কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালার আওতায় ছাগল পালনের জন্য একজন কৃষক বা খামারি সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন। এ ঋণের সুদের হার নির্ধারণ করা হয়েছে মাত্র ৪ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংক মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা ঘোষণা করেছে। এই নীতিমালায় গবাদি পশুদের পাশাপাশি ছাগল পালনের জন্যও বিশেষ নির্দেশনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, সর্বোচ্চ ৫০টি ছাগল পালনের জন্য অনধিক ১০ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া যাবে। খামার তৈরির জন্য ঘর নির্মাণে এককালীন প্রদত্ত ঋণকেও কৃষি ঋণ হিসেবে গণ্য করা হবে। তবে ৫০টির বেশি ছাগল পালনের বৃহৎ বা বাণিজ্যিক খামারের অবকাঠামো নির্মাণের জন্য নেওয়া ঋণ কৃষি ঋণ হিসেবে বিবেচিত হবে না।
এছাড়া নারী ও প্রান্তিক খামারিদের অগ্রাধিকার প্রদানের বিষয়টি নীতিমালায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। ব্যাংকের শাখাগুলো এই খাতে বিতরণকৃত ঋণের তথ্য সংরক্ষণ করবে এবং প্রয়োজনে বাংলাদেশ ব্যাংক বা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়কে তা সরবরাহ করবে।
চলতি অর্থবছরে কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৯ হাজার কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের তুলনায় এক হাজার কোটি টাকা বেশি।
নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, বৈশ্বিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় কৃষিখাতকে বহুমুখী চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। উচ্চ ফলনশীল জাতের ফসল ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে গত পাঁচ দশকে বিশ্বব্যাপী খাদ্যশস্য উৎপাদন প্রায় তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের এক-চতুর্থাংশ শ্রমশক্তি কৃষিক্ষেত্রে নিয়োজিত, যার মধ্যে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অবদান সবচেয়ে বেশি।
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় কৃষি উৎপাদন এবং কৃষি ঋণ বিতরণে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগ প্রণীত বার্ষিক নীতিমালা ও কর্মসূচি এই অবস্থানকে আরও সুসংহত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের এই নীতিমালা কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থায়ন, আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা প্রকাশ করেছে।