কাজিপাড়ার লিচু ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান বলেন, ভরা মৌসুমে তাঁরা বেড়গঙ্গারামপুর হাট থেকে লিচু কিনে তা দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করেন। লিচুর দাম গত বছরের চেয়ে কম। প্রতিদিন তাঁর চার ট্রাক লিচুর প্রয়োজন হয়। এতে খরচ বাদ দিয়ে তাঁর লাভ হয়।
হাটের সবচেয়ে বড় আড়তদার মো. নিজাম সরকার বলেন, দেশে বিভিন্ন জেলা থেকে লিচু ব্যবসায়ীরা এই হাটে আসেন লিচু কিনতে। প্রতিদিন তাঁর আড়ত থেকে তিন-চার ট্রাক লিচু বিক্রি হয়। ব্যবসায়ীরা সেই লিচু দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশীদ বলেন, এ বছর উপজেলায় প্রায় ৪১৫ হেক্টর জমিতে মোজফ্ফর, বোম্বাই ও চায়না-৩ জাতের লিচু চাষ করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় ১২ হেক্টর বেশি চাষ হয়েছে। উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৫০০ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। যার বাজার মূল্য ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।