জুমবাংলা ডেস্ক : জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন বাংলাদেশের মানুষকে নতুন করে পথচলার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, যারা জুলাই হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে তাদের বিচার অবশ্যই করে যাব।
মঙ্গলবার বিকালে বাংলা একাডেমিতে ‘২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে আমাদের নজরুল’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, তরুণরা যে অবিশ্বাস্য আন্দোলন করেছে জীবনের মায়া ত্যাগ করে, তারা আমাদের মতো বৃদ্ধ মানুষদের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে।
তিনি এ সময় সাংস্কৃতিক আধিপত্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়েরও আহ্বান জানান।
আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, কবি নজরুল যে কারণে লড়াই করেছেন তা আজও প্রাসঙ্গিক। এজন্য আজকের তরুণ সমাজ দেওয়ালে দেওয়ালে নজরুল প্রসঙ্গ আনেছে। আমি কাজী নজরুল ইসলামের রোমান্টিক গান শুনি, কবিতা পরি। তিনি অসাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তার একটি বিখ্যাত লেখা আছে ‘রাজবন্দির জবানবন্দি’। তিনি ধুমকেতু পত্রিকার একটি বিদ্রোহ ঘোষণা দিয়েছিল। এরপর রাষ্ট্রদোহী মামলায় তিনি গ্রেপ্তারের পর এই বই লিখেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, নজরুল ১৯২৩ সালে যা লিখে গেছেন আজ দেশে সেই অবস্থা। তাহলে পাল্টালো কোথায়। আমরা আমার দেশে বিদ্রোহ করেছিলাম হাসিনার ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। আমরা অল্টারেটিভ নেরেটিভ তৈরি করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের দাঁড়াতে দেওয়া হয় নাই। জনগণ ঠিক করবে কার কথা ঠিক কার কথা ভুল। তো আপনি দেবেন না কেন।
নজরুল গবেষক, বিশিষ্ট কবি, প্রাবন্ধিক এবং সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার বলেন, নজরুলের কবিতায় আমাদের সন্তানেরা অনুপ্রেরণা পায়। নজরুলের আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস। নজরুলের জন্য বাংলাদেশ, বাংলাদেশের জন্য নজরুল। বাংলাদেশ এবং কাজী নফজুল ইসলাম একটা আরেকটার অবিচ্ছেদ্য অংশ। একটা থেকে আরেকটা সরানো জায় না। আত্মার সঙ্গে দেহের যে সম্পর্ক, নজরুলের সঙ্গে বাংলাদেশের সে সম্পর্ক। বাংলাদেশের জন্য কাজী নজরুল ইসলাম অপরিহার্য জিনিস। একটা জাতির বেঁচে থাকার জন্য যা দরকার তা আমাদের নজরুলের মধ্যে আছে। আমাদের এবারের বিপ্লবে নজরুল অপরিহার্য। তিনি আজীবনই বৈষম্যবিরোধী।
এ সময় তিনি শেখ হাসিনার দেশত্যাগকে ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বখতিয়ার খলজীর আক্রমণের মুখে মধ্যযুগীয় বাংলার সেন রাজবংশের চতুর্থ রাজা লক্ষ্মণসেনের দেশত্যাগের সঙ্গে তুলনা করেন।
তিনি আরও বলেন, স্বৈরাচারী সরকারের সময় নজরুল ইন্সটিটিউটের আদিনাম বদলায়ে কবি নজরুল ইন্সটিটিউট করা হয়েছে। জাতীয় কবি করা হয় নাই, তাকে আট দশজন সাধারণ কবির সাথে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা ঠিক করতে হবে। ররবীন্দ্রনাথের ওপর ৬০ হাজার ওয়েব সাইট আছে, নজরুলের ওপর হয়নি। এটা করতে হবে। অনুবাদ করতে হবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নজরুল ইনস্টিটিউট করতে হবে।
নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিটির সদস্য ডা. জাহেদুর রহমান বলেন, নজরুল মানেই প্রতিবাদের কথা। নজরুলকে ১৬ বছর সরিয়ে রাখার চেষ্টা হয়েছে, কিন্তু পারেনি ২৪ এর আন্দোলনে প্রত্যেকে নজরুল হয়ে ফিরে এসেছে। কোনো না কোনো ভাবে নজরুল এসেই যায়। যুগে যুগে নজরুল দরকার। গণতান্ত্রিক দেশ ফিরিয়ে আনতে নজরুল অসাধারণ রোল প্লে করতে পারে।
কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের কবি, কথা সাহিত্যিক ও নির্বাহী পরিচালক মো. লতিফুল ইসলাম শিবলী বলেন, গত ১৬ বছরে নজরুল আমাদের ছিল না। এ সময়ে নজরুলকে আমাদের থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। গণ অভ্রথানে আমরা দেখেছি সবাই একেকজন নজরুল।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে নজরুলের গান ছিল আমাদের অন্যতম অনুপ্রেরণা। ২৪ এর গণ অভ্যুত্থানে ‘কারার ওই লোহ কপাট’ কিংবা ‘বল বীর’ সারাদেশে যেভাবে বেজেছে, সেভাবে দেশের দেওয়ালে দেওয়ালে শিক্ষার্থীদের তুলির আঁচলে ফুটে উঠেছিল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।